
রিয়াল মাদ্রিদ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলয় আতলেতিকোকে পেনাল্টি শ্যুট আউটে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে চলে গেছে। তবে এই লড়াইয়ের শেষ অঙ্কে গিয়ে হুলিয়ান আলভারেজের পেনাল্টি বাতিল হওয়াটা এখন আছে আলোচনায়। পেনাল্টিটা কেন বাতিল হলো, আদৌ বাতিল হওয়া উচিত কি না, তা নিয়ে উঠে গেছে বিতর্কের ঝড়।
আলভারেজ যখন পেনাল্টি নিতে আসেন, তখন রিয়াল মাদ্রিদের কিলিয়ান এমবাপ্পে ও জুড বেলিংহাম এবং আতলেতিকোর আলেকজান্ডার সোরলথ ইতোমধ্যে সফলভাবে শট নিয়ে ফেলেছেন। আলভারেজ দৌড়ে এসে বল মারতে গিয়ে হঠাৎ পা পিছলে পড়েন। এরপরও অবশ্য তিনি বলটা জালেই জড়ান। বল ক্রসবারের নিচ দিয়ে জালে জড়িয়ে যায়। তখন মনে হচ্ছিল তিনি সফলভাবে পেনাল্টিটা নিয়েছেন।
কিন্তু এরপরই ম্যাচে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। রিয়াল মাদ্রিদের ফেদেরিকো ভালভের্দে পেনাল্টি নিতে আসার আগেই রেফারি শিমন মারচিনিয়্যাক হঠাৎ খেলা থামিয়ে দেন এবং ভিএআর রিভিউয়ের জন্য অপেক্ষা করতে বলেন।
ভিএআর চেকের মূল উদ্দেশ্য ছিল এটি নিশ্চিত করা যে, আলভারেজ শট নেওয়ার সময় বলটি দুইবার স্পর্শ করেছিলেন কি না। বিশ্বজুড়ে সম্প্রচারিত প্রাথমিক রিপ্লেগুলোতে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি, কিন্তু ভিএআর পর্যালোচনায় ধরা পড়ে যে, আলভারেজের বাঁ পা প্রথমে বলটি ছুঁয়ে ফেলে, তারপর ডান পায়ে তিনি শট নেন।
ভিএআর পর্যালোচনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছিল: ‘আতলেতিকো খেলোয়াড়, নম্বর ১৯, পেনাল্টি নেওয়ার সময় বলটি দুইবার স্পর্শ করেছেন।’ রেফারি মারচিনিয়্যাক দুই আঙুল উঁচিয়ে ‘ডাবল টাচ’ সিগনাল দেন, তবে স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকদের তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি জানানো হয়নি। ফলে আতলেতিকো সমর্থকরা উদযাপন করতে থাকেন, যদিও তাদের দল তখন ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে ছিল।
ম্যাচ শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা পর গোলপোস্টের পেছন থেকে ধারণ করা একটি স্পষ্ট ভিডিও রিপ্লে প্রকাশিত হয়, যেখানে দেখা যায় আলভারেজের বাঁ পা বলটিকে সামান্য স্পর্শ করার পর সেটি তার ডান পায়ে লেগে গোলে প্রবেশ করে।
রিয়াল মাদ্রিদের গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া পরে জানান যে, তিনি ঘটনার সময়ই বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছিলেন এবং রেফারিকে জানান। কোর্তোয়া বলেন, ‘আমি অনুভব করেছিলাম যে আলভারেজ বলটি দু’বার ছুঁয়েছেন, এবং আমি রেফারিকে তা বলেছিলাম। এটা চট করে ধরা কঠিন, তবে তাদের জন্য এটা দুর্ভাগ্যজনক।’
এদিকে, সিবিএস স্পোর্টসের ফিফা রুলস বিশেষজ্ঞ ক্রিস্টিনা উনকেল ব্যাখ্যা করেন যে, বল-ট্র্যাকিং প্রযুক্তির সাহায্যে এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করা হয়েছে। উনকেল বলেন, ‘নিয়মটা খুবই সহজ – যদি বল দুইবার স্পর্শ করা হয়, তবে তা ফাউল হিসেবে গণ্য হবে। তাছাড়া, ভিএআর আধা-স্বয়ংক্রিয় অফসাইড প্রযুক্তির সাহায্যে বলের স্পর্শের সুনির্দিষ্ট মুহূর্ত চিহ্নিত করতে পারে।’