ড্রেজারে বালু উত্তোলন
শাহজাদপুরে যমুনা ও জকিগঞ্জে সুরমার ভাঙনে হুমকিতে বাঁধ
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
শাহজাদপুর (সিরাজগঞ্জ) ও জকিগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০২০, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
![ড্রেজারে বালু উত্তোলন](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2020/12/12/image-373357-1607744640.jpg)
ফাইল ছবি
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী, জালালপুর, কৈজুরী ও গালা ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে যমুনা নদী থেকে বালু দস্যুরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে।
ফলে এ ৪টি ইউনিয়নের ১০টি গ্রামে শুরু হয়েছে অসময়ে যমুনা নদীর ভাঙন। এতে বিলীন হচ্ছে অসংখ্য বাড়িঘর ও ফসলি জমি।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানায়, শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী ইউনিয়নের আড়কান্দি, জালালপুর ইউনিয়নের পাকুরতলা, ঘাটাবাড়ি, কৈজুরী ইউনিয়নের পাঁচিল, জগতলা ও গালা ইউনিয়নের বিনোটিয়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ড্রেজার দিয়ে কোটি-কোটি টাকার বালু উত্তোলন করছে এলাকার প্রভাবশালী একাধিক বালু দস্যু গ্রুপ।
পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন অভিযান চালালে ২/৪ দিন বন্ধ থাকার পর আবারও শুরু হয় বালু উত্তোলন। ফলে বালু দস্যুদেও কোনোভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না। প্রভাবশালী এসব বালু দস্যুদের হুমকির ভয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করতেও সাহস পাচ্ছে না।
ফলে বালু দস্যুরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যমুনা নদীর যত্রতত্র থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ব্রাহ্মণগ্রাম থেকে পাঁচিল পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে।
এছাড়া কৈজুরি থেকে ভেড়াকোলা পর্যন্ত প্রায় নতুন বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মধ্যে পড়েছে।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর ইউএনও বরাবর অভিযোগকারী রূপসী গ্রামের রুবেল ভুঁইয়া ও ঘাটাবাড়ি গ্রামের আসাদ আলী জানান, প্রশাসনের অভিযানের পর কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর আবার বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে ইউএনও শাহ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহা বলেন, যমুনা নদী থেকে কোনোভাবেই কাউকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে দেয়া হবে না। এ বিষয়ে আবারও অভিযান শুরু করা হবে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন বলেন, যমুনা নদী থেকে কাউকে বালু উত্তোলনের অনুমতি দেয়া হয়নি। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে অচিরেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে সিলেটের জকিগঞ্জে প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে সুরমা নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে বারহাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে।
বালু উত্তোলনের কারণে নদী গভীরতর সৃষ্টি হয়ে তীরবর্তী বাড়িঘর, ফসলি জমি ভাঙন ও পরিবেশ বিপর্যয়ের মারাত্মক আশঙ্কা রয়েছে।
এ নিয়ে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদফতরের পরিচালক ও ইউএনও বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী।
লিখিত অভিযোগে এলাকাবাসী উল্লেখ করেন, সুরমা নদীর অব্যাহত ভাঙনে সুরমা নদীর পার্শ্ববর্তী চক ও উত্তর খিলোগ্রামের বেশিরভাগ বাড়ীঘর ও ফসলিজমি ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে শাহগলী বাজারসহ আশপাশের জনবসতি ও স্থাপনা। বালু উত্তোলন বন্ধের ব্যাপারে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করে বারহালের বাসিন্দা তাজুল ইসলাম চৌধুরী, আজিজুর রহমান, জুবের আহমদ, সাদেক আহমদ চৌধুরীসহ এলাকাবাসী বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে নদী তীরবর্তী বাড়িঘর, ফসলি জমি ভাঙন ও পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘সরকারি কাজের স্বার্থে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বিষয়টি পিআইও, ইউএনও’সহ সবাই অবগত’। ইউএনও সুমী আক্তার বলেন, ‘বিষয়টি তার জানা নেই। তিনি কাউকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অনুমতি দেননি। খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন।’