কোটি কোটি মৌমাছির মৃত্যু বিপাকে মৌ খামারিরা
উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০১:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
উল্লাপাড়ায় সরিষার ফলন বাড়ানোর জন্য অসচেতনতায় কীটনাশক ওষুধ ছিটানোর কারণে কোটি কোটি মৌমাছি মরে যাচ্ছে বলে অভিযোগ মৌ খামারিদের। মৌ খামারিরা বলছেন, এর মধ্যে তাদের অন্তত ১০ কোটি মৌমাছি মরে গেছে। ফলে এ বছর উল্লাপাড়ায় তাদের মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না।
উপরন্ত খামারিদের লোকসান গুনতে হবে। উল্লাপাড়ায় এ বছর ১৪টি ইউনিয়নের বিভিন্ন সরিষা মাঠে ১১৫ জন খামারি মধু সংগ্রহের জন্য মৌ বাক্স ফেলেছেন। উপজেলা কৃষি দপ্তরের হিসেবে এ বছর উল্লাপাড়ায় ১৭০ টন মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।
উপজেলার আলীগ্রামে আশার আলো নামের এক মৌ খামারি মধু সংগ্রহের জন্য ৩৫০টি মৌ বাক্স ফেলেছেন। এদের এবার সরিষা থেকে মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৯ টন। এই খামারের মালিক আব্দুর রশিদ অভিযোগ করেন, তিনিসহ অপর পার্শ্ববর্তী মৌ খামারিরা যেসব সরিষার জমির পাশে মৌ বাক্স ফেলেছেন সেসব জমির মালিকরা ফলন বাড়ানোর জন্য প্রায় ২ সপ্তাহ ধরে জমিতে কীটনাশক ছড়াচ্ছেন। আর এতে কীটনাশক ছড়ানো সরিষার ফুলে মধু সংগ্রহ করতে বসা অন্তত তার ২ কোটি মৌমাছি মারা গেছে।
এ ব্যাপারে কীটনাশক ছিটানো কৃষকদের মধ্যে কথা হয় আব্দুস ছাত্তার, জাহাঙ্গীর হোসেন ও শামসুল হকের সঙ্গে। এরা জানান, জমিতে ফলন বেশি হওয়ার জন্য তারা ভিটামিনজাতীয় কীটনাশক প্রয়োগ করেছেন। তবে দিনের বেলায় ওষুধ ছিটানোর কারণে মৌমাছি মারা গেছে। কিন্তু কীটনাশক প্রয়োগের কারণে মৌমাছির মৃত্যুর বিষয়টি তাদের জানা ছিল না।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করলে উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা আজমল হক জানান, মৌমাছির মৃত্যুর খবর পেয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাসহ তারা ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট ফসলের মাঠগুলো পরিদর্শন করেছেন। আসলে মৌমাছি সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সময় ধরে সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে থাকে।
বিকেল বেলা মৌমাছি তাদের বাক্সে ফিরে যায়। কৃষকরা বিকেলে তাদের মাঠে কীটনাশক ছিটালে মৌমাছির কোনো ক্ষতি হতো না। কৃষকদের অসচেতনতার জন্য এমনটা হয়েছে।