
সেলফি। প্রতীকী ছবি (সংগৃহীত)
এগিয়ে চলেছে প্রযুক্তি। একই সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে প্রযুক্তিনেশা। এ নেশায় বুদ হয়ে পড়ছে তরুণ প্রজন্ম। বর্তমান বিশ্বে আসলে সেলফি তোলাটা রীতিমতো ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সেলফি নেশায় অকালে ঝড়ে গেছে অনেক তরুণ-তরুণীর প্রাণ।
শুধু সেলফি নয়, ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যার প্রবণতাও বেড়ে গেছে উদ্বেগজনক হারে।
যুব প্রজন্মের মধ্যে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া কঠিন, যা সেলফি তোলায় অনীহা রয়েছে। এখন স্মার্টফোন কেনার সময়ও এখন আগে দেখে নেয়া হয় সেলফি ক্যামেরার মান ঠিক কতটা উন্নত।
বিশ্বজুড়ে যেমন বেড়েছে সেলফির পাগলামো, এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দুর্ঘটনা।
গবেষণায় জানা গেছে, এখন হাঙরের আক্রমণের থেকেও সেলফি আসক্তি বেশি বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে!
সেলফির নেশায় দুর্গম এলাকায় প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সেলফি তুলতে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে অহরহ। কখনও ট্রেনে কাটা পড়েছেন তো কখনও গভীর জলে উলটে গিয়েছে বোট।
সম্প্রতি এক রিপোর্টে জানা গেছে, ২০১১ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৭ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বিশ্বে অন্তত ২৫৯ জন সেলফি তুলতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। এই সময়ে হাঙরের মুখে পড়ে মৃতু মাত্র ৫০ জনে।
এক সমীক্ষায় জানা গেছে, পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে সেলফি তোলার আসক্তি বেশি। তবে পুরুষরা আবার বেশি ঝুঁকি নিয়ে সেলফি তুলতে ভালবাসেন। ফলে জলে ডুবে, পথ দুর্ঘটনায় কিংবা খাদে পড়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বহুবার।
এর মধ্যে এগিয়ে রয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত। দেশটিতে সেলফি তুলতে ৮০ কোটিরও বেশি মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। সেখানে মৃত্যুর সংখ্যাও অনেক। তবে শুধু সেলফি নয়, গ্রুফি (একসঙ্গে অনেকজন ছবি) তুলতে গিয়েও দুর্ঘটনা ঘটিয়েছেন ভারতীয়রা।
এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনা ঠেকাতে ভারতের বিভিন্ন জায়গাকে ‘নো সেলফি জোন’ ঘোষণা করা হয়েছে। কেবলমাত্র মুম্বাইয়েই ১৬টি স্থান ‘নো সেলফি জোন’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।
শুধু সেলফি নয়, ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যার প্রবণতাও বেড়ে গেছে উদ্বেগজনক হারে। আত্মহত্যা করার আগে মোবাইলে সেই দৃশ্য ভিডিও রেকর্ডিং করার বিষয়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে ভারত। এখনও পর্যন্ত সেই সংখ্যাটা ১৫৯।
তবে শুধু ভারত নয়, এর বাইরে ব্রাজিল, ভিয়েতনাম, জার্মানি, তাইওয়ান, রাশিয়ায় সেলফি আসক্তি এখন এক আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।