Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ প্রকল্পে আশার আলো

আগামী বছর ভূমি অধিগ্রহণ

Icon

বগুড়া ব্যুরো

প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২২, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ প্রকল্প বাস্তবায়নে আশার আলো দেখা দিয়েছে। আগামী বছর দুই জেলায় প্রায় ৯৪৪ একর জমি অধিগ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সোমবার বগুড়া জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত জমি অধিগ্রহণ সম্পর্কিত সভায় এ তথ্য জানানো হয়।

সভায় বলা হয়, বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জের শহিদ এম মনসুর আলী রেল স্টেশন পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব দাখিল করা হয়েছে। দুই জেলায় ৯৪৪ একর জমি অধিগ্রহণের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে বগুড়া অংশে প্রায় ৪৮০ একর ও সিরাজগঞ্জ অংশে ৪৬৪ একর জমি রয়েছে। জমি অধিগ্রহণে আগামী অর্থবছরে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পাওয়া যাবে। আর চলতি অর্থবছরে এ খাতে ১৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটির সব প্রক্রিয়া শেষে দরপত্র আহ্বান করা হবে। এরপর বগুড়া থেকে সরাসরি সিরাজগঞ্জের শহিদ এম মনসুর আলী রেল স্টেশন পর্যন্ত ডুয়েল গেজ রেললাইন নির্মাণকাজ শুরু হবে। বগুড়া জেলা প্রশাসক জিয়াউল হকের সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) উজ্জ্বল কুমার ঘোষ, ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা আমির সালমান রনি প্রমুখ বক্তব্য দেন। প্রকল্পের উপদেষ্টা মাকসুদুর রহমান পাটোয়ারী, প্রকল্প পরিচালক মনিরুল ইসলাম ফিরোজী ও ভারতীয় কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় দুই অংশে রেলপথ নির্মাণ করা হবে। বগুড়া স্টেশন থেকে ২ হাজার ৬০০ ফুট পশ্চিমে বগুড়া শহরের রেললাইন এবং বগুড়া রেললাইন থেকে সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতুর এম মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত ৭২ কিলোমিটার নির্মাণ করা হবে। অপরটি বগুড়ার কাহালু স্টেশন থেকে রানীরহাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে। এজন্য সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। প্রকল্পের আওতায় বগুড়ার কাহালু উপজেলায় একটি, শহরের স্টেশনে একটি এবং শাজাহানপুরের রানীরহাটে জংশন স্টেশন নির্মাণ করা হবে। এ তিনটি জংশন স্টেশন নির্মাণ হলে বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ পূর্ণতা পাবে। তিনটি জংশন ছাড়াও সাতটি স্টেশন-রানীরহাট, আড়িয়াবাজার, শেরপুর, চান্দাইকোনা, সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ, কৃষানদিয়া ও সদানন্দপুরে রেল স্টেশন স্থাপন করা হবে। প্রস্তাবিত ৮৪ কিলোমিটার রেলপথের জন্য প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রকল্প পরিচালক মনিরুল ইসলাম ফিরোজী সাংবাদিকদের জানান, বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ হলে উত্তরের জেলাগুলোর সঙ্গে ঢাকার প্রায় ১১২ কিলোমিটার পথ কমে আসবে। দরপত্র প্রক্রিয়াসহ প্রকল্পের সব কাজ চলছে। তিনি আরও জানান, এ প্রকল্পের খসড়া নকশা করা হয়েছে। এটি প্রজেক্টরে দেখানো হবে। ভূমি অধিগ্রহণ, দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ করার পর রেলপথ নির্মাণকাজ শুরু হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১১ সালে বগুড়ার জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণের আশ্বাস দেন। ২০১৫ সালেও বগুড়া সফরে তিনি এ রেলপথ নির্মাণের নির্দেশ দেন। ২০১৭ সালে ভারতের তৃতীয় লাইন অব ক্রেডিটের ঋণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১৮ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে প্রকল্পটি অনুমোদন লাভ করে।

বর্তমানে বগুড়া থেকে ট্রেনে সিরাজগঞ্জ যেতে সান্তাহার জংশন, নাটোর, পাবনার ঈশ্বরদী হয়ে প্রায় ২০০ কিলোমিটার পথ ঘুরতে হয়। নতুন রেলপথ নির্মাণ হলে দূরত্ব কমে হবে মাত্র ৭২ কিলোমিটার। বর্তমানে সান্তাহার জংশন, নাটোর, ঈশ্বরদী ও উল্লাপাড়া হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুতে পৌঁছতে হয়। তিন জেলার পথ ঘুরে বঙ্গবন্ধু সেতুতে পৌঁছাতে তিন থেকে চার ঘণ্টা লাগে। আর প্রায় ৪০৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ঢাকায় পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় ৯ ঘণ্টা। অপরদিকে সড়কপথে ২১৬ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে বাসে ঢাকা যেতে সময় লাগে ৫-৬ ঘণ্টা। বগুড়া থেকে সরাসরি বঙ্গবন্ধু সেতুতে ট্রেন সার্ভিস চালু হলে উত্তরের জেলার ট্রেনযাত্রীদের প্রায় ২০০ কিলোমিটার পথ কমে আসবে।

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম