আরও পাঁচ হাইটেক পার্ক হচ্ছে
বিশ্বব্যাংকের কাছে হাজার কোটি টাকা সহায়তা চায় সরকার * বেকারত্ব কমাতে ভূমিকা রাখবে * অর্থসহায়তার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে ইআরডি
হামিদ-উজ-জামান
প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০১৮, ০২:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দেশে আরও পাঁচটি নতুন হাইটেক পার্ক হচ্ছে। এগুলোসহ পুরনো একটি হাইটেক পার্কে বিশ্বব্যাংকের কাছে সহায়তা চাচ্ছে সরকার।
এক্ষেত্রে ১২ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার বা প্রায় ৯৭৬ কোটি টাকা ঋণ সহায়তার জন্য অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগকে (ইআরডি) চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ।
প্রাইভেট সেক্টর ডেভেলপমেন্ট সাপোর্ট প্রজেক্টের (পিএসডিএসপি) আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে এ সহায়তা চাওয়া হচ্ছে। ২৯ মার্চ এ সংক্রান্ত চিঠিটি পাওয়ার পর এরই মধ্যে বিশ্বব্যাংকের কাছে অর্থসহায়তা চেয়েছে ইআরডি।
ইআরডির অতিরিক্ত সচিব ও বিশ্বব্যাংক উইংয়ের প্রধান মাহমুদা বেগম মঙ্গলবার যুগান্তরকে জানান, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও বেকারত্ব দূরীকরণে নতুন নতুন হাইটেক পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ খুবই সময়োপযোগী।
বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অর্থায়নের প্রস্তাব পাওয়ার পর দ্রুত আমরা সেটি প্রক্রিয়াকরণ করেছি। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ে এ প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই সাড়া পাওয়া যাবে।
হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, নতুন হতে যাওয়া পাঁচটি হাইটেক পার্ক হচ্ছে, সিরাজগঞ্জ হাইটেক পার্ক, মানিকগঞ্জ হাইটেক পার্ক, জয়পুরহাট হাইটেক পার্ক, চাঁদপুর হাইটেক পার্ক এবং মাদারীপুর হাইটেক পার্ক।
এছাড়া গাজীপুরের কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কে নতুন করে ৯৭ একর জমি দিয়েছে সরকার। এটিরও উন্নয়ন প্রয়োজন।
এসব পার্ক স্থাপন করা হলে দেশের বেকার সমস্যা সমাধানের সঙ্গে সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হবে। বিশ্বব্যাংক এক্ষেত্রে সহায়তা দিয়ে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।
হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় প্রাইভেট সেক্টর ডেভেলপমেন্ট সাপোর্ট প্রজেক্টের আওতায় বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কসহ দেশের বিভিন্ন হাইটেক পার্ক উন্নয়ন করছে।
এ প্রকল্পে এখন পর্যন্ত ৩৬৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকা (মূল ও অতিরিক্ত অর্থায়ন মিলে) দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এটি ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়ন হচ্ছে।
আরও বলা হয়েছে, প্রকল্পের মূল অর্থায়নের আওতায় গৃহীত সব কাজই শেষ হয়েছে। অতিরিক্ত অর্থায়নের আওতায় নেয়া অধিকাংশ কাজের চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এছাড়া চট্টগ্রামে একটি সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক স্থাপনের জন্য চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভবন এবং স্টার্ট-আপ হাব তৈরির জন্য জন্য কালিয়াকৈরে সেবা ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের বিষয়ে বিশ্বব্যাংক হতে অনাপত্তি পাওয়া গেছে।
এ কাজ দুটির জন্য চুক্তি করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশে হাইটেক শিল্পের বিকাশের জন্য বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ দেশের বিভিন্ন স্থানে হাইটেক পার্ক স্থাপন করছে।
এগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক কালিয়াকৈর গাজীপুর, যশোরে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, সিলেট ইলেকট্রিক সিটি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক, রাজশাহী ও জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক তৈরি করছে।
বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক, শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, জনতা টাওয়ার সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং সিলেট হাইটেক পার্কের জন্য ৭ একর ভূমি উন্নয়ন ও বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া রাজশাহী ও খুলনায় আইসিটি ইনকিউবেটর কাম ট্রেনিং সেন্টার স্থাপনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।
ইআরডির একাধিক কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে হাইটেক পার্ক স্থাপন প্রকল্পটি বিশেষ ভূমিকা রাখছে। এরই মধ্যে দুই ধাপে মূল প্রকল্পের জন্য যেহেতু বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করেছে, তাই এ পর্যায়ও সংস্থাটির আগ্রহ থাকাটাই স্বাভাবিক। বিশ্বব্যাংক থেকে মতামত পাওয়া গেলে এ ঋণের বিষয়ে পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।