
প্রিন্ট: ০১ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৩৮ এএম
ম্যারাডোনার মৃত্যুর চাঞ্চল্যকর তথ্য জানাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২৫, ১১:৫৬ এএম
-67e63a0db044b.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
আরও পড়ুন
ডাক্তার ও নার্সদের বিরুদ্ধে পেশাদারত্বের অভিযোগ আগেই উঠেছিল। দায়িত্বজ্ঞানহীনতার মারাত্মক অভিযোগও এসেছিল। সরকারি কর্মকর্তারা মনে করেন, পর্যাপ্ত ও যথাযথ চিকিৎসা হলে হয়তো দিয়েগো ম্যারাডোনা বেঁচে থাকতেন। এরমাঝে চাঞ্চল্যকর এক তথ্য জানিয়েছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ কার্লোস চেসিনেলি।
সাইন্টিফিক পুলিশ সুপারিনটেনডেনসির ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান জানিয়েছেন, মৃত্যুর আগে ১২ ঘণ্টা অ্যাগোনির কষ্ট সহ্য করেছিলেন ম্যারাডোনা। দায়িত্বরত চিকিৎসক যদি নূন্যতম দায়িত্বপালন করতেন তবে তারা সেটি আগেভাগে ধরতে পারতেন। ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার চেসিনেলি জানিয়েছেন, দায়িত্বে মোটাদাগে অবহেলা ছিল চিকিৎসকদের।
এরআগে, মঙ্গলবার আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা লুকাস ফারিয়াস জানিয়েছিলেন, মৃত্যুর সময় ম্যারাডোনার কক্ষে কোনো চিকিৎসার সরঞ্জামই ছিল না! আর্জেন্টিনার সান ইসিদরো আদালতে চলছে ম্যারাডোনার চিকিৎসায় নিয়োজিত সাতজনের বিরুদ্ধে বিচার। এটিকে বলা হচ্ছে এক ধরনের ‘হরর থিয়েটার’।
লুকাস বলেছেন, ‘কোনো সিরাম ছিল না, ছিল না চিকিৎসার ন্যূনতম ব্যবস্থাও। ডিয়েগো ম্যারাডোনার যে বিষয়টি সবার আগে আমার নজর কেড়েছে সেটা হলো, তার মুখের অবস্থান এবং তলপেট এতটাই ফুলেছিল যে মনে হবে বিস্ফোরণ হবে। ওভাবে ম্যারাডোনাকে দেখে আমি চমকে গিয়েছিলাম।’
গতকাল ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ চেসিনেলি শুনিয়েছেন আরও কঠিন সত্য, ‘ফ্যাট এবং রক্ত জমাট বেঁধে গিয়েছিল, হার্ট কাভার হয়ে পড়েছিল। যা নিশ্চিত করে এটি অ্যাগোনি।’ চেসিনেলি প্রশ্ন তুলেছেন, সাতজন হেল্থকেয়ার কর্মকর্তা কিভাবে এটি না বুঝে থাকলেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেয়ে চেসিনেলি বলেছেন, ‘বেশ কিছুদিন যাবৎ তার শরীরে পানি জমতে ছিল। এটা খুব বেশি তীব্র ছিল না। কিন্তু এটি এমন কিছু যা আগে থেকেই বোঝা যেত। কোনো ডাক্তার পরীক্ষা করেও এসব পায়নি।’
২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর। ৬০-এ পৃথিবী ছেড়ে দূর আকাশের তারা হয়ে যান ম্যারাডোনা। ফুটবল-রোগে যিনি ভুগেছেন সারা জীবন, হৃদরোগ কেড়ে নেয় তার প্রাণ। চার বছর পর আবার সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার। শুরু হয়েছে অবহেলাজনিত কারণে তার মৃত্যুর বিচার।
বুয়েনস এইরেসের ভাড়া করা যে বাসায় তার চিকিৎসা চলছিল, যেখানে ম্যারাডোনাকে সুস্থ করে তোলার জন্য নিয়োজিত ছিলেন যারা, নিজেদের দায়িত্ব পালনে তাদের অবহেলা ছিল অমার্জনীয়, এমন অভিযোগের কূলকিনারা করতে এই বিচার।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন একজন শল্যচিকিৎসাবিদ, মনোবিদ, চিকিৎসা ও সেবাবিষয়ক সমন্বয়ক, চিকিৎসক, নার্স। আরেক নার্স গিসেলা দাহিয়ানা মাদ্রিদের বিচার আলাদাভাবে শুরু হবে জুলাইয়ে। চার মাস ধরে চলবে বিচার কার্যক্রম। একশরও বেশি সাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দেবেন।
তাদের মধ্যে রয়েছেন ম্যারাডোনার পরিবারের সদস্য এবং ব্যক্তিগত চিকিৎসক। অভিযুক্ত সাতজন যদি দোষী সাব্যস্ত হন, আট থেকে ২৫ বছরের জন্য কারাদণ্ড হতে পারে তাদের। এরই মাঝে আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার অভিযোগে মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয়েছে ম্যারাডোনার সাবেক দেহরক্ষী হুলিও কোরিয়াকে।