Logo
Logo
×

বাংলার মুখ

ভরা মৌসুমেও পায়রা নদীতে ইলিশের দেখা নেই

সাগর মোহনায় ডুবোচরে প্রতিবন্ধকতা

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন, আমতলী

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০২১, ০২:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ভরা মৌসুমেও পায়রা নদীতে ইলিশের দেখা নেই

ফাইল ছবি

ভরা মৌসুমেও পায়রা নদীতে কাঙ্ক্ষিত রুপালি ইলিশের দেখা নেই। সাগর মোহনায় ডুবোচরে বাধাগ্রস্ত হয়ে ইলিশ উলটোপথে ফিরে যায়। ফলে পায়রা নদীতে ইলিশ প্রবেশ এবং প্রজননে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বলে জানান মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড. মো. আনিছুর রহমান। পায়রা নদীতে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা না পরায় উপকূলের ১৪ হাজার ৬৮৯ জেলে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সাগর মোহনার ডুবোচর খনন করে পায়রা নদীতে ইলিশ প্রবেশ ও প্রজনন কার্যক্রম সুগম করার দাবি জানিয়েছেন জেলেরা।

জানা গেছে, বুড়িশ্বর নদী বা পায়রা নদী বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বরিশাল, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ৯০ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ১২০০ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বুড়িশ্বর নদী বা পায়রা নদীটি বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাটি ইউনিয়ন এলাকার প্রবাহমান পাণ্ডব নদী থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। অতঃপর এই নদীর জলধারা আঙ্গারিয়া, লেবুখালি, পাঙ্গাশিয়া ইটবাড়িয়া ছোটবিঘাই, বড়বিঘাই, আয়লা পাটকাটা, গুলিশাখালী, আমতলী পৌরসভা, বুড়িরচর, আড়পাঙ্গাশিয়া এবং পচাকোড়ালিয়া, ছোটবগী ও নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়ন অতিক্রম করে বঙ্গোপসাগরে নিপতিত হয়েছে। নদীটির উজানের তুলনায় ভাটির দিক বেশি প্রশস্থ। অপরদিকে বিষখালী ও বলেশ্বর নদী বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে। তিন নদীর মোহনাকে জেলেদের ভাষায় গাঙের আইল বলা হয়। বঙ্গোপসাগরের মিলিত হওয়া বিষখালী-বলেশ্বর মোহনায় লালদিয়া সমুদ্র সৈকত এবং পায়রা-বিষখালীর মোহনায় পদ্মাবাবুগঞ্জচর। তিন নদীর মোহনায় এ চর স্বাভাবিক জোয়ারের পানি প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে। এ কারণে নদীর গভীরতা দিন দিন কমে যাচ্ছে। পায়রা-বিষখালী নদীর মোহনায় রয়েছে বড়াইয়্যার ডুবোচর। ১৫-২০ কিলোমিটারজুড়ে এ চর ফকিরহাট থেকে শুরু করে আশার চরে মিলিত হয়েছে। এ চরটি বঙ্গোপসাগর থেকে পায়রা নদীতে জোয়ারের পানি প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে। আশার চরের শেষ সীমানা থেকে শুরু হয়েছে নলবুনিয়ার ডুবোচর। এ চরের বিস্তৃতি ৭-৮ কিলোমিটার। এ ডুবোচরটি পায়রা নদীর প্রবেশ দ্বারে অবস্থিত। পায়রার প্রবেশ মুখ অতিক্রম করে ৩-৪ কিলোমিটার পরে পরপর পদ্মা ও কুমিরমারা ডুবোচর। এ চরের বিস্তৃতি ৬-৭ কিলোমিটার। জোয়ারের সময় এ ডুবোচরে প্রচণ্ড তুফান হয়। এ সময় ডুবোচরের কারণে সাগর থেকে জোয়ারের পানির সঙ্গে রুপালি ইলিশ প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে অন্যান্য নদীর তুলনায় পায়রা নদীতে তুলনামূলক কম ইলিশ প্রবেশ করে।

সাগর-সংলগ্ন নলবুনিয়া গ্রামের জেলে আলমগীর হাওলাদার বলেন, সাগর মোহনায় ডুবোচরের সৃষ্টি হওয়ায় পায়রা নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের পানি প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে। এতে রুপালি ইলিশ পায়রায় প্রবেশ করতে পারে না। এ ডুবোচর খনন করে নদীর স্বাভাবিক গতি পথ ফিরে না আনতে পারলে পায়রা নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মিলবে না।

তালতলী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, সাগর মোহনায় ডুবোচরের কারণে পায়রা নদীর নাব্য হারিয়েছে। এতে জোয়ারের স্রোতের তীব্রতা কমে যাওয়ায় ইলিশ প্রবেশে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই তুলনামূলক পায়রা নদীতে ইলিশ কম। পায়রা নদীর মোহনায় ডুবোচর খনন করে নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনতে পারলে ইলিশ প্রবেশ এবং প্রজননে কোনো বাধা থাকবে না।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট নদী কেন্দ্র চাঁদপুর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ইলিশ গবেষক ড. মো. আনিছুর রহমান বলেন, সাগর মোহনা অঞ্চলে ডুবোচর তথা তীব্র নাব্য সংকটে ইলিশ চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম