৫ কোটি টাকার ‘ডেভেলপমেন্ট অফ স্পেল এন্ড গ্রামার এরর চেকার’
বাজেট কোনোভাবেই অতিরিক্ত নয়: রিভ সিস্টেমস

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২০, ০১:৪৯ পিএম

সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের অধীনস্থ বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) ‘গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ’ প্রকল্পের ‘ডেভেলপমেন্ট অফ স্পেল এন্ড গ্রামার এরর চেকার’ নিয়ে যুগান্তরে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে রিভ সিস্টেমস। প্রতিষ্ঠানটি দাবি করছে- এই প্রোজেক্টের বাজেটটি কোনোভাবেই অতিরিক্ত নয় বরং খুবই প্রতিযোগিতামূলক।
যুগান্তর অনলাইনে ‘স্পেল অ্যান্ড গ্রামার এরর চেকার’ বিষয়ক প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে রিভ সিস্টেমসের বক্তব্য
গত ২১ জানুয়ারি যুগান্তর অনলাইনে “৫ কোটি টাকার ‘স্পেলিং চেকার’ নিয়ে বুয়েট ও রিভ সিস্টেমসের হরিলুট” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। উক্ত প্রতিবেদনে বেশ কিছু ভিত্তিহীন তথ্য এবং রিভ সিস্টেমসের সিইও’র কিছু অসম্পূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের শিরোনামে প্রকল্পের নাম ‘স্পেলিং চেকার’ উল্লেখ করা হয়েছে। মূলত প্রকল্পের সঠিক নাম হল ‘ডেভেলপমেন্ট অফ স্পেল এন্ড গ্রামার এরর চেকার’।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই প্রকল্পটির সঙ্গে বিনামূল্যের বিভিন্ন সফটওয়্যারের শুধুমাত্র স্পেল চেকার-এর সঙ্গে তুলনা করে এর বাজেট বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। রিভ সিস্টেমস পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস ২০০৮ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট ২০০৬-এর যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে টেন্ডারে অংশগ্রহণের মাধ্যমে কিউসিবিএস পদ্ধতিতে সর্বোচ্চ স্কোর অর্জন করে প্রোজেক্টটি পেয়েছে।
বিনামূল্যের বিভিন্ন সফটওয়্যারে স্পেলিং চেকার রয়েছে কিন্তু গ্রামার এরর চেকার এবং কন্টেক্সচুয়াল (প্রকাশিত সংবাদে ‘কনফ্লিকচুয়াল লেখা হয়েছে) এরর চেকার সেখানে নেই। এটি অত্যন্ত জটিল একটি প্রক্রিয়া এবং এতে মেশিন লার্নিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারের জন্য বড় বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে এই প্রোজেক্টের বাজেটটি কোনোভাবেই অতিরিক্ত নয় বরং খুবই প্রতিযোগিতামূলক। এ প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে রিভ সিস্টেমসের সিইও আজমত ইকবালের পূর্ণ বক্তব্য প্রকাশ না করে বিশেষ একটি অংশ তুলে ধরা হয়েছে যা তাঁর বক্তব্যের সঠিক ব্যাখ্যা প্রদান করে না।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ‘বাংলা প্রজেক্ট নিয়ে রিভ সিস্টেমসের পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই’। কিন্তু পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস ২০০৮ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট ২০০৬-এর সকল ধারা মেনেই রিভ সিস্টেমস নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে কাজটি পেয়েছে।
প্রতিবেদনে প্রকাশিত ‘বিসিসি বা মন্ত্রণালয়কে বোকা বানিয়ে রিভ সিস্টেমস এবং বুয়েট সিন্ডিকেট অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের কাজ করার সুযোগ দেয়া হয়নি’ তথ্যটি সম্পূর্ণ অসত্য এবং ভিত্তিহীন। এই প্রকল্পে রিভের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাতত্ত্ব বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগ কাজ করছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয় ‘বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) রিভ সিস্টেমসের টেন্ডার বানানোর কাজ করছে।’ এটি পুরোপুরি অসত্য তথ্য। টেন্ডারের সকল কাগজপত্র রিভ সিস্টেমস নিজেই প্রস্তুত করেছে এবং যথাযথ সরকারি প্রক্রিয়া মেনেই প্রকল্পটির দায়িত্ব পেয়েছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয় ‘কয়েকবার এসব বিষয় প্রমাণিত হয় বুয়েটের অনেক শিক্ষক রিভ সিস্টেমসের সঙ্গে প্রকাশ্যে কাজ করছেন।’ এই ক্ষেত্রে প্রকৃত বিষয় এই যে, প্রকল্পের সফটওয়্যারটি টেস্ট করার দায়িত্ব বুয়েট এর সিএসই বিভাগের। সেহেতু প্রকল্পটির অধীনে সফটওয়্যার টেস্টের জন্য বুয়েটের শিক্ষকবৃন্দ কাজ করছেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘ইতিমধ্যেই সাড়ে ১৪ কোটি টাকার কাজ সফলভাবে রিভ সিস্টেমসকে দিতে সক্ষম হয়েছে বুয়েট।' অথচ এই ক্ষেত্রে প্রকৃত বিষয় হচ্ছে বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত মূল্যায়ন কমিটি টেন্ডারের মূল্যায়ন করে থাকে এবং বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল কার্যাদেশ দিয়ে থাকে।
‘গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধকরণ’ প্রকল্পটি বাংলা ভাষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এবং ‘ডেভেলপমেন্ট অফ স্পেল এন্ড গ্রামার এরর চেকার’ এর একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। সকল প্রক্রিয়া মেনে কাজটি পেয়ে রিভ সিস্টেমসের এখন লক্ষ্য হল সঠিক সময়ে একটি মানসম্মত কাজ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা।