উপাচার্যের তড়িঘড়ি সিন্ডিকেট
খুলনা শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪ পদে নিয়োগ চূড়ান্ত
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
নূর ইসলাম রকি, খুলনা
প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছাত্র-জনতা ডাকে ৫ আগস্ট গণঅভ্যূত্থানের পর দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ উপাচার্য পদত্যাগ করেছেন।
এমন পরিস্থিতি খুলনার শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুর রহমান ব্যস্ত নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে। ২৭ আগস্ট তিনি তড়িঘড়ি করে অনলাইনের মাধ্যমে সিন্ডিকেট করেন। সভা থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে নিয়োগ দেওয়া ১৪টি পদের অনুমোদন করিয়েছেন। তড়িঘড়ি করে নিয়োগ দেওয়ার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, উপ-পরিচালকসহ (অর্থ ও হিসাব) বিভিন্ন পদ রয়েছে। এমনকি নিয়োগের বেশ কয়েকটি পদে সরাসরি মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। তবে এই নিয়োগ প্রক্রিয়াকে উপাচার্য রুটিন ওয়ার্ক বলে আখ্যায়িত করেছেন। জানা যায়, ২০২১ সালের ৩ মে তৎকালীন জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মোহাম্মাদ মাহবুবুর রহমান শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় খুলনার উপাচার্য হিসেবে যোগদান করেন। এখনও অবধি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়নি।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুর রহমান গোপালগঞ্জের বাসিন্দা হওয়ায় তার প্রভাব ছিল অনেক। খুলনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলাল, শেখ জুয়েল, শেখ সোহেল, শেখ রুবেলসহ সবার আস্থাভাজন ছিলেন তিনি। এছাড়া খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা আলী আকবর টিপু ছিল উপাচার্যের ভাগনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়াগুলোতে গোপালগঞ্জের অগ্রাধিকারসহ শেখ পরিবারের অনুরোধ রাখতেন এই উপাচার্য। সাবেক প্যানেল মেয়র টিপু তার আত্মীয় হওয়ায় তিনিই উপাচার্যের সঙ্গে মিলে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, সর্বশেষ চলতি বছরের ৫ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এই নিয়োগ কার্যক্রমের মধ্যে ১২ জুন অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার টাইপিস্ট, অফিস সহায়ক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং পিও (পার্সোনাল অফিসার) পদগুলোর লিখিত পরীক্ষার ফলাফলসহ মৌখিক পরীক্ষার সময় ও স্থান জানানো হয়। একই তারিখে কুক, ড্রাইভার, রেজিস্ট্রার এবং উপ-পরিচালক (অর্থ ও হিসাব)পদে সরাসরি মৌখিক পরীক্ষার জন্য চিঠি দেওয়া হয়। এ ঘটনার পর ৫ আগস্টে সরকার পতনের পর সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমে স্থবিরতা চলে আসে। একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রারসহ অনেকেই পদত্যাগ শুরু করেন। ঠিক সেই মুহূর্তে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে সিন্ডিকেট মিটিং করার জন্য তোড়ঝোড় শুরু করে। অবশেষে ২৭ আগস্ট তিনি অনলাইনের মাধ্যমে সিন্ডিকেট মিটিং করে নিয়োগগুলোর চূড়ান্ত করেন। ইতিমধ্যে তিনি রেজিস্ট্রার পদে কেএম রব্বানী এবং উপ-পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) পদে আসমা খাতুনের নিয়োগ সিন্ডিকেট থেকে চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. মাহবুবুর রহমান জানান, আগস্টের ২৭ তারিখে অনলাইনের মাধ্যমে সিন্ডিকেটে নিয়োগসহ অন্যান্য অনেক বিষয় ছিল। ১৪টি পদে নিয়োগের অনুমোদন করা হয়। এর মধ্যে কয়েকজনকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেন, এই নিয়োগ প্রক্রিয়া রুটিন ওয়ার্ক কোন তড়িঘড়ি বা অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই।