Logo
Logo
×

খেলা

বেলিংহামকে লাল কার্ড দেখিয়ে ‘জীবন বিপন্ন’ স্প্যানিশ রেফারির!

Icon

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৯ পিএম

বেলিংহামকে লাল কার্ড দেখিয়ে ‘জীবন বিপন্ন’ স্প্যানিশ রেফারির!

রিয়াল মাদ্রিদের তারকা ফুটবলার জুড বেলিংহ্যামকে লাল কার্ড দেখানোর পর থেকেই স্পেনজুড়ে বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন রেফারি হোসে লুইস মুনুয়েরা মনতেরো। রিয়াল তার রেফারিংয়ের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছে। এখানেই শেষ নয়। তার ব্যবসায়িক সংযোগ নিয়ে তদন্ত চলছে এখন। রয়্যাল স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন এবং উয়েফা তাকে অনানুষ্ঠানিকভাবে সাময়িক বরখাস্তও করেছে। এমনকি প্রাণনাশের হুমকিও পেয়েছেন তিনি, দাবি স্প্যানিশ এই রেফারির।

মুনুয়েরার প্রতিষ্ঠান 'ট্যালেন্টাস স্পোর্টস স্পিকার্স' বিভিন্ন ক্রীড়া সংস্থা, লা লিগা, উয়েফা, স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন  এবং ক্লাব যেমন ম্যানচেস্টার সিটি ও অ্যাস্টন ভিলার সঙ্গে অবৈধ ব্যবসায়িক লেনদেন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এই প্রসঙ্গে মুনুয়েরা তার ইনস্টাগ্রামে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন এবং পরে স্প্যানিশ গণমাধ্যম কাদেনা কোপে-তে তার অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, ‘আমি প্রথম থেকেই এই মিথ্যা প্রচার দেখে হতবাক হয়েছি। এই কোম্পানি মাত্র এক বছর ধরে পরিচালিত হচ্ছে, এবং আমি এখানে চার থেকে পাঁচটি কনফারেন্স করেছি, যেখানে তরুণদের কাছে ক্রীড়া মূল্যবোধ পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি সম্পূর্ণ শান্ত আছি এবং এসব মিথ্যা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করছি।’

মুনুয়েরা দাবি করেন, এ বিষয়টি তার ব্যক্তিগত জীবনকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য স্বার্থ জড়িত আছে, যা আমরা দীর্ঘদিন ধরে ভুগছি। আমার ভাগ্নেদের অপদস্থ করা হচ্ছে, আমার নয় ভাই বিপদে আছে, আমার ৯০ বছর বয়সী বাবা গির্জায় যাচ্ছেন... আমরা পত্রিকায় কীভাবে এসব ভয়ংকর কথা দেখাতে পারি? আমরা সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ করছি নাকি মিডিয়ার মাধ্যমে আরও উস্কে দিচ্ছি? আমি সারাদিন বাড়ির বাইরে যাইনি, কারণ আমি বিশ্বাসই করতে পারছি না কী ঘটছে। এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। আমরা কী ধরনের খেলা তৈরি করছি?’

সম্প্রতি স্পেনের ঘরোয়া ফুটবলে বেশ কয়েকটি রেফারির ওপর সহিংস হামলার ঘটনা ঘটেছে। এই বিষয়টি রেফারিরা ক্লাব ও মিডিয়ার প্রচারণার ফলে সংঘটিত হচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন। মুনুয়েরা নিজেও এই সপ্তাহে হত্যার হুমকি পেয়েছেন।

তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় আরও একবার তার অবস্থান স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমি কখনোই কোনো ক্রীড়া সংস্থার কাছ থেকে অর্থ গ্রহণ করিনি। আমাকে যে কোম্পানিগুলো নিয়োগ করেছে, তারাই আমাকে পারিশ্রমিক দিয়েছে।’ 

তবে কাদেনা সেরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তার ব্যবসায়িক অংশীদার ফ্রান্সিসকো সানচেজ-কাস্টানিয়ের লা লিগা, উয়েফা, স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন  এবং অন্যান্য ক্লাবের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে আরেকটি কোম্পানি 'ডেপোরতালিয়া স্পোর্টস'-এর মাধ্যমে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই দুটি কোম্পানির রেজিস্ট্রেশন ঠিকানা একই।

এছাড়া, সেই ঠিকানায় কেন লিওনেল মেসির একটি বিশাল ম্যুরাল রয়েছে, সে বিষয়েও তাকে প্রশ্ন করা হয়। তিনি বলেন, ‘সেই ঠিকানায় আমি থাকি না, আমার কোনো অফিসও নেই। এটি অন্য একটি কোম্পানির ফিসকাল হেডকোয়ার্টার, যেখানে আমার ব্যবসায়িক অংশীদার যুক্ত আছেন। এখানে কোনো গোপন বিষয় নেই। আমি কিছুই লুকাচ্ছি না, সবকিছু পরিষ্কার এবং শিগগিরই প্রকৃত সত্য প্রকাশ পাবে।’

একটি বিষয় যা আরও সন্দেহের জন্ম দিয়েছে, তা হলো—তদন্ত প্রকাশ্যে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি তার লিংকডইন প্রোফাইল থেকে ‘ট্যালেন্টাস স্পোর্টস স্পিকার্স’-এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তথ্য মুছে ফেলেন, যদিও ইনস্টাগ্রামে এটি এখনও বিদ্যমান। 

তিনি এই বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন, ‘আমি আরও এক লাখ হুমকি, হত্যার হুমকি, গালাগালি পাওয়ার আগেই লিংকডইন অ্যাকাউন্ট প্রাইভেট করে ফেলেছি। আমি ভীত নই, কারণ আমি জানি আমার লুকানোর কিছু নেই। কিন্তু আমার পরিবার সবচেয়ে বেশি ভুগছে, তারা ভীষণ উদ্বিগ্ন। তারা জানে আমাকে রেফারিং ছাড়ার কথা বলতে পারবে না, কারণ এটি অসম্ভব। আমি তাদের শান্ত করার চেষ্টা করছি। এই অপপ্রচার সহ্য করা সম্ভব, কিন্তু আমার বাবা-মা এটির যোগ্য নন।’

তিনি আরও বলেন, যতদিন পর্যন্ত নিখুঁত রোবটিক রেফারিং ব্যবস্থা তৈরি না হয়, ততদিন পর্যন্ত রেফারিরা ভুল করতেই পারেন। ভিএআর ব্যবস্থাও রেফারিদের দ্বারা প্রস্তাবিত নয়। তিনি আরও জানান, ওসাসুনা-রিয়াল মাদ্রিদ ম্যাচের কোনো সিদ্ধান্ত তিনি পরে ফিরে দেখেননি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম