Logo
Logo
×

আইটি বিশ্ব

গণবিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভাবন

নিজেই সব কাজ করতে পারে রোবট ‘মিরা’

Icon

আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০১৯, ১১:৫৩ পিএম

নিজেই সব কাজ করতে পারে রোবট ‘মিরা’

সাভার গণবিশ্ববিদ্যালয়ে রোবট ‘মিরা’ উদ্ভাবন। ছবি: যুগান্তর

সাভার গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষার্থী রোবট ‘মিরা’ উদ্ভাবন করেছেন। এ রোবটটি নিজে নিজেই সব কাজ করতে পারে। এ ছাড়া মানুষের সঙ্গে কথা বলা, বিভিন্ন জটিল প্রশ্নের উত্তর দেয়া, ভার্চুয়াল কাজে সহযোগিতা করে রোবটটি। 

গণবিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের ২০তম ব্যাচের শেষ বর্ষের ৬ শিক্ষার্থী ৪৭ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রায় আড়াই মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করে রোবটটি উদ্ভাবন করেছেন। 

রোবটটি উদ্ভাবন করার পর প্রথমে নিজ বিভাগে প্রদর্শন করা হয়েছে। তারা গণবিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী। 

প্রায় ৪৭ হাজার টাকা (আনুমানিক) ব্যয়ে নির্মিত রোবটটির নাম দেয়া হয়েছে ‘মিরা’ (মোবাইল অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্ট রোবট ফর অ্যাডভান্সড অ্যাসিস্ট্যান্স)।

নিজ বিভাগ থেকে দেয়া প্রজেক্টের আওতায় রোবট মিরার উদ্ভাবক সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থীরা হলেন- মোহাম্মদ রিফাত (দলনেতা), মাহতাবুর রহমান সবুজ, মাহমুদা আক্তার নিঝুম, মারুফ হোসেন, সাফিক হাসান ও শারমিন নাহার তোহফা। 

জানা যায়, বিভাগের প্রভাষক রোয়িনা আফরোজ অ্যানির অধীনে চলতি বছরের ২০ জুলাই রোবটটির কাজ শুরু করে। প্রায় আড়াই মাসের অক্লান্ত পরিশ্রমে তৈরিকৃত হিউম্যানয়েড (মানুষের মতো গঠন আকৃতি) রোবটটি গত বৃহস্পতিবার নিজ বিভাগে প্রদর্শন করা হয়।

রোবটটি তৈরিতে বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রামিং কোড ব্যবহার করা হয়েছে যেমন- জাভা, পাইথন, এআইএমএল, ডট কনফ এবং কোডের সর্বমোট দৈর্ঘ্য আনুমানিক প্রায় ১২ থেকে ১২ হাজার লাইন। 

বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন নিরিবিলি ফাল্গুনি হাউজিংয়ের ল্যাবে রোবটটি তৈরির যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হয়। রোবটটি তৈরিতে অসামান্য অবদান রাখেন উজ্জল সরকার ও মাসুদ রানা নামের সংশ্লিষ্ট দুই ব্যক্তি।

রোবটটির প্রাণ বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে গ্রুপের সদস্য মাহতাবুর রহমান সবুজ বলেন, এটি মূলত পোর্টেবল ও অটোমেটেড অর্থাৎ বাইরের নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই পূর্ণ কাজ করতে সক্ষম। সফটওয়্যার চালুর পর এটি নিজে নিজেই সব কাজ করতে পারে। 

রোবটের আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং মেশিন লার্নিং ক্যাপাবিলিটি তাকে বাইরের নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই কাজ করার সক্ষমতা দিয়েছে। পূজার ছুটি শেষে আগামী ১২ অক্টোবর (সম্ভাব্য) রোবটটি ক্যাম্পাসে সবার জন্য প্রদর্শন করা হবে।

অসামান্য এই উদ্ভাবনের বিষয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. করম নেওয়াজ বলেন, শিক্ষার্থীদের এই অভাবনীয় সাফল্যে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত এবং গর্ববোধ করছি। এটি একটি অত্যাধুনিক রিসার্চ ওয়ার্ক। 

বিভাগ থেকে আমরা নিয়মিত ৮ম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের গ্রুপ করে বিভিন্ন প্রজেক্টের কাজ দিয়ে থাকি। এসব কাজ করার মাধ্যমে তারা হাতে-কলমে শিখতে পারে, যেটা তাদের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।

গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম তৈরিকৃত এই রোবটটি মানুষের সঙ্গে কথা বলা, জটিল প্রশ্নের উত্তর দেয়াসহ বিভিন্ন ভার্চুয়াল ও শারীরিক কাজে সক্ষম। 

ভার্চুয়াল কাজের মধ্যে ইমেইল পাঠানো, পছন্দের গান বাজানো, নির্দিষ্ট কাজের কথা মনে করিয়ে দেয়া (রিমাইন্ডার), সময় ও তারিখ জানানো, ফেসবুকের নোটিফিকেশন চেক করা, আগাম পূর্বাভাস দেয়া ইত্যাদি কাজ করতে পারে। 

শারীরিক কাজের মধ্যে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি যেমন হ্যান্ডশেক বা হাই ফাইভ করা, কাজের সময় কফির কাপ ধরে রাখা, জোকস শোনানো, রক পেপার সিজার খেলা ইত্যাদি কাজে সক্ষম। 

এ ছাড়া রোবটটি যাদের সঙ্গে কথা বলবে, তাদের ব্যক্তিগত তথ্য মনে রাখতে পারবে এবং ওই তথ্যের ভিত্তিতে পরে কথোপকথন করতে পারবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম