
সমীকরণটা সহজ ছিল। একটা জয় পেলেই লা লিগার শীর্ষে উঠে আসত বার্সেলোনা। তবে কাজটা সহজ ছিল না। প্রতিপক্ষ যে ছিল শেষ ছয় বছর ধরে বার্সেলোনার জন্য বেশ বড় পরীক্ষায় পরিণত হওয়া রায়ো ভায়েকানো! যে দলের বিপক্ষে শেষ সাত দেখায় মোটে দুটো ম্যাচে জিততে পেরেছিল বার্সা, দুটো ড্রয়ের বিপরীতে তিনটি ম্যাচে হেরেছিল রায়োর কাছে।
বার্সা সোমবার রাতের ম্যাচটায় জয় তুলে নিয়েছে বটে, কাজটা এবার সহজ হয়নি। জিততে হয়েছে রবার্ট লেভান্ডভস্কির একমাত্র গোলে। তবে তাতেই কাজটা হয়ে গেছে। লা লিগার শীর্ষস্থান তো বটেই, লিগের নাটাইটাও নিজেদের দখলে নিয়ে নিয়েছে বার্সেলোনা।
বার্সার শীর্ষে আসতে পেরেছে মূলত রিয়াল মাদ্রিদ ও অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের পয়েন্ট খোয়ানোর কারণে। বার্সা আর রিয়াল দুই দলেরই পয়েন্ট এখন ৫১, তবে গোল ব্যবধানে এগিয়ে থাকার কারণে শীর্ষস্থানে রয়েছে বার্সা। অ্যাটলেটিকো রয়েছে এক পয়েন্ট পিছিয়ে।
তবে এ পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়েও সতর্ক বার্সা। গোলরক্ষক ভয়চেখ শেজনি সতর্ক করে দিয়েছেন দলকে, যেন পয়েন্ট তালিকার দিকে তাকিয়ে আত্মতুষ্টিতে না ভোগে তার দল। বড় একটা প্রমাণ তো তার দলই দিয়েছে! এই তো গেল অক্টোবরের শেষে বার্সা লা লিগার শীর্ষে ছিল ৯ পয়েন্টের ব্যবধানে। সেখান থেকে ডিসেম্বরের শেষ না পেরোতেই কাতালানরা শীর্ষস্থান থেকে ৫ পয়েন্টের ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছিল।
শেজনি বলেন, ‘আমরা কিন্তু একটা সময় আর সবার চেয়ে ৯ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলাম। ফুটবলে পরিস্থিতি খুব দ্রুত বদলে যায়। তাই আমাদের পরবর্তী ম্যাচে এবং এরপরের ম্যাচগুলোতেও সেরা খেলাটা খেলতে হবে।’
বার্সাকে আবারও শীর্ষে তুলে দিয়েছে যে গোলটা, সেটা এসেছে ম্যাচের ২৭ মিনিটে। ইনিগো মার্তিনেজকে বক্সের মধ্যে ফাউল করেন রায়োর পাথে সিস। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর) দেখে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। সে স্পট কিক থেকেই গোল করে দলকে এগিয়ে দেন লেভান্ডভস্কি। এরপর দুই দলই গোলের সুযোগ পেয়েছিল।
বার্সার তরুণ তারকা লামিন ইয়ামাল তার ক্যারিয়ারের ১০০তম ম্যাচে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন, তবে রায়োর গোলরক্ষক অগুস্তো বাতাইয়া অসাধারণভাবে তা রুখে দেন। অপরদিকে রায়োর হয়ে জর্জে ডে ফ্রুটোস গোল করলেও অফসাইডের কারণে তা বাতিল হয়। তাতে এক গোলের কষ্টার্জিত এক জয় নিয়ে শীর্ষে চলে আসে বার্সা।
জয়ের পর শেজনি যেমন দলকে সতর্ক করে দিয়েছেন, কোচ হানসি ফ্লিকও কথা বলেছেন একই সুরে। তিনি জানান, শিরোপার লড়াই এখনো শেষ হয়নি। তার কথা, ‘আমি আগেই বলেছিলাম, আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব। আমরা এখন ভালো অবস্থানে আছি, যা ক্লাব, খেলোয়াড় এবং সমর্থকদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। তবে এখনো অনেক পথ বাকি।’
এই জয়ে বার্সেলোনার অপরাজিত যাত্রাটা ১২ ম্যাচে উন্নীত হলো। ওদিকে, রায়ো ভায়েকানোর ৯ ম্যাচের অপরাজেয় যাত্রাটা থামল এই ম্যাচে।