Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

জবিতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনেই চলে পাঠদান প্রশাসনিক কার্যক্রম

Icon

সাকেরুল ইসলাম, জবি

প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০২২, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রাজধানী ঢাকার ব্যস্ততম পুরান ঢাকার সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ হাজার শিক্ষার্থীর এই বিদ্যাপীঠে কয়েকটি ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। ভবনের অগ্নিনির্বাপণ সক্ষমতাও প্রায় শূন্যের কোটায়। যে কোনো দুর্ঘটনায় ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আতঙ্কের মধ্যে শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিমত, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ। প্রশাসনিক ভবন, বিজ্ঞান ভবন, কলা ভবন, ভাষা শহিদ রফিক ভবনসহ বেশ কিছু ভবনের ছাদে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। কলাভবন ও বিজ্ঞান অনুষদের চারটি ভবনের অবস্থা জরাজীর্ণ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনসহ কোনো একাডেমিক ভবনেই অগ্নিনির্বাপণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। সারা বিশ্ববিদ্যালয়ে অগ্নিনির্বাপণের সিলিন্ডার রয়েছে ৪০টি এবং বেশিরভাগ মেয়াদোত্তীর্ণ। যার মধ্যে নতুন একাডেমিক ভবনে ৩০টি, বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে ৫টি এবং ভাষা শহিদ রফিক ভবনে ৩টি সিলিন্ডার রয়েছে।

জানা যায়, ২০১৩ সালে কোন ভবন বেশি ঝুঁকিপূর্ণ তা নির্ণয়ের জন্য জবি কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একটি বিশেষজ্ঞ দলকে দায়িত্ব দেয়। তারা অনুসন্ধান চালিয়ে চারটি ভবনকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই ভবনগুলো ব্যাপকভাবে সংস্কারের উদ্যোগ নিলেও শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন হয়নি। এ ছাড়া ১১০ বছরের পুরোনো প্রশাসনিক ভবনটি ঘষামাজা করে চালানো হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সব ধরনের কার্যক্রম। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ভবনেই জরুরি বর্হিগমন পথ নেই। কলাভবন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের দুটি ভবন ও অবকাশ ভবন থেকে নামার জন্য রয়েছে মাত্র একটি সিঁড়ি। নতুন একাডেমিক ভবন ও বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে একাধিক সিঁড়ি থাকলেও সুবিশাল স্থাপনা হিসাবে তা অপ্রতুল।

একাডেমিক ভবনগুলোর মধ্যে অগ্নিনির্বাপণ ঝুঁকির শীর্ষে রয়েছে নতুন একাডেমিক ভবন (নিউ বিল্ডিং)। নির্মিতব্য ১৩ তলা ভবনের ১২ ও ১৩ তলায় বেশকিছু কাজ বাকি রয়েছে। ভবনটির নিচ তলায় ৪টি, ২য় ও ৭ম তলায় ১টি এবং ৪র্থ তলায় ৮টি করে অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার রয়েছে। সিলিন্ডারগুলো অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে। বাকি ৩য় ও ৫ম ফ্লোরে কোনো অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। ভবনটির জন্য তিনটি সিঁড়ি থাকলেও নির্মাণ কাজের অজুহাতে একটি সিঁড়ি দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে। উন্মুক্ত বাকি দুই সিঁড়ির মধ্যে একটির কোনো কোনো ফ্লোরে কলাপসিবল গেট দিয়ে আটকানো। রেজিস্ট্রার দপ্তরের এক কর্মচারী বলেন, সব সময় মনের মধ্যে ভয় কাজ করে, কখন কী ঘটে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই চাকরি করতে হয়। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে থাকা বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, তারা প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছেন। ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, যে কোনো সময় ছাদ ধসে পড়তে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও সেই কক্ষে বসে ক্লাস ও পরীক্ষা দিতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দীন পাটোয়ারী যুগান্তরকে বলেন, সব ভবনে তো ফাটল আছে। এগুলো মেরামত হয়েছিল, পর্যায়ক্রমে আরও মেরামত হবে। সর্বশেষ কতদিন আগে মেরামত হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা বিভিন্ন ইউনিট ভিত্তিতে মেরামত হয়েছিল, যদি বিস্তারিত বলতে হয় দেখে বলতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, ভবনগুলোতে আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উঠি। ভবনগুলো প্রতিবছর মেরামত করা হয়। ভবনগুলো সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া আছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম