অনুষ্ঠিত হলো এন্টারপ্রাইজ সামিট ২০১৯
ব্যাংকে অটোমেশন প্রযুক্তি দেশকে ডিজিটালাইজেশনে সাহায্য করবে
আইটি ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০১৯, ০১:৫০ পিএম
ব্যাংকে অটোমেশন প্রযুক্তি দেশকে ডিজিটালাইজেশনে সাহায্য করবে
ব্যাংকিং খাতে ক্রেতা সেবায় পুনরাবৃত্তিমূলক কাজে রবোটিক্স প্রসেস অটোমেশন বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি সংযুক্ত সফটওয়্যারের ব্যবহার নিশ্চিত করবে সুলভে আধুনিক ক্রেতা সেবা। এন্টারপ্রাইজ বিজনেসখাতে অটোমেশন জনপ্রিয়করণে এবং দেশীয় ব্যাংকিং খাতের সেবার মান উন্নয়নে আরপিএ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেন এন্টারপ্রাইজ সামিট-২০১৯ আগত বক্তারা।
শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে অনুষ্ঠিত হলো এন্টারপ্রাইজ সামিট-২০১৯। প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত এই সামিট যৌথভাবে আয়োজন করেছে সিটিও ফোরাম বাংলাদেশ এবং ইউআই প্যাথ।
সামিটে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসেন আরা বেগম। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউশনের মহাব্যবস্থাপক জনাব সুশান্ত কুমার সাহা, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থ প্রতিম দেব, টেলিযোগাযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. মহসিনুল আলম, এলআইসিটি প্রকল্পের প্রকল্প প্রধান রিজাউল করিম এবং ইউআই প্যাথের রিজিওনাল ম্যানেজার শুভ্রাংশু মুর্খাজী। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সিটিও ফোরামের সভাপতি তপন কান্তি সরকার।
স্বাগত বক্তব্য তপন কান্তি সরকার বলেন, দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতে সংশ্লিষ্ট তথ্যপ্রযুক্তিবিদদের মেধা ও যোগ্যতার উন্নয়ন এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে তাদের ব্যক্তিগত উন্নয়নসহ আইসিটি শিল্পে উন্নয়নে কাজ করছে সিটিও ফোরাম বাংলাদেশ। ইউপ্যাথ বিশ্বে প্রথম সারির প্রতিষ্ঠান যারা মেশিনে লার্নিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন সফটওয়্যার বা আরপিএ মত ইনোভেটিভ সল্যুশান সেবা নিয়ে কাজ করে।
ইনোভেটিভ এই উদ্ভাবন প্রয়োগের মাধ্যমে এন্টারপ্রাইজ পর্যায়ে অটোমেশন অনেকটাই সহজ। ব্যাংকিং খাতে ক্রেতা সেবা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেখানে কর্মকর্তা কর্মচারীরা যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। এ কাজগুলো সাধারণত পুনরাবৃত্তিমূলক হলেও এই সেবা নিশ্চিতকরন ব্যয়বহুল এবং সময় সাপেক্ষ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তপন কান্তি সরকার বলেন, এ ধরনে সেবা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তথ্য প্রদানমূলক, তাই এতে ভুল হবার ঝুঁকিও থাকে। এ সেবা প্রদানে রবোটিক্স প্রসেস অটোমেশন লার্নিং এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন সফটওয়্যার বা আরপিএ ব্যবহারের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে আমাদের দেশে।
এই উন্নত সেবা প্রদানে ইউআই প্যাথ বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় প্রতিষ্ঠান, তাই আমরা তাদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি আমাদের দেশে এন্টারপ্রাইজ সল্যুশন হিসাবে এই সেবায় পরিচয় করিয়ে দিতে। আমরা বিশ্বাস করি, এই প্রযুক্তি সেবা অটোমেশনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের মাধ্যমে দেশকে ডিজিটালাইজেশনে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে।
অনুষ্ঠানে মুল বক্তব্য পেশ করেন ইউআই প্যাথের সিনিয়র সেলস ডিরেক্টর অংশুমান রায়। বক্তব্যে তিনি বলেন, ব্যবসায়িক খাতে সেবায় ক্রেতা সন্তুষ্টি গুরুত্বপূর্ণ, তাই ক্রেতাসেবাকে সকল এন্টারপ্রাইজ গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। এ খাতে ব্যয়ের পরিমাণও তুলনামূলক ভাবে বেশি; সেখানে কর্মচারীর সম্পৃক্ততাও বেশি। কিন্তু কাজগুলো পুনরাবৃত্তিমূলক, যা করতে যথেষ্ট সময় ব্যয় হয়।
এই কাজগুলোকে সহজ এবং সাশ্রয়ী করতেই মেশিন লার্নিং প্রযুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সংযুক্তিতে সফটওয়্যার সেবা উদ্ভাবন করছে ইউআইপ্যাথ যা আরপিএ নামে পরিচিত। এই সফটওয়্যারটি মূলত মেশিন লার্নিং এবং রবোটিক্সের মাধ্যমে পুনরাবৃত্তিমূলক কাজগুলোকে আরও স্বংক্রিয়, সহজ ও সাশ্রয়ীভাবে সম্পন্ন করতে সাহায্য করে।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে জনপ্রিয়তা পেয়েছে মেশিন লার্নিং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ রবোটিক্স প্রযুক্তি, যা এন্টারপ্রাইজ সমূহকে অটোমেশনে উৎসাহিত করছে। অটোমেশন সেবা প্রচলন ব্যয়বহুল মনে হলেও এর প্রচলনে এন্টারপ্রাইজ সমূহের মানসিক আগ্রহই জরুরী। সারা বিশ্ব এখন এই অটোমেশনে আগ্রহী এ ক্ষেত্রে এর প্রয়োগে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ফলাফল পাওয়া যাবে ব্যাংকিং সেবায়।
ব্যাংকিং সেবায় এর সম্ভাবনার কথা উল্লেখ তিনি বলেন, একই ধরনের কাজ বারবার করতে মানুষের মেধার এবং শক্তির পরিবর্তে আরপিএ দিতে পারবে সহজ এবং অভিনব সমাধান। বক্তব্যে তিনি ব্যাংকিং সেবার বিভিন্নখাতে আরপিএ প্রযুক্তি কিভাবে ভ্যালু সংযোগ করতে পারে তার বর্ণনা দেন।
অনুষ্ঠানে আরপিএ সেবা ব্যবহারকারী হিসাবে অভিজ্ঞতার বর্ণনা করেন এক্সপো গ্রুপের হেড অফ অটোমেশন এবং সিকিউরিটি বিভাগের প্রধান ফয়সাল মোহাম্মদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হোসনে আরা বেগম বলেন, বাংলাদেশ এখন ডিজিটাল রূপান্তরের পথে যেখানে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সেবার প্রয়োগ এবং ব্যবহারে আমরা উৎসাহী। এক্ষেত্রে ব্যাংকিং সেক্টরে কর্মরত প্রযুক্তি কর্মকর্তারা অগ্রগামী ভূমিকা রাখতে পারে কারণ প্রাতিষ্ঠানিক বা অবকাঠামোগতভাবে ব্যাংকিংখাত নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহারে সহজে এগিয়ে আসতে পারে।
তিনি বলেন, প্রযুক্তির এ যুগে দেশের বাজারে এ ধরনের প্রযুক্তিকে পরিচয় করে দেয়ার জন্য সিটিও ফোরামের এই আয়োজনকে আমি সাধুবাদ জানাই এবং বিশ্বাস করি দেশের ব্যাংকিং খাতে এই প্রযুক্তির প্রয়োগের তারা উৎসাহিত হবেন। কেননা এভাবে প্রতিটি শিল্পখাত যদি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে উৎসাহিত হয়। তবে এর সুফল ভোগ করতে দেশের সকল জনগণ এবং শিল্পখাত সমূহের উন্নয়নে বাংলাদেশর এগিয়ে যাবে বিশ্ব প্রতিযোগিতায়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউশনের মহাব্যবস্থাপক সুশান্ত কুমার সাহা, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থ প্রতিম দেব, টেলিযোগাযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. মহসিনুল আলম, এলআইসিটি প্রকল্পের প্রকল্প প্রধান জিয়াউল হাসান এবং ইউআই প্যাথের রিজিওনাল ম্যানেজার শুভ্রাংশু মুর্খাজীসহ সিটিও ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড.এজাজুল ইসলাম।
সামিটে ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হতে দুই শতাধিক প্রযুক্তিবিদ এবং প্রযুক্তি কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।