কিশোরগঞ্জ-১ আসন
সৈয়দ আশরাফের স্থলাভিষিক্ত কে হচ্ছেন
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
এটিএম নিজাম, কিশোরগঞ্জ ব্যুরো
প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০১৯, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সদ্য প্রয়াত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের আসনে পুনর্নির্বাচনে কে হচ্ছেন দলীয় প্রার্থী- সবার দৃষ্টি এখন সেদিকে। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ২৮ ফেব্রুয়ারি কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনে ভোটের তফসিল ঘোষণার পর থেকে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা ও হিসাব-নিকাশ। এ হিসাব-নিকাশ আওয়ামী লীগদলীয় প্রার্থী হিসেবে সৈয়দ পরিবারকেই এগিয়ে রাখে। উপরন্তু আবেগপ্রবণ নেতাকর্মী ও সমর্থকদের অনেকেই বিকল্প প্রার্থী হিসেবে আশরাফকন্যা লন্ডন প্রবাসী ব্যাংক কর্মকর্তা রীমা ইসলামকে মনোনয়ন দিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তোলে। মনোনয়নপত্র বিক্রির প্রথম দিন বুধবার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে সৈয়দ পরিবারের পক্ষে প্রয়াত নেতা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ছোট ভাই সৈয়দ শাফায়েতুল ইসলামের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়। তার পক্ষে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন ব্যক্তিগত সহকারী তোফাজ্জল হোসেন। এছাড়াও রাষ্ট্রপতিপুত্র রাসেল আহমেদ তুহিন এবং কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পাবলিক প্রসিকিউটর শাহ আজিজুল হকের পক্ষেও মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয় প্রথম দিন। বৃহস্পতিবার (দ্বিতীয় দিন) মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সহকারী মশিউর রহমান হুমায়ুন ও বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-পাঠাগার সম্পাদক অধ্যক্ষ এমএ হান্নান। এ নিয়ে গত দু’দিনে কিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনের পুনর্নির্বাচনে মোট পাঁচ মনোনয়ন প্রত্যাশী ফরম সংগ্রহ করলেন। ৩১ জানুয়ারি মনোনয়ন ফরম বিক্রির শেষ দিন পর্যন্ত কে কে মনোনয়ন ফরম কিনছেন আর কে পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন এ আলোচনা নেতাকর্মী-সমর্থকদের মুখে মুখে। এর আগে ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, তার দুই সহোদর মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ সাফায়েতুল ইসলাম ও লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম এবং চাচাতো ভাই বিসিবির পরিচালক ও কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুসহ সৈয়দ পরিবারের চারজন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। সৈয়দ পরিবারের এ চার সদস্যের বাইরে আরও ৭ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন এবং জমা দেন। আর এই তালিকায় ছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেজো ছেলে রাসেল আহমেদ তুহিন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সহকারী কৃষিবিদ মশিউর রহমান হুমায়ুন, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ডের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ শরীফ সাদী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) কিশোরগঞ্জ জেলা সভাপতি ডা. দীন মোহাম্মদ, বাংলাদেশ কৃষক লীগ, কেন্দ্রীয় কমিটির মহিলাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ গোলশান আরা বেগম এবং বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-পাঠাগার সম্পাদক অধ্যক্ষ এমএ হান্নানসহ মোট ১১ প্রার্থী। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল গণতন্ত্রী পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কিশোরগঞ্জ জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলনও মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন এবং জমা দেন। কিন্তু মনোনয়ন বোর্ড সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ও মশিউর রহমান হুমায়ুনকে যৌথভাবে দলীয় মনোনয়ন দেন। শেষ পর্যন্ত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকেই চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আর সে নির্বাচনে এলাকায় অনুপস্থিত থেকেও সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম পঞ্চম বারের মতো কিশোরগঞ্জ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে বিজয়ী হয়। ৩ জানুয়ারি শপথ অনুষ্ঠানের দিন রাতে থাইল্যান্ডের হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। ৭ জানুয়ারি কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহে তার নামাজে জানাজায় তিন লাখেরও বেশি মানুষ শরিক হয়।