মাইকে ফুঁ দিয়ে তেল-পানি পড়া দেন কবিরাজ!
কিশোরগঞ্জ ব্যুরো
প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০১৯, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বৈরী আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে কাকঢাকা ভোর থেকে তেল ও পানির বোতল নিয়ে ছুটছেন বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ। সবার গন্তব্য পাকুন্দিয়া উপজেলার সুখিয়া ইউনিয়নের চরপলাশ গ্রামের ফসলের মাঠ। শনিবার সকাল ৮টা বাজার আগেই নারী-পুরুষের উপস্থিতিতে কানায় কানায় ভরে উঠে ওই বিশাল মাঠ। এখানে কাঠুরিয়া কবিরাজ সবুজ মিয়া আসবেন বলে মঞ্চও তৈরি করা হয়। তিনি পানি ও তেলে ফুঁ দেবেন। তার ঝাড়ফুঁয়ের পানি খেলে এবং তেল মালিশ করলে সব প্রকার রোগবালাই থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে ও মনোবাসনা পূরণ হবে। এমন অন্ধ বিশ্বাস থেকেই হাজার হাজার নর-নারীর উপস্থিতি।
এবার অপেক্ষার পালা কাঠুরিয়া কবিরাজের। হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি সামাল দিতে মঞ্চে এসে উঠলেন পাকুন্দিয়া পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেণু ও সুখিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল হামিদ টিটু। সকাল ১১টার দিকে ভালুকা উপজেলার পাইলাবর গ্রামের কাঠুরিয়া কবিরাজ এসে হাজির হন। তিনি বক্তব্যে বলেন, ‘আমি মাইকে ফুঁক দিব, আর মাইকে আমার ফুঁকের আওয়াজ যে পর্যন্ত যাবে, সে পর্যন্ত তেল ও পানির বোতলে ফুঁক কাজ করবে।’ এরপর কবিরাজ মাইকে ফুঁক দিলেন। আর চার পাশে অবস্থান নেয়া হাজার হাজার নর-নারী তেল-পানির বোতল উঁচিয়ে ধরলেন। রোগবালাই দূর এবং মনোবাসনা পূরণের অন্ধ বিশ্বাস নিয়ে বাড়ি ফিরলেন তারা।
পাকুন্দিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেণু জানান, কিছু ভক্তের অনুরোধে এখানে কাঠুরিয়া কবিরাজের আগমন ঘটে। বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে পরিস্থিতি শান্ত রাখতে তিনি চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে আসেন। কিশোরগঞ্জ শহরের বড়বাজার জামে মসজিদের খতিব মুফতি মাওলানা একেএম সাইফুল্লাহ এ প্রসঙ্গে বলেন, এভাবে মাইকে ফুঁক দেয়া মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের আয়োজন প্রতারণা ও শিরকের শামিল।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সবুজ মিয়া নামের ওই কবিরাজ কাঠ কেটে জীবিকা অর্জন করেন। সপ্তাহে চার দিন কাঠ কাটেন এবং তিন দিন ‘কবিরাজি’ করে থাকেন। স্বপ্নপ্রাপ্ত হয়ে এ ধরনের কবিরাজি করেন বলে দাবি তার।