
ছবি: সংগৃহীত
২৯ বছর ঘরের মাটিতে আইসিসি টুর্নামেন্ট খেলার সুযোগ পেয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু ক্রিকেটারদের ব্যর্থতায় সে সুযোগ হেলায় হারিয়েছে দলটি। নিউজিল্যান্ডের কাছে ৬০ রানের বিশাল হারে টুর্নামেন্ট শুরুর পর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে ৬ উইকেটে হেরেছে তারা। টানা দুই হারে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে তাদের। বাংলাদেশের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচটি এখন পাকিস্তানের জন্য শুধুই আনুষ্ঠানিকতার।
নিজেদের আঙিনায় আইসিসি টুর্নামেন্টে এমন ভরাডুবি মেনে নিতে পারছেন না পাকিস্তানের সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমীরা। দেশটির ৪৬ বছর বয়সী সরকারি চাকরিজীবী নাসিম সত্তি বার্তা সংস্থা এএফপিকে নিজের ক্ষোভের কথা জানিয়ে বলেন, ‘সবচেয়ে হতাশাজনক ব্যাপার হলো, তারা লড়াইটুকুও করতে পারেনি। দলে না আছে মানসম্পন্ন বোলার, না আছে নির্ভরযোগ্য ব্যাটার। এমন অবস্থায় মনে হয়, পাকিস্তান ক্রিকেট মরে গেছে।’
একের পর এক আইসিসি টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের হতাশাজনক পারফরম্যান্সে ক্ষিপ্ত দেশটির সাবেক ক্রিকেটাররাও। তারা এবার দলে খোলনলচে পালটে ফেলার দাবি জানিয়েছেন বোর্ডের কাছে। দেশটির কিংবদন্তি পেসার ওয়াসিম আকরামের ভাষায়, ‘আমরা কয়েক বছর ধরে এই খেলোয়াড়দের সুযোগ দিচ্ছি, কিন্তু তারা কিছুই শিখছে না বা উন্নতি করছে না। এটা বড় পরিবর্তন আনার সময়। আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের কাঠামোকে শক্তিশালী করতে হবে, যাতে আমরা সাধারণ মানের নয়, বরং বিশ্বমানের খেলোয়াড় তৈরি করতে পারি।
বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেট ততটা প্রতিযোগিতামূলক নয়, আর নিম্নমানের উইকেট খেলোয়াড়দের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য উপযুক্তভাবে প্রস্তুত করতে পারছে না। ব্যর্থতার পেছনে বারবার বোর্ড, কোচিং স্টাফ ও নির্বাচন প্যানেলের পরিবর্তন পাকিস্তান ক্রিকেটের ধারাবাহিকতা নষ্ট হচ্ছে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনটা মূলত রাজনৈতিক স্বার্থের কারণে হয়ে থাকে মনে করছেন তাঁরা। যেটি হওয়ার প্রয়োজন ছিল যোগ্যতার ভিত্তিতে।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি রিজওয়ানদের হতশ্রী পারফরম্যান্স দেখে সংস্কারের বার্তা দিয়েছেন আরেক সাবেক অধিনায়ক শহিদ আফ্রিদি, ‘পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের মানসিকতা আধুনিক ক্রিকেটের সঙ্গে যায় না, আমাদের ক্রিকেট কাঠামোয় সম্পূর্ণ সংস্কার প্রয়োজন, যাতে আমরা আগ্রাসী মানসিকতার খেলোয়াড় তৈরি করতে পারি।’