Logo
Logo
×

সাহিত্য সাময়িকী

একজন ফিলিস্তিনি এবং ইসরাইলি বাবার সাক্ষাৎকার

Icon

মেজবাহ উদ্দিন

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

একজন ফিলিস্তিনি এবং ইসরাইলি বাবার সাক্ষাৎকার

ফিলিস্তিনি বাসাম আরামিন এবং ইসরাইলি রামি এলহানান বছরের পর বছর মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় লড়াই করে যাচ্ছেন। যারা মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাতে সন্তান হারিয়েছেন তাদের দল ‘দ্য প্যারেন্টস সার্কেল’ নামে একটি সংগঠনের সদস্য এবং তারা ঘনিষ্ঠ বন্ধু। প্রকৃতপক্ষে, তারা একে অপরকে ভাই হিসাবে উল্লেখ করেন, যদিও তারা উভয়েই এ অন্তহীন দ্বন্দ্বে সন্তান হারিয়েছেন। ১৯৯৭ সালের সেপ্টেম্বরে এলহানানের মেয়ে স্মাদার বন্ধুর সঙ্গে যখন একটি বই কিনতে যাচ্ছিলেন, তখন হামাসের আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী আক্রমণ করে। তার বয়স ছিল ১৪ বছর। আর ২০০৭ সালে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে পেছন থেকে ইসরাইলি সীমান্তরক্ষী পুলিশের চালানো গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হন আরামিনের ১০ বছর বয়সি মেয়ে আবির। সীমান্ত পুলিশ প্রাথমিকভাবে মেয়েটির (আবির) মৃত্যুর দায় অস্বীকার করলেও সিভিল কোর্টে ভিন্ন চিত্রই প্রমাণিত হয়েছিল। তবুও সন্দেহভাজন বন্দুকধারীকে কখনোই ফৌজদারি বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি। এসবের পরও ৭৩ বছরের এলহানান এবং ৫৫ বছরের আরামিন ঘৃণার কাছে আত্মসমর্পণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং তখন থেকেই ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ইসরাইলি দখলদারত্বের সমাপ্তি এবং পুনর্মিলন প্রচার করে চলেছেন-যে কারণে তাদের উভয়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত ‘বিশ্বাসঘাতক’ অভিযোগ তোলা হয়। দুজনে অনেক শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন এবং তাদের জীবনের গল্পগুলো ডকুমেন্টারি ফিল্ম এবং অনেক ভাষার বইতে বর্ণনা করা হয়েছে, অতিসম্প্রতি কলাম ম্যাককানের উপন্যাস ‘এপিরোগন’-এ এসেছে তাদের কথা। জার্মান সাপ্তাহিক ডের স্পিগেল-এ প্রকাশিত তাদের সাক্ষাৎকারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ এখানে তুলে ধরেছেন-মেজবাহ উদ্দিন

আরামিন, এলহানানান-আপনারা বলে আসছেন, আমরা একে অপরের সঙ্গে কথা না বললে এ চলমান পাগলামি থামবে না। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে যা ঘটেছে তার পর কি আপনাদের কাছে আর কোনো শব্দ অবশিষ্ট আছে?

আরামিন: এ নৃশংসতা বর্ণনা করা খুবই কঠিন। আমরা জানতাম, এ রকম কিছু ঘটবে। এটি কোনো বড় চমক নয়। কিন্তু আমরা মৃতের এ সংখ্যা বা এ ভয়ংকর হামলা, বিশেষ করে শিশু এবং মহিলাদের বিরুদ্ধে আশা করিনি। এগুলো যে কোনো পরিস্থিতিতে অযৌক্তিক।

কেন আপনি অবাক হননি?

আরামিন: মানুষ যুগ যুগ ধরে নিষ্ঠুর দখলদারত্ব সহ্য করতে পারে না। এ কারণেই আমি ইসরাইলিদের সব সময় বলেছি : এখনই আমাদের সঙ্গে শান্তি স্থাপন কর, যখন তোমরা শক্তিশালী এবং কোনো যুদ্ধ চলছে না। অন্যথায়, এটি একটি বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যাবে এবং কেউ আর মানবাধিকারের কথা চিন্তা করবে না। আমরা আগে থেকেই জানতাম, হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিককে মূল্য দিতে হবে।

আপনি কি বুঝতে পারেন কেন সারা বিশ্বের মানুষ এটা নিয়ে তর্ক করছে যে, হয় আপনাকে শুধুই ইসরাইলিদের সমর্থন করতে হবে অথবা শুধুই ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করতে হবে?

এলহানান: না, আমি এমনটা মনে করি না। এটি ফুটবল খেলা নয়, যেখানে আপনাকে আপনার দলকে সমর্থন করতে হবে এবং অন্য দলের বিপক্ষে থাকতে হবে। আমরা সব সময় বলি : ইসরাইলপন্থি বা ফিলিস্তিনপন্থি হবেন না। শান্তির পক্ষে হোন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে হোন। আজ যা ঘটছে তা রক্তস্নাত, কুৎসিত...

এ অন্তহীন দ্বন্দ্বে আপনারা প্রত্যেকেই একজন করে কন্যাকে হারিয়েছেন, স্মাদার এবং আবির। তবুও আপনারা পরস্পরের প্রতি ঘৃণা কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন কীভাবে?

এলহানান: এটি পারার একমাত্র উপায় হলো আপনি আপনার মেয়েকে আর দেখতে পাবেন না, এ সত্য উপলব্ধি করা। এবং আপনি যদি কথা না বলেন, তবে সহিংসতার এ অন্তহীন চক্র থামবে না। এটি খুব কঠিন, কিন্তু এটি সম্ভব। এটি যে সম্ভব তার প্রমাণ আমরা। আমাদের সংগঠন ‘দ্য প্যারেন্টস সার্কেল’র ৬০০ সদস্য প্রতিদিন এটি প্রমাণ করছি।

আপনার মেয়ের মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী তাদের ক্ষতি বা এমনকি হত্যা করতে চাননি?

এলহানানান: আমি কোনোভাবেই হিংস্র নই। আমি খুব, খুব, খুব রাগান্বিত ছিলাম। আমি সবচেয়ে বেশি সেই পরিস্থিতির জন্য রাগান্বিত ছিলাম, যার কারণে একটি নিষ্পাপ, ১৪ বছর বয়সি মেয়ে মারা গিয়েছিল। সে কোনো সৈনিক ছিল না। সে এ সংঘর্ষের কোনো অংশ ছিল না। প্রকৃতপক্ষে, যখন স্মাদার বয়স আট বছর, সে ইসরাইল এবং মিসরের রাষ্ট্রপতিদের কাছে একটি চিঠি লিখেছিল-যাতে তারা একসঙ্গে বসে পুনর্মিলন করতে পারে। তাকে হারানো আমাকে এমন বেদনায় ভরিয়ে দিয়েছে, আপনি তা বর্ণনা করতে পারবেন না।

আপনি জেলে হিব্রু শিখেছেন। সেসব কি আপনার মেয়ের মৃত্যুর জন্য আপনাকে প্রস্তুত করেছিল?

আরামিন: এটি আমাকে কষ্ট এবং রাগের জন্য গ্রস্তুত করেনি। আমার রাগ আজ পর্যন্ত আছে। কিন্তু এটি আমাকে সেই ব্যক্তিকে দেখতে সাহায্য করেছিল যে, তাকে শিকারের মতো গুলি করেছিল-তার শিক্ষা, সমাজ এবং পেশার জন্য।

আপনি কি কখনো তার সঙ্গে দেখা করেছেন?

আরামিন: আমি চেয়েছিলাম, কিন্তু ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ তাকে আমার সঙ্গে কথা বলতে দেয়নি। আমি কেবল আদালতে তার সঙ্গে দেখা করেছি। আমি তাকে বললাম, আপনি বীর নন, আপনি শত্রুকে হত্যা করেননি, আপনি একটি নিষ্পাপ মেয়েকে হত্যা করেছেন। আপনি যদি সেজন্য গর্বিত হন, তবে আপনার অপরাধ উপভোগ করুন। কিন্তু আপনি যদি কখনো আমার কাছে ক্ষমা চাইতে আসতে চান, আমি আপনাকে ক্ষমা করে দেব এবং আমি তা আপনার জন্য নয়, আমার মেয়ে এবং আমার পরিবারের জন্য করব। আমার আরও পাঁচটি বাচ্চা আছে এবং আমি তাদের বড় হতে দেখতে চাই।

অনেক লোকই এমনভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে সক্ষম বা ইচ্ছুক হবে না।

আরামিন: আমার ভাই রামি সবসময় বলে: ভাগ্যিস, আমরা মানুষ। আমরা ভাবতে পারি। আমরা আরও কবর খননের পরিবর্তে সংলাপের জন্য সেতু নির্মাণের পথ বেছে নিতে পারি।

আপনারা দুজন একসঙ্গে হাজার হাজার স্কুলছাত্র, শোকাহত পরিবার, সৈন্য এবং এমনকি জঙ্গিদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কিন্তু তাদের প্রতিক্রিয়া সবসময় ইতিবাচক হয় না, তাই না?

এলহানান: অনেক সময় এটি খুব কঠিন হয়। একবার, ইসরাইলি স্কুলছাত্ররা আমাকে বলেছিল-এটি দুঃখের বিষয়, আমি আমার মেয়ের সঙ্গে বিস্ফোরিত হইনি। ফিলিস্তিনের একটি স্কুলে প্রধান শিক্ষক বাচ্চাদের বলেছিলেন আমার কথা না শুনতে, কারণ আমি স্বাধীনতার জন্য লড়াই করার ইচ্ছাকে দুর্বল করে দেব। যদিও আমরা এমন প্রতিক্রিয়াই আশা করি।

আপনারা কেন এমন প্রতিক্রিয়া আশা করেন?

এলহানানান: আমরা যখন উচ্চবিদ্যালয়ের ক্লাসে উঠি, তখন এটি একটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরির খোলা মুখে হাঁটার মতো ছিল। বেশিরভাগ বাচ্চারা কখনোই একজন ইসরাইলি এবং একজন ফিলিস্তিনিকে দেখেনি, যারা একে অপরের সঙ্গে লড়াই করছে না। আমরা দুটি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ এবং শোকাহত সমাজের মুখোমুখি, যা ঘৃণা ও হতাশায় পূর্ণ।

ইসরাইলিদের সঙ্গে যে কোনো যোগাযোগকে অনেক ফিলিস্তিনি দখলকে মেনে নেওয়ার সমতুল্য বলে মনে করে?

আরামিন: আমার লোকরা এটাকে স্বাভাবিকীকরণ বলে; কিন্তু কোনো স্বাভাবিকীকরণ হবে না; কারণ, আমরা কখনোই ইসরাইলি দখলদারত্ব মেনে নেব না, এমনকি আরও ৩০০০ বছর পরও। রামি আর আমি বন্ধু, কিন্তু আমরা সাধারণ বন্ধুদের মতো দেখা করতে পারি না। আমরা যখনই এবং যেখানেই যেতে চাই স্বাধীনভাবে যেতে পারি না; কারণ, অনেক জায়গায় চলাচলের স্বাধীনতা নেই। এটি নিয়ে কথা বলা মানে এটি মেনে নেওয়া নয়।

সাম্প্রতিক সময়ে বিপরীত ভাবনাই বেশি উন্নতি করেছে বলে মনে হচ্ছে। ইসরাইলের ইতিহাসে বর্তমানে সবচেয়ে ডানপন্থি সরকার রয়েছে। তবুও দুই রাষ্ট্রীয় সমাধানের পক্ষে আছেন এমন মানুষ দুই দিকেই বিরল হয়ে পড়ছে। এখানে বোঝানোর চেয়ে ঘৃণা বপন করা দৃশ্যত অনেক সহজ।

আরামিন: আমাদের ফিলিস্তিনিদের জন্য বর্তমান ইসরাইল সরকার নতুন কিছু নয়। তারা দখলদারত্ব, বসতি স্থাপন, বাড়িঘর ভাঙা, সবকিছু অব্যাহত রেখেছে। এটি ৭৫ বছর ধরে চলছে।

...সাবেক ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী এবং নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী, যাকে ১৯৯৫ সালে হত্যা করা হয়েছিল..

আরামিন: ...আমাদের কাছে তিনি একজন যুদ্ধাপরাধী ছিলেন। আমাদের অনেক মানুষের মৃত্যুর জন্য সে দায়ী। কিন্তু শেষ পর্যন্ত, আমরা তাকে শান্তির জন্য কাজ করা একজন যোদ্ধা হিসাবে বিবেচনা করেছি; কারণ, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে-আপনি চিরকাল অন্য জাতিকে দমিয়ে রাখতে পারবেন না।

এলহানানান: বাসাম সঠিক বলেছে। দখলদারত্বের ক্ষেত্রে, এ সরকারের সঙ্গে এর আগে আসা বামপন্থি সরকারের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। কিন্তু এ শেষ সরকার সব নিয়ম ভঙ্গ করেছে এবং আমাদের গণতান্ত্রিক সমাজে বিদ্যমান যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। এ সরকারের দিন শেষ হয়ে আসছে। নেতানিয়াহুকে যেতে হবে।

এ পুরো সংঘাত সবসময়ই একটি সশস্ত্র সংঘাত ছাড়াও শব্দের যুদ্ধ ছিল। রামি, আপনি কি হামাসকে সন্ত্রাসী দল বলবেন?

এলহানান: ওরা আমার মেয়েকে মেরেছে। তাদের প্রতি আমার কোনো সহানুভূতি নেই। তবে আপনাকে মনে রাখতে হবে, ইসরাইলি গোয়েন্দ সংস্থা পিএলও এবং ইয়াসির আরাফাতের ফাতাহ আন্দোলনের জন্যই হামাসকে তৈরি করতে সহায়তা করেছিল। তখন থেকেই হামাস ইসরাইলি রাজনীতির জন্য একটি দরকারি হাতিয়ার হয়ে উঠেছে।

ইসরাইলি সেনাবাহিনীর জন্য আপনার কথা কী, আরামিন?

আরামিন: ওরা আমার মেয়ের খুনি এবং আমার জন্য, একজন ফিলিস্তিনি হিসাবে, তারা এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর একটি। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি না যে, তাদের সৈন্যরা সবাই দানব বা সন্ত্রাসী।

এলহানানান: আমি ৬৭ সালে সেনাবাহিনীতে যোগদান করি। মিসরের বিরুদ্ধে ছয় দিনের যুদ্ধ, ইয়োম কিপপুর যুদ্ধ এবং লেবাননে যুদ্ধ করেছিলাম। তবুও, বাসাম এবং আমি আজ নিজেদের ভাই ডাকি।

তবে শুধু এ ভাই বলার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক এবং ভৌগোলিক সমাধান করা যাবে না।

এলহানান: আমাদের একটি রাজ্য বা দুটি রাজ্য বা ১০, ০০০ রাজ্য থাকতে পারে। আমাদের একটি কনফেডারেশন বা একটি ফেডারেশন থাকতে পারে, আমরা যেটাই পছন্দ করি। এটা আমাদের মূল ইস্যু হয়ে উঠলে, আমরা যে কোনো কিছু অর্জন করতে পারি। কারণ তখন, আমি আর তোমার দিকে তাকাচ্ছি না, আর তুমিও আমার দিকে তাকাচ্ছ না। আমি তোমাকে দখল করছি না এবং তুমিও আমার বাধ্য না। স্বীকার করি যে, এ বিন্দুতে পৌঁছানো খুব কঠিন হবে।

কী আপনাকে সেই বিন্দুতে পৌঁছে দিতে পারে বলে মনে করেন?

এলহানান: এ ছাড়া উপায় নেই। আমরা ফিলিস্তিনিদের মরুভূমিতে ফেলতে পারব না, ফিলিস্তিনিরা আমাদের সমুদ্রে নিক্ষেপ করতে পারবে না। আমরা এখানে একসঙ্গে, পাশাপাশি, এক উপায় বা অন্যভাবে বসবাস করার ভাগ্যলিপি বরণ করেছি। অবশেষে, দুই পক্ষকে আবার আলোচনার টেবিলে ফিরে যেতে হবে।

আরামিন: এভাবে দেখুন-ইসরাইলিরা ৬ মিলিয়ন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেনি এবং ফিলিস্তিনিরা ৬ মিলিয়ন ইহুদিকে হত্যা করেনি, যেমন জার্মানরা করেছিল। এবং এখনো, জার্মানি ও ইসরাইল বন্ধু। তেলআবিবে একজন জার্মান রাষ্ট্রদূত এবং বার্লিনে একজন ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত রয়েছেন। ওটার মানে কী? এর মানে আমরাও এটি করতে পারি। আমাদের নৃশংসতা এবং অত্যন্ত বেদনাদায়ক অতীত থেকে মুক্তি দিতে সাহসী নেতাদের প্রয়োজন। হ সূত্র: ডের স্পিগেল (জার্মান: ‘দ্য মিরর’)

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম