-67d259b67ce01.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
সেই রাতে যে সেবিকা ছিলেন দায়িত্বে, অজানা আশঙ্কা ঘিরে ধরেছিল তাকে। অশুভ কিছুর ইঙ্গিত পাচ্ছিলেন তিনি। তবে কি আজকের রাতই দিয়েগো ম্যারাডোনার...।
কিন্তু তার প্রতি নির্দেশ ছিল, দিয়েগোর ঘুম যেন না ভাঙানো হয়। সেই ঘুম আর ভাঙেনি। ঘুম থেকে চিরঘুমে চলে গেলেন আর্জেন্টিনার ফুটবলের মানসপুত্র। করোনা মহামারিতে যখন বিপর্যস্ত বিশ্ব, সেসময় আর্জেন্টিনাকে কাঁদিয়ে, ফুটবলবিশ্বকে শোকে ভাসিয়ে জীবনের ওপারে চলে গেলেন ফুটবল জাদুকর।
দিনটি ছিল ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর। ৬০-এ পৃথিবীর খেলাঘর ছেড়ে দূর আকাশের তারা হয়ে গেলেন ম্যারাডোনা। ফুটবল-রোগে যিনি ভুগেছেন সারা জীবন, হৃদরোগ কেড়ে নিল তার প্রাণ। চার বছর পর আবার সংবাদের শিরোনামে আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার। শুরু হয়েছে অবহেলাজনিত কারণে তার মৃত্যুর বিচার। অভিযোগ, বুয়েনস এইরেসের গাঘেঁষা এক নিভৃত শহরে ভাড়া করা যে বাসায় তার চিকিৎসা চলছিল, যেখানে তাকে সুস্থ করে তোলার জন্য নিয়োজিত ছিলেন যারা, নিজেদের দায়িত্ব পালনে তাদের অবহেলা ছিল অমার্জনীয়, এমন অভিযোগের কূলকিনারা করতে এই বিচার।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন একজন শল্যচিকিৎসাবিদ, মনোবিদ, চিকিৎসা ও সেবাবিষয়ক সমন্বয়ক, চিকিৎসক, নার্স। আরেক নার্স গিসেলা দাহিয়ানা মাদ্রিদের বিচার আলাদাভাবে শুরু হবে জুলাইয়ে। চার মাস ধরে চলবে বিচার কার্যক্রম। একশরও বেশি সাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দেবেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ম্যারাডোনার পরিবারের সদস্য এবং ব্যক্তিগত চিকিৎসক। অভিযুক্ত সাতজন যদি দোষী সাব্যস্ত হন, আট থেকে ২৫ বছরের জন্য কারাদণ্ড হতে পারে তাদের।
সরকারি কৌঁসুলিরা ম্যারাডোনার চিকিৎসায় নিয়োজিত ডাক্তার ও নার্সদের বিরুদ্ধে পেশাদারত্বের ঘাটতি এবং দায়িত্বজ্ঞানহীনতার মারাত্মক অভিযোগ এনেছেন। পর্যাপ্ত ও যথাযথ চিকিৎসাব্যবস্থা নিশ্চিত করা হলে হয়তো ম্যারাডোনার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আরও বাড়ত, ২০ জন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞের একটি প্যানেলের এই অভিমত মামলার কার্যক্রমে অনুঘটক হিসাবে কাজ করছে। ফুটবল মাঠে নিজেকে নিংড়ে দিয়ে যিনি নৈপুণ্যের ফুল ফোটাতেন, সেই ম্যারাডোনার জীবন-প্রদীপ নিভে গেছে অবহেলায়, না, জাদুকরের এমন সমাপ্তি মেনে নেওয়া যায় না!