ভালো কাজ মানুষ গ্রহণ করবেই : হায়দার
হাসান সাইদুল
প্রকাশ: ২৭ মে ২০১৮, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ভিন্নধর্মী গানের স্রষ্টা হায়দার হোসেন
ভিন্নধর্মী গানের স্রষ্টা হায়দার হোসেন। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে শ্রোতাদের ব্যতিক্রমী গান উপহার দিয়ে আসছেন।
গানে গানে তিনি তুলে ধরেন আমাদের জীবনের নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। গান ও তার বর্তমান ব্যস্ততাসহ নানা প্রসঙ্গে আজকের ‘হ্যালো...’ বিভাগে কথা বলেছেন তিনি।
* যুগান্তর: গানের জগতে আসার গল্পটা কী ছিল?
** হায়দার হোসেন: গানের জগতে আসা নিয়ে আমার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না। নিজের একান্ত আগ্রহেই সঙ্গীতচর্চা শুরু করি। আমার বাবা সৈয়দ মো. আশিক হোসেন খুব ভালো সেতার বাজাতেন। বলতে পারেন আমি আমার পরিবারের একমাত্র ব্যক্তি যিনি পারিবারিক প্রথা ভেঙে নিজেকে মিউজিশিয়ান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছি।
* যুগান্তর: প্রথম কোন বাদ্যযন্ত্র বাজিয়েছেন?
** হায়দার হোসেন: রাবার ব্যান্ড কাঠিতে গেঁথে গিটারের মতো একটি যন্ত্র তৈরি করেছিলাম। সেটাই বাজাতাম। যদি ছিঁড়ে যেত আরেকটি বানিয়ে বাজাতাম। একটা সময় অনেকগুলো চায়ের কাপ একসঙ্গে করে সেগুলোতে টুংটাং সুর তুলতাম। ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় নেশা ধরল বাঁশির। সেটাই তখন আমার ধ্যান-জ্ঞান হয়ে গেল। তারপর সস্তা দামের একটি গিটার কিনে ফেললাম। সেই থেকে শুরু। এখনও গিটারের সঙ্গে আছি। যত দিন বেঁচে আছি গিটারকে আগলে রাখব।
* যুগান্তর: কিন্তু আপনার পেশা তো ছিল ভিন্ন...
** হায়দার হোসেন: আমি ছিলাম মিস্ত্রি। প্লেনের মিস্ত্রি। এয়ারফোর্সে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করি। মিউজিক পেশায় আছি ১৯৭৯ সাল থেকে। আমি তো একজন প্লে-ব্যাক মিউজিশিয়ান। মানে আমি গিটার বাজাতাম। বেশিরভাগ সময় ফিল্মের গানে বাজাতাম। আমি তখন কাজ করতাম বিখ্যাত সুরকার আলম খানের সঙ্গে। এরপর বাজাতাম পপগুরু আজম খানের সঙ্গে। এখন ব্যবসা করি। মানুষের জীবনে যথেষ্ট সময় থাকে। সময়কে ঠিকঠাক ব্যবহার করতে জানলে সবই একসঙ্গে করা সম্ভব।
* যুগান্তর: জীবনমুখী গান করেন কেন?
** হায়দার হোসেন: গানের সঙ্গে যখন থেকে পথ চলতে শুরু করি, তখন থেকেই নিজের গানকে গতানুগতিক ধারা থেকে আলাদাভাবে উপস্থাপন করছি। সমাজের বিভিন্ন রকম ঘাটতি আমার চোখে পড়ে। মানুষের অসহায়ত্ব বিবেককে নাড়া দেয়। মানুষের জন্য কিছু করার সার্মথ্য আমার নেই, মানুষকে দিতে পারি শুধু গান! জীবনের প্রতি মানুষের ভালোবাসা থেকেই আসলে এ ধরনের বক্তব্যধর্মী গান গাই।
* যুগান্তর: রোমান্টিক গানে আপনাকে খুব দেখা যায় না কেন?
** হায়দার হোসেন: একেবারেই যে করিনি তা কিন্তু নয়। অনেকেই তো এ ধরনের প্রেমের গান করছে। আমি না হয় একটু অন্য পথেই গেলাম। নিজের গাওয়া ‘একটু মিনতি রাখ নয়নে নয়ন মোর’ এবং ‘মন কি যে চায় বল, যারে দেখি লাগে ভাল’ প্রেমের গান দুটি আমার পছন্দের। তবে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্য পাই না প্রেমের গান গাইতে। আমার সব সময় মনে হয় এই গানগুলো আমার সঙ্গে ঠিক যায় না।
* যুগান্তর: শিল্পীদের অনলাইন-নির্ভরতাকে কীভাবে দেখছেন?
** হায়দার হোসেন: আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। এখন কিরকম গান হচ্ছে, কিংবা কারা গান করছে এসব বিষয়েও আমি আসলে খবর খুব একটা রাখি না। যখন কোনো স্টেজে যাই কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে যাই তখন এসব বিষয় শুনি। তবে এটা বলব ভালো কাজ মানুষ গ্রহণ করবেই। এটা অনলাইন হোক আর অফলাইনে হোক।
* যুগান্তর: নতুন যারা গান করছে তাদের জন্য উপদেশ কী?
** হায়দার হোসেন: সৎ থাকতে বলব। নকল করা থেকে দূরে থাকতে বলব। নিজেরা মৌলিক কিছু করুক এটাই প্রত্যশা করি।