ম্যানসিটির মুখোমুখি হওয়ার আগে রিয়াল মাদ্রিদে ‘জরুরি অবস্থা’ জারি

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:২৭ এএম

রিয়াল মাদ্রিদের সামনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ প্লে-অফে ম্যানচেস্টার সিটির মুখোমুখি হওয়ার কঠিন চ্যালেঞ্জ। কিন্তু এই ম্যাচের আগে সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো তাদের রক্ষণভাগ। দানি কারভাহাল, আন্তোনিও রুডিগার, ডেভিড আলাবা, এদের মিলিতাও—এই চারজনই ইনজুরির কারণে দলের বাইরে। এদের অনুপস্থিতি আনচেলত্তির পরিকল্পনায় বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে। এই তালিকা এখানেই শেষ নয়। লুকাস ভাসকেজও চোটের কারণে ম্যানচেস্টার সফরে নেই।
মৌসুমজুড়ে মাদ্রিদে ইনজুরির সংখ্যা ৩৬-এর বেশি, যার মধ্যে ২৬টি শুধুই পেশির চোট। আনচেলত্তি একে ‘জরুরি অবস্থা’ বলেই আখ্যা দিয়েছেন।
এত সমস্যার মাঝেও রিয়াল মাদ্রিদ এখনো লা লিগায় শীর্ষে, কোপা দেল রের সেমিফাইনালে এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগ প্লে-অফেও জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে তাদের রক্ষণ সাজাতে আনচেলত্তিকে বেশ সৃজনশীল হতে হবে। স্কোয়াডে এখন কার্যত মাত্র একজন প্রকৃত ডিফেন্ডার আছেন— ২১ বছর বয়সী রাউল আসেনসিও, যিনি প্রথম দলের হয়ে মাত্র ১৯টি ম্যাচ খেলেছেন।
যদিও আনচেলত্তির হাতে হেসুস ভায়েহো আছেন, তাকে খুব একটা বিবেচনায় রাখেন না কোচ। বরং মিডফিল্ডার অরেলিয়েন চুয়ামেনিকে ১৪টি ম্যাচে সেন্ট্রাল ডিফেন্সে খেলানো হয়েছে। আরও দুই তরুণ— ইয়াকোবো রামোন এবং লোরেঞ্জো আগুয়াদো—ক্লাব একাডেমি থেকে দলে যুক্ত হলেও মূল একাদশে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা কম। ডান প্রান্তে থাকতে পারেন মিডফিল্ডার ফেদে ভালভের্দে, যার ফলে মিডফিল্ডেও ঘাটতি তৈরি হবে।
মাদ্রিদের মৌসুমের পারফরম্যান্স প্রশ্নবিদ্ধ। তারা এখন পর্যন্ত সাতটি ম্যাচ হেরেছে, যেখানে গত মৌসুমে লিগে মাত্র দুটি হার ছিল। বড় দলের বিপক্ষে তারা নিয়মিতভাবে ব্যর্থ হয়েছে— বার্সেলোনা, অ্যাথলেটিক, লিভারপুল, মিলান, কেউ-ই ছাড় দেয়নি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও তারা তিনবার হেরেছে। যা বোঝায় যে বড় ম্যাচে তারা কতটা অস্বস্তিতে রয়েছে। আনচেলত্তিও জানেন যে সমালোচনা চলছে, তাই তিনি নিজেই বলছেন, ‘সত্যি বলতে, আমরা অনেক ভালো করছি।’
যদিও আক্রমণভাগ মাদ্রিদের বড় শক্তি। কিলিয়ান এমবাপে, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রদ্রিগো এবং জুড বেলিংহাম মিলে ৬০-এর বেশি গোল করেছেন। এমবাপে দুর্দান্ত ছন্দে আছেন, ১৪ ম্যাচে করেছেন ১৩ গোল। কিন্তু রক্ষণে এই বিশাল শূন্যতা সামলানো হবে আসল চ্যালেঞ্জ।
আক্রমণ থেকে কাউকে সরিয়ে ফেলা সম্ভব নয়, আবার রক্ষণকেও শক্তিশালী করতে হবে; আনচেলত্তিকে তাই বেশ চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়তে হচ্ছে। মৌসুমের শুরু থেকেই তিনি দলের পরিশ্রম নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের নিবেদনের অভাব রয়েছে, আমরা যথেষ্ট পরিশ্রম করছি না।’
তবে তিনি এখনো আশাবাদী যে ম্যানচেস্টারের মতো মঞ্চে তার খেলোয়াড়রা জ্বলে উঠবে। তার বিশ্বাস, ‘আমি চারজন মিডফিল্ডার নামিয়ে ভারসাম্য আনার চেষ্টা করি, আমি আরও প্রেসিং করি... কিন্তু আমি ৬০ গোল পাই না। ব্যাপারটা এতটাই সহজ।’
কার্লো আনচেলত্তির দল যখন ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে মাঠে নামবে, তখন তাদের সামনে শুধু ম্যাচ জেতার চ্যালেঞ্জ নয়, বরং নিজেদের রক্ষা করার চ্যালেঞ্জও থাকবে। আনচেলত্তির জন্য এটা শুধু কৌশলগত লড়াই নয়, বরং একটা পরীক্ষাও—এই সংকট কাটিয়ে তিনি কতটা দূর যেতে পারেন, সেটাই দেখার বিষয়।