মাইক্রোসফট-নাসার যৌথ চ্যাটবট
মহাবিশ্বের নানা অজানা তথ্য উদঘাটনে যেভাবে কাজ করবে এই প্রযুক্তি
আইটি ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৯ এএম
ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা ও মাইক্রোসফট নতুন এআই চ্যাটবট আনার লক্ষ্যে জোট বেঁধেছে। ‘আর্থ কোপাইলট’ নামের এ চ্যাটবটটি দিয়ে পৃথিবী সম্পর্কে বিভিন্ন বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য সহজেই খুঁজে পাওয়া যাবে। এমনকি এর মাধ্যমে আমাদের গ্রহ সম্পর্কে বিভিন্ন এমন প্রশ্নের জবাব মিলবে, যেখানে নাসা’র বিস্তৃত স্থানভিত্তিক তথ্যকে ‘সহজে বোঝা যায়’ এমন জবাবে রূপান্তর করবে চ্যাটবটটি। এআই টুলটি বানাতে নিজেদের তথ্যভান্ডারের সঙ্গে এআই প্রযুক্তির মেলবন্ধন ঘটাতে যাচ্ছে নাসা।
বহু বছর ধরে পর্যবেক্ষণ স্যাটেলাইট ব্যবহার করে পৃথিবী সম্পর্কে বিপুল পরিমাণ ডেটা বা তথ্য সংগ্রহ করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন, দাবানল ও আবহাওয়াসহ আরও অনেক তথ্য সংগ্রহ করে স্যাটেলাইটগুলো। তবে এত বিশাল পরিমাণ ডেটা বিশ্লেষণ করা অনেকটা সময়সাপেক্ষ এবং শ্রমসাধ্য কাজ। তাই ডেটাগুলো বিশ্লেষণে ও সর্বসাধারণের কাছে সহজভাবে পৌঁছে দিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই চ্যাটবট ব্যবহার করবে নাসা।
নাসা মাইক্রোসফটের নতুন এআইভিত্তিক চ্যাট টুলটি বিশেষভাবে ভূস্থানিক স্যাটেলাইট চিত্র এবং ডেটা অ্যাকসেস করার প্রক্রিয়া সহজ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এটি ব্যবহার করে উপকৃত হবে বিজ্ঞানী ও শিক্ষার্থীরা।
বর্তমানে কেবল কিছু নির্দিষ্ট গবেষক এবং বিজ্ঞানীই এ ডেটার অর্থ বের করতে পারে। তবে আর্থ কোপাইলট অগণিত ব্যবহারকারীর কাছে তথ্য পৌঁছে দেবে। আগ্রহী ব্যক্তিরা সরলভাবে প্রশ্ন করে টুলটির সঙ্গে কথোপকথন করতে পারবে। বিষয়টি চ্যাটজিপিটি বা অন্যান্য জেনেরেটিভ-এআই চ্যাট টুল ব্যবহারের মতোই।
ব্যবহারকারীরা সহজেই একে প্রশ্ন করতে পারবেন বলে ধারণা করছে মাইক্রোসফট। যেমন : ‘সানিবেল দ্বীপে হারিকেন ইয়ানের প্রভাব কী ছিল?’ বা ‘কোভিড-১৯ মহামারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বায়ুর গুণমানকে কীভাবে প্রভাবিত করেছিল? এরপর আর্থ কোপাইলট সংশ্লিষ্ট ডেটা সেটগুলোতে গভীরভাবে অনুসন্ধান করবে এবং উত্তর দেবে। এ উত্তর ডেটাগুলো চাইতে সহজে বোঝা যাবে।
নাসার ‘আর্থ সায়েন্স ডেটা সিস্টেম প্রোগ্রাম’ মহাকাশে থাকা সেন্সর এবং যন্ত্র থেকে বিপুল পরিমাণ ডেটা সংগ্রহ করে। মাইক্রোসফট চ্যাটবটটি সম্পর্কে বলছে, এ ডেটা সবকিছু অন্তর্ভুক্ত করে, বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থান থেকে শুরু করে ভূমির পরিবর্তন, মহাসাগরের তাপমাত্রাসহ আরও অনেক কিছু। তবে এ তথ্যের বিশাল পরিমাণ এবং জটিলতা অনেক সময় বিভ্রান্তিকর হয়ে উঠতে পারে। এসব তথ্য বোঝার জন্য টেকনিক্যাল ইন্টারফেসে নেভিগেট করার ক্ষমতা, ডেটা ফরম্যাট বোঝার এবং জিওস্প্যাটিয়াল বিশ্লেষণের জটিলতা আয়ত্ত করার মতো দক্ষতা সবার থাকে না। এআই এ প্রক্রিয়াটিকে সহজ করতে পারে। পৃথিবীর ডেটা থেকে কয়েক সেকেন্ডে অন্তর্দৃষ্টি পেতে পারবেন।
বর্তমানে চ্যাটবটটির তার নিরাপত্তা এবং নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করার জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করেছে নাসার বিজ্ঞানী এবং গবেষকরা। এই চ্যাটবটের মাধ্যমে পৃথিবী সংক্রান্ত ডেটা অনুসন্ধান, আবিষ্কার এবং বিশ্লেষণ করা ব্যবহারকারীদের জন্য সহজ হয়ে যাবে।