ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের ৫ বিতর্কিত মুহূর্ত
মিয়াঁদাদের ক্যাঙ্গারু লাফ থেকে গম্ভীর-আফ্রিদির লড়াই
প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:৫০ পিএম
-67bac52f2b2d1.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
কেউ কারে নাহি ছাড়ে, সমানে সমান। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ আক্ষরিক অর্থেই যেন তাই। দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ম্যাচ মানেই যেন বাড়তি উত্তেজনা। দুভাগে বিভক্ত গোটা বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমিরা। মাঠে বসে ম্যাচ দেখতে ভিড় জমায় দর্শকরা। একেকটি টিকিট হয়ে ওঠে সোনার হরিণ। জমে উঠে চায়ের আড্ডা। একে অন্যকে হারাতে কথার লড়াইয়ে নামে দুদলের সমর্থকরা। তুমুল উত্তেজনাকর সেই ম্যাচটিই আজ মাঠে গড়াতে যাচ্ছে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দুবাইয়ে বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩টায় মুখোমুখি হচ্ছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান।
দুই দলের এই ম্যাচ নিয়ে বাড়তি আগ্রহের কারণও আছে। অতীতে এমন সব শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচ হয়েছে দুদলের মাঝে যা এই ম্যাচকে দিয়েছে ভিন্নতা। তাছাড়া মাঠে দুদলের ক্রিকেটার যুদ্ধংদেহী মনোভাব এই লড়াইটাকে আলাদা মাত্রা দিয়েছে। জাভেদ মিয়াঁদাদের ক্যাঙ্গারু লাফ থেকে গম্ভীর-আফ্রিদির একে অন্যের দিকে তেড়ে যাওয়া এখনও দাগ কেটে আছে ক্রিকেটপ্রেমিদের মনে। বিতর্কিত সেই সব মুহূর্ত নিয়েই এই প্রতিবেদন।
মিয়াঁদাদের ক্যাঙ্গারু লাফ
পাকিস্তানের জাভেদ মিয়াঁদাদ ব্যাটিংয়ের সঙ্গে স্লেজিংয়ের জন্যও আলাদাভাবে পরিচিত ছিলেন। প্রতিপক্ষকে অস্থির করে তুলতে স্লেজিং ছিল তার অন্যতম প্রধান অস্ত্র। ১৯৯২ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে মিয়াঁদাদের সেই স্লেজিং এখনও মনে রেখেছে দেশটির ক্রিকেটপ্রেমিরা।
সিডনিতে হওয়া সেই ম্যাচে রান তাড়ার সময় ভারতীয় উইকেটরক্ষক কিরণ মোরের অত্যধিক আবেদনে বিরক্ত হয়েছিলেন মিয়াঁদাদ। মোরের লাফিয়ে লাফিয়ে আবেদন নিয়েই পরে স্লেজিং করেন মিয়াঁদাদ। রান নেওয়ার সময় মোরকে ব্যাঙ্গ করতে ক্যাঙ্গালুরুর মতো লাফিয়ে লাফিয়ে দৌড়ে রান করেন তিনি। যা এখনও মনে রেখেছে ক্রিকেটপ্রেমিরা।
অবশ্য সেই ম্যাচে জয় পেয়েছিল ভারত। আগে ব্যাট করে ২১৬ রান করে মোহাম্মদ আজাহারউদ্দিনের ভারত। যার জবাবে ১৭৩ রানে অলআউট হয় ইমরান খানের পাকিস্তান।
সোহেলের স্টাম্প উপড়ে প্রসাদের প্রতিশোধ
বেঙ্গালুরুতে ১৯৯৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পাকিস্তানকে ২৮৮ রানের টার্গেট দেয় ভারত। যার জবাবে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করেন ওপেনার আমির সোহেল ও সাঈদ আনোয়ার। এক সময় ভেঙ্কটেশ প্রসাদকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সোহেল বোলারকে আঙুল দিয়ে বল দেখিয়ে স্লেজ করেন। যার প্রতিশোধটা পরের বলেই নিয়ে নেয় প্রসাদ। পরের বলে সোহেলের স্টাম্প উপড়ে ফেলেন তিনি। যা আজও মনে রেখেছে ক্রিকেটপ্রেমিরা। সেই ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ৩৯ রানে জয় পেয়েছিল ভারত।
ভক্তের ওপর ইনজামামের হামলা
১৯৯৭ সালে টরন্টোতে এক ভারতীয় ভক্তের দিকে তেড়ে যেতে দেখা গিয়েছিল ইনজামাম-উল-হককে। এ ঘটনা নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। ম্যাচে ইনজামাম বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়িয়ে ফিল্ডিং করছিলেন। তখন এক ভারতীয় ভক্ত হিন্দিতে তার শারীরীক গঠন নিয়ে বলতে থাকে আলু। যা শোনে মেজাজ ঠিক রাখতে না পেরে ওই দর্শকের দিকে তেড়ে যান ইনজামাম।
গম্ভীর-আফ্রিদি দ্বন্দ্ব
২০০৭ সালে ভারতের বর্তমান কোচ গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে মাঠে বিবাদে জড়াতে দেখা যায় তারকা ক্রিকেটার শহীদ আফ্রিদিকে। সেই ম্যাচে আফ্রিদির বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে তাকে কিছু একটা বলেছিলেন গম্ভীর। যা সহ্য করতে না পেরে তার দিকে তেড়ে যান আফ্রিদি। প্রায় হাতাহাতিতে জড়ানোর আগে এই দুজনের বিবাদ থামায় আম্পায়ারসহ দলের বাকিরা।
হরভজনের দিকে তেড়ে যান শোয়েব আখতার
পাকিস্তানের স্পিডস্টার শোয়েব আখতার কখনই লড়াই থেকে পিছপা হননি। ২০১০ এশিয়া কাপে হরভজন সিংয়ের সঙ্গে লড়াই করতে দেখা যায় শোয়েবকে।
ম্যাচে আখতারের একটি বল খেলতে ব্যর্থ হন হরভজন। বলটি ডট হলে হরভজনকে স্লেজ করেন শোয়েব। এমনকি তেড়ে যান হরভজনের দিকে। অবশ্য এর জবাবটা পরে দিয়েছিলেন হরভজন। মোহাম্মদ আমিরকে এক বল বাকি থাকতে ছক্কা হাঁকিয়ে ভারতকে জেতান হরভজন। এরপর শোয়েবের সামনে উদযাপনে মাতেন। যেই মুহূর্তটি এখনও মনে রেখেছে ক্রিকেটপ্রেমিরা।