-67d3fda5d04c8.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ; দীর্ঘ ক্যারিয়ারের পুরোটা সময় যিনি ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দাঁড়িয়ে নতুন আশার বীজ বুনে গেছেন। দীর্ঘ ১৮ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে উপহার দিয়েছেন বহু মহাকাব্যিক ইনিংস। সদ্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলা মাহমুদুল্লাহর সেই সব কালজয়ী ইনিংসে চোখ বুলিয়ে আসা যাক আরও একবার।
৩/৫৯ এবং ৫/৫১ প্রতিপক্ষ— ওয়েস্ট ইন্ডিজ, কিংসটাউন, ২০০৯
রঙিন পোশাকে দেশের হয়ে খেলে ফেললেও সেটাই ছিল মাহমুদউল্লাহর অভিষেক টেস্ট। আর সেই টেস্টেই ইতিহাস গড়েছেন মাহমুদউল্লাহ। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৮ উইকেট তুলেছেন। প্রথম ইনিংসে ৫৯ রান খরচায় ৩ উইকেট আর চতুর্থ ইনিংসে ৫১ রান খরচায় ৫ উইকেট শিকার করে বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট জিতিয়েছেন তিনি। হয়েছেন টেস্ট অভিষেক ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া বাংলাদেশের তৃতীয় বোলার।
১১৫ এবং ৪২ প্রতিপক্ষ-নিউজিল্যান্ড, হ্যামিল্টন, ২০১০
এই ম্যাচে মাঠে নামার আগে মিরপুরে ভারতের বিপক্ষে ৯৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। ৪ রানের জন্য অভিষেক সেঞ্চুরি মিস করেছেন। সেই তিনি ৮ নম্বরে নেমে হ্যামিল্টনে লিখলেন ইতিহাস। ১৭৭ বলে ১১৫ রানের ইনিংস খেললেন। সাকিব আল হাসানের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে জুটিতে রেকর্ড ১৪৫ রান করেন। পেয়েছেন অভিষেক সেঞ্চুরি। এটি এখনও বাংলাদেশের জন্য একটি রেকর্ড। যদিও সেই ম্যাচে বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত হেরেছিল।
১০৩ প্রতিপক্ষ- ইংল্যান্ড, অ্যাডিলেড, ২০১৫
বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসের অন্যতম স্মরণীয় জয় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওই ম্যাচ। রুবেল হোসেনের বোলিং তোপে ১৫ রানের জয় পেলেও বাংলাদেশের জয়ের পথটা রচিত হয়েছিল মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে। ৯৯ রানে ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশেকে টেনে তুলেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। খেলেছিলেন ১০৩ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস। যার সুবাদে বিশ্বকাপ ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে পা রাখে বাংলাদেশ।
১২৮*, প্রতিপক্ষ-নিউজিল্যান্ড, হ্যামিল্টন, ২০১৫
বাংলাদেশ ম্যাচটা নাটকীয়ভাবে হেরে গিয়েছিল বটে। তবে এই ম্যাচেই মাহমুদউল্লাহ খেলেছেন তার ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস। যেখানে দেড়শর আগে ৪ উইকেট হারানো দলকে প্রায় তিনশ ছুঁইছুঁই টার্গেট পাইয়ে দিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ।
১০২*, প্রতিপক্ষ-নিউজিল্যান্ড- কার্ডিফ, ২০১৭
আইসিসি ইভেন্টে এ যাবতকাল বাংলাদেশের সেরা সাফল্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে খেলা। সেই সেমিফাইনালের স্বপ্নটা পূরণ হয়েছিল সেই মাহমুদউল্লাহর হাত ধরেই। ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব। এই দুই জনের জোড়া শতকে ভর করে সেমিফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। অথচ, সেই ম্যাচে ৩৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসেছিল বাংলাদেশ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে জিতিয়েছিলেন তিনি।
৭০* প্রতিপক্ষ শ্রীলংকা, ২০১৮ নিদাহাস ট্রফি
রোমাঞ্চকর সেই ম্যাচে শেষ ওভারে ছক্কা হাঁকিয়ে বাংলাদেশকে জিতিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। নিশ্চিত হারের মুখে থাকা দলকে ৭০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে জিতিয়েছিলেন। দলকে নিয়ে গিয়েছিলেন ফাইনালে। মাহমুদউল্লাহর জীবনের অন্যতম সেরা ইনিংস হিসেবে সব সময় যা মনে রাখবে তার ভক্তরা।
৫০ প্রতিপক্ষ পাকিস্তান, ২০১৮ এশিয়া কাপ
এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ৫০ রানের ইনিংস খেলে দলকে সম্মানজনক স্কোরে পৌঁছে দেন মাহমুদউল্লাহ। যা পরবর্তীতে বাংলাদেশকে ফাইনালে পৌঁছাতে সহায়তা করেছিল।
১৬* প্রতিপক্ষ-শ্রীলংকা, ডালাস, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ
রানের বিচারে কোনোভাবেই এই ইনিংসকে খুব বড় করে দেখার সুযোগ নেই। তবে যেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে তিনি ইনিংসটি খেলেছেন। দলকে জিতিয়েছেন তা দীর্ঘদিন মনে রাখবে তার ভক্তরা। মাহমুদউল্লাহর দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অন্যতম সেরা ইনিংসগুলোর মধ্যেও এটি থাকবে।
সেই ম্যাচে লংকানদের ১২৪ রানে থামিয়ে ব্যাট করতে নেমে হারের মুখে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ১১৩ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে বসলে বাংলাদেশের সামনে অপেক্ষা করছিল হার। সেখানে তানজিম সাকিবকে নিয়ে বাংলাদেশকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন মাহমুদউল্লাহ।