Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

চিঠি চালাচালিতে সীমাবদ্ধ স্নাতক কোর্স অধিভুক্তি

‘তিব্বিয়া’ নাম বাদ, নতুন নামে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

Icon

ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সিলেট ব্যুরো

প্রকাশ: ০৪ মে ২০১৯, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

চিঠি চালাচালিতে সীমাবদ্ধ স্নাতক কোর্স অধিভুক্তি

বিভাগের একমাত্র ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাসেবা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সিলেট সরকারি তিব্বিয়া কলেজ। নানা সংকটে জোড়াতালি দিয়ে কোনোরকম চলছে কলেজটির কার্যক্রম। এরই মধ্যে প্রাচীন এ চিকিৎসাসেবা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ‘তিব্বিয়া’ নাম বাদ দিয়ে নতুন নামকরণ করা হয়েছে।

উন্নীত করা হয়েছে ‘সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, সিলেট’ নামে। নির্দেশ দেয়া হয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) আওতায় স্নাতক পর্যায়ে উন্নতকরণের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের। অধিভুক্ত করে স্নাতক কোর্স চালুর জন্য যোগাযোগ করলে নির্দিষ্ট কিছু শর্ত দেয় শাবি কর্তৃপক্ষ। কলেজ কর্তৃপক্ষ শাবির শর্তগুলো স্বাস্থ্য অধিদফতরে পাঠানোর দু’বছর অতিবাহিত হলেও এখনও কোনো সাড়া মেলেনি। বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ও যুগ্ম সচিবরা চার দফা মিটিং করে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি। তবে চার বছরে শুধু নতুন নামকরণটিই বাস্তবায়ন হয়েছে। বাকি সবই রয়েছে চিঠি চালাচালিতে সীমাবদ্ধ।

সিলেট বিভাগের একমাত্র আয়ুর্বেদিক ও ইউনানী চিকিৎসাসেবা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সিলেট তিব্বিয়া কলেজ ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসার একটি কক্ষে কলেজ চালু করা হলে পরে ১৯৮০ সালে স্থানান্তর হয় চালিবন্দর এলাকায় একটি ভাড়া করা ভবনে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে কলেজের নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শুরুর সময়ই তিব্বিয়া কলেজের ছাত্র সংসদ নেতারা কলেজের পুরনো নামের স্থলে নতুন নামকরণের তৎপরতা শুরু করেন। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত বশিরুল হক চৌধুরীর নামে তিব্বিয়া কলেজের নতুন নাম ‘বশিরুল হক ইউনানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল’ সাইনবোর্ড নির্মাণাধীন ওই ভবনের সামনে সাঁটানো হয়। এ নিয়ে পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে ওই নাম বাতিল করে ২০১১ সালের ২৪ ডিসেম্বর সিলেট সরকারি তিব্বিয়া কলেজ নামেই নতুন ভবনের উদ্বোধন করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী মুজিবুর রহমান ফকির।

এর ৫ বছর পর ২০১৬ সালের ২৭ জুন সিলেট সরকারি তিব্বিয়া কলেজকে নাম পরির্বতন করে ‘সরকারি ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, সিলেট’ নামে উন্নীতকরণ করা হয়। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) আওতায় স্নাতক পর্যায়ে উন্নীতকরণের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়। ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পক্ষ থেকে শাবি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা স্নাতক চালুকরণের জন্য লিখিত কিছু শর্ত দেন। শর্তগুলো হল- ব্যাচেলর অব ইউনানী মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি (বিইউএমএস) এবং ব্যাচেলর অব আয়ুর্বেদিক মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি (বিএএমএস) কোর্চ পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, শিক্ষক, মিউজিয়াম, ব্যবহারিক ল্যাব, ক্লাস রুম, লেকচার গ্যালারি, লাইব্রেরি, ঔষধি গাছের বাগান, ছাত্রছাত্রীদের হল ইত্যাদি থাকা প্রয়োজন। ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ চালুর নিমিত্তে প্রয়োজনীয় বিষয়সমূহ সংস্থান হওয়ার পর অধিভুক্তি ফিস এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত ফরম পূরণ করে বিইউএমএস ও বিএএমএস কোর্চের সিলেবাস ও কারিকুলামসহ আবেদন করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। ২০১৭ সালের ৩ অক্টোবর এসব বিষয় অবগত করে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে চিঠি পাঠানো হয়। দু’বছর অতিবাহিত হলেও মৌখিক আশ্বাস ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি এখনও সরকারি তিব্বিয়া (ডিপ্লোমা) কলেজের ৪৯ পদের মধ্যে ৩০টি পদই শূন্য রয়েছে। ইনডোর না থাকায় ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থীদের সঠিকভাবে ইন্টার্নিও করানো হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. মো. মুহিবুর রহমান খান। তিনি যুগান্তরকে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরে একাধিকবার চিঠি দিয়েছি আমরা। কোনো সাড়া পাইনি। শাবির অধিভুক্তির শর্ত পূরণের প্রয়োজনীয় অর্থ, অবকাঠামো ও জনবল পেলেই স্নাতক কোর্স চালু করা যাবে।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম