Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণে অগ্রগতি নেই

এখনও পরামর্শক নিয়োগ হয়নি

Icon

মো. নাজমুল হুদা নাসিম, বগুড়া ব্যুরো

প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০১৯, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কাক্সিক্ষত বগুড়া-সিরাজগঞ্জ ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রগতি নেই। পরামর্শক নিয়োগ না হওয়ায় সার্ভে, ভূমি অধিগ্রহণসহ অন্য সব কার্যক্রমও শুরু হয়নি। অবিলম্বে রেলপথটি নির্মাণে উত্তরাঞ্চলবাসী সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর একনেকের সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেয়া হয়। ভারতের ঋণে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা রয়েছে।

জানা গেছে, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জের মধ্যে সরাসরি রেলপথ না থাকায় এ অঞ্চলের লালমনি এক্সপ্রেসসহ অন্য ট্রেনগুলো সান্তাহার জংশন, নাটোর ও পাবনার ঈশ্বরদী হয়ে প্রায় ১২০ কিলোমিটার ঘুরে ঢাকায় যেতে হয়। প্রায় দ্বিগুণ পথ যেতে একদিকে সময় অন্যদিকে অর্থের ব্যয় হচ্ছে। ট্রেনে বগুড়া থেকে দীর্ঘপথ ঘুরে ঢাকার দূরত্ব ৪০৫ কিলোমিটার। যানজট ছাড়া বগুড়া থেকে ঢাকায় বাসে যেতে সর্বোচ্চ ৫ ঘণ্টা লাগে। সেখানে ট্রেনে যেতে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা ব্যয় হচ্ছে। বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ হলে ট্রেনে অন্তত তিন ঘণ্টা সময় সাশ্রয় হবে। এ কারণে সরকার বগুড়া-সিরাজগঞ্জ নির্মাণের চিন্তা-ভাবনা করে। ২০০৫ সালে প্রথম বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণে একটি প্রকল্প নেয়া হয়। এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে প্রাথমিক প্রস্তুতি হিসেবে জমি অধিগ্রহণে জরিপও চালানো হয়। অভিযোগ, বগুড়া থেকে সে সময় নির্বাচিত বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী পরিবহন ব্যবসায়ীর বিরোধিতায় শেষ পর্যন্ত প্রকল্পটি ভেস্তে যায়। ২০১১ সালে সিরাজগঞ্জে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ স্থাপনে প্রতিশ্রুতি দেন। এতে এ অঞ্চলের মানুষ আশায় বুক বাঁধলেও পরবর্তীতে রেলপথ নির্মাণ তৎপরতা থেমে যায়। রেলপথ নির্মাণে অনেক সভা-সমাবেশ ও লেখালেখি শুরু হয়। ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর বগুড়া শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলপথ নির্মাণে আবারও আশ্বাস দেন। তবে অর্থের সংস্থান না হওয়ায় প্রকল্পটির কার্যক্রম থমকে যায়। ২০১৭ সালের ৪ অক্টোবর যোগাযোগ অবকাঠামো ও বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে তৃতীয় ক্রেডিট লাইনে বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণে ভারত সরকার ঋণ দিতে সম্মত হয়। এরপর প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রজেক্ট প্রোফাইল প্রণয়ন, নকশা তৈরি, স্টেশনের সংখ্যা নির্ধারণ এবং জমির দাম নির্ধারণের কাজ শুরু করা হবে। রেলপথ নির্মাণ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এ প্রকল্পের আওতায় ডুয়েল গেজের দুটি রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা হয়েছে। বগুড়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার পশ্চিমে ছোট বেলাইল এলাকা থেকে সিরাজগঞ্জের এম মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত মূল রুট ৭২ কিলোমিটার এবং বগুড়ার কাহালু স্টেশন থেকে রানীরহাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটারসহ মোট ৮৪ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ রেলপথ। বগুড়া শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে রানীরহাটে জংশন নির্মাণ করা হবে। এছাড়া বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রুটে শেরপুর, চান্দাইকোনা, রায়গঞ্জ, কৃষাণদিয়া ও সদানন্দপুর স্টেশন স্থাপন করা হবে। প্রস্তাবিত ৮৪ কিলোমিটার রেলপথের জন্য ৯৬০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে বগুড়ায় ৫২ কিলোমিটার রেলপথের জন্য ৫১০ একর এবং সিরাজগঞ্জের ৩২ কিলোমিটারের জন্য ৪৫০ একর। সবমিলিয়ে প্রকল্পের নির্মাণে পাঁচ হাজার ৫৭৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়। প্রকল্পের সর্বশেষ অবস্থা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান জানান, প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর একনেকের সভায় অনুমোদন দেয়া হয়। ভারতের ঋণে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হওয়ার কথা রয়েছে। শর্তানুসারে ভারতের পরামর্শক নিয়োগ দেয়ার কথা। তিনি আশা করেন, আগামী ৪-৫ মাসের মধ্যে পরামর্শক নিয়োগ হবে। এরপর প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ, সার্ভে, জমি অধিগ্রহণসহ অন্যসব কাজ করা হবে। প্রধান প্রকৌশলী আরও বলেন, সব প্রক্রিয়া শেষে রেলপথের মূল কাজ শুরু করতে আরও অন্তত দেড় বছর লাগতে পারে। অর্থাৎ ২০২১ সালের মাঝামাঝি এ রেলপথ নির্মাণ কাজ শুরু হতে পারে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম