রাজনৈতিক মামলায় জামিন মিলছে
চট্টগ্রামে চার দিনে ৭৫০ বন্দির মুক্তি
চাপ কমছে কারাগারে
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
নাসির উদ্দিন রকি, চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
![চট্টগ্রামে চার দিনে ৭৫০ বন্দির মুক্তি](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2019/01/06/image-130159-1546727435.jpg)
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে বন্দি মুক্তির হার বেড়েছে। এখান থেকে রাজনৈতিক মামলায় চার দিনে ৭৫০ বন্দি মুক্তি পেয়েছেন। ১ থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ২০০ জন বন্দি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
সংশ্লিষ্টদের মতে, এক হাজার ৮৫৩ জন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে শনিবার বন্দি ছিল ১০ হাজার ৩৮৯ জন, যা কারাগারে ধারণ ক্ষমতার প্রায় পাঁচগুণ বেশি। এর মধ্যে অধিকাংশই রাজনৈতিক মামলার আসামি। কারাগারটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এবারই সর্বোচ্চসংখ্যক বন্দির চাপ নিতে হয়েছে। অতিরিক্ত বন্দির চাপ সামলাতে কারা কর্তৃপক্ষ হিমশিম খাচ্ছে। কারাগারের মূল ভবনে জায়গা না হওয়ায় অনেক বন্দিকে বারান্দা ও রান্নাঘরে থাকতে দেয়া হয়। তবে গত কয়েকদিনে জামিনের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় কারাগারে বন্দির চাপ কমতে শুরু করেছে।
সূত্র জানায়, ১ থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত চার দিনে কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন ১৮ জন নারীসহ ৭২২ জন বন্দি। এর মধ্যে ১ জানুয়ারি ৬৪ জন, ২ জানুয়ারি ১৩০ জন, ৩ জানুয়ারি ২২১ জন ও ৪ জানুয়ারি ৩০৫ জন বন্দি জামিনে মুক্তি পান।
সদ্যজামিনে মুক্তি পাওয়া নুরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, কারাগারে গাদাগাদি করে অনেকটা শ্বাসরুদ্ধ অবস্থায় তাকে থাকতে হয়েছে। মূল ভবনে জায়গা না হওয়ায় অনেক বন্দিকে খোলা বারান্দায় থাকতে দেয়া হয়েছে। পর্যাপ্ত শীতের কাপড় না থাকায় বন্দিদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় অনেক বন্দি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
তিনি বলেন, কারাগারে সকালের নাস্তা দুপুরে এবং দুপুরের ভাত বিকালে দেয়া হয়। অধিকাংশ বন্দিকে না খেয়ে আদালতে হাজিরা দিতে যেতে হয়। এছাড়া নিরীহ বন্দিদের ওপর প্রভাবশালী বন্দির নির্যাতন তো আছেই। এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রামের টিআইবি-সনাকের সভাপতি অ্যাডভোকেট আকতার কবীর চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, কারাগারে অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছেন বন্দিরা। কারাবন্দিদের অধিকাংশই নির্দোষ, নিরপরাধ ও নিরীহ। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে তাদের ঠাঁই হয়েছে কারাগারে। তিনি বলেন, কারাগার অপরাধীদের সংশোধনাগার হলেও দাগী অপরাধীদের সংস্পর্শে নিরীহ বন্দিরাও অপরাধী হয়ে উঠতে পারে। পরবর্তী সময়ে তারা সমাজ ও রাষ্ট্রের জন্য মাথাব্যথার কারণ হতে পারে।
চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী আবদুস সাত্তার যুগান্তরকে বলেন, বন্দির চাপে চট্টগ্রাম কারাগারে মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। সরকার নির্বাচনের আগে বিএনপির নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতার করার কারণে কারাগারে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। মামলার এজাহারে যেসব নেতাকর্মীর নাম নেই তাদের জামিনে মুক্তি দেয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেলার মনির হোসেন যুগান্তরকে বলেন, কয়েকদিন ধরে জামিনের হার বেড়েছে। জামিননামা আসার পর যাচাই-বাছাই শেষে বন্দিদের মুক্তি দেয়া হচ্ছে।