
প্রিন্ট: ৩১ মার্চ ২০২৫, ১০:৪০ পিএম
দ্রুত সম্প্রসারণের পথে বৈশ্বিক মোবাইল অ্যাপ বাজার

আইটি ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০২৫, ১১:১০ এএম

ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন
বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তির অগ্রযাত্রা মোবাইল অ্যাপ শিল্পকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রিসিডেন্স রিসার্চের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে মোবাইল অ্যাপ মার্কেটের আকার ৩৩ হাজার ৬১ কোটি ডলারে পৌঁছাবে এবং ২০৩৪ সালের মধ্যে এটি ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
এ বিশাল প্রবৃদ্ধির পেছনে মূল কারণ হলো, স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং অ্যাপ-ভিত্তিক পরিষেবার প্রতি ক্রমবর্ধমান নির্ভরতা। ২০২৪-২০৩৪ সালের মধ্যে মোবাইল অ্যাপ মার্কেটের বার্ষিক গড় প্রবৃদ্ধি (CAGR) হবে ১৪.৩৩ শতাংশ, যা প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে বিস্তৃতি
বিশ্বব্যাপী মোবাইল অ্যাপ বাজারের একটি বড় অংশ, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের দখলে রয়েছে। ২০২৩ সালে এ অঞ্চলের অ্যাপ মার্কেটের আকার ছিল ৯ হাজার ৫৪৩ কোটি ডলার, যা ২০৩৪ সালে ৩৬ হাজার ৯৬৭ কোটি ডলারে পৌঁছানর সম্ভাবনা রয়েছে। চীন অ্যাপ ডাউনলোডের ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে, আর ভারত দৈনিক ব্যবহারে এগিয়ে আছে।
সাশ্রয়ী ডাটা প্ল্যান, সরকারি নীতিগত সহায়তা এবং ইন্টারনেট সুবিধার সহজলভ্যতার কারণে, এ অঞ্চলের অ্যাপ ইকোসিস্টেম দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে। বিশেষ করে, ই-কমার্স, মোবাইল পেমেন্ট এবং অনলাইন গেমিং অ্যাপগুলোর চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এআই ও মোবাইল অ্যাপের ভবিষ্যৎ
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ও মেশিন লার্নিং (ML) মোবাইল অ্যাপকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করছে। অও-চালিত অ্যালগরিদম ব্যবহারকারীর আচরণ বিশ্লেষণ করে তাদের জন্য কাস্টমাইজড অভিজ্ঞতা প্রদান করছে। উদাহরণস্বরূপ, চ্যাটবট ও ভয়েস-অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রাহকসেবা আরও উন্নত হচ্ছে। এ ছাড়া অও-ভিত্তিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে সাইবার হুমকি হ্রাস পাচ্ছে, যা ব্যবহারকারীদের জন্য নিরাপদ ডিজিটাল অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করছে। ভবিষ্যতে, Augmented Reality (AR) এবং Virtual Reality (VR) প্রযুক্তির সংযোজন অ্যাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরও নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।
মোবাইল গেমিং ও বিনোদন শিল্পের প্রভাব
বিশ্বব্যাপী মোবাইল অ্যাপ বাজারের অন্যতম বড় অংশজুড়ে রয়েছে মোবাইল গেমিং অ্যাপস। বিশেষ করে উত্তর আমেরিকার বাজারে ইন-অ্যাপ কেনাকাটা ও পুরস্কারভিত্তিক মডেলের কারণে মোবাইল গেমিং অত্যন্ত লাভজনক খাতে পরিণত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এ ক্ষেত্রে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে, যেখানে অ্যাপল, গুগল এবং মাইক্রোসফটের মতো প্রযুক্তি জায়ান্টদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। ডিজিটাল বিনোদন শিল্পের বিকাশও মোবাইল অ্যাপ বৃদ্ধির অন্যতম চালিকা শক্তি। ভিডিও স্ট্রিমিং, অন-ডিমান্ড কন্টেন্ট এবং সংগীত স্ট্রিমিং অ্যাপগুলোর চাহিদা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
ভবিষ্যতের দিকনির্দেশনা
মোবাইল অ্যাপ বাজারের এ অভূতপূর্ব সম্প্রসারণ নতুন উদ্ভাবনের পথ সুগম করছে। ৫জি প্রযুক্তির প্রসার, ক্লাউড-ভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন এবং ব্লকচেইন নিরাপত্তার উন্নয়ন এ খাতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। সার্বিকভাবে, মোবাইল অ্যাপ শিল্পের এ অগ্রযাত্রা বিশ্ব অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হিসাবে কাজ করবে। প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এ খাত আগামী এক দশকে আরও ব্যাপক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাবে।