আবারও অধিনায়কত্ব ফিরে পেলেন স্টিভেন স্মিথ। আর দায়িত্বে ফিরেই হাঁকালেন সেঞ্চুরি। যে সেঞ্চুরি করার পথে টেস্টে ১০,০০০ রানের দুর্দান্ত এক মাইলফলক স্পর্শ করেন অসি ব্যাটার। তার সঙ্গে জুটি বেঁধে নিজের ১৬তম টেস্ট শতক তুলে নিয়েছেন উসমান খাজাও।
বুধবার এ দুজনের অনবদ্য শতকে ভর করেই স্পিননির্ভর শ্রীলঙ্কান বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে গলের মন্থর উইকেটে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের পুরস্কার পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। সেই সঙ্গে চড়ে বসেছে রান পাহাড়েও।
সিরিজের প্রথম দিনে মাত্র দুটি উইকেট হারিয়েই স্কোর বোর্ডে ৩৩০ রান তুলে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া। যদিও এদিন ইনিংসে ছিল বৃষ্টির হানা। যাতে ৮১.১ ওভারের মাথায় খেলা বন্ধ হয়ে যায়।
তবে তার আগেই খাজা ও স্মিথের অপরাজিত তৃতীয় উইকেট জুটিতে আসে ১৯৫ রান। যা ২০১১ সালের পর শ্রীলঙ্কায় প্রথম সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে থাকা অস্ট্রেলিয়ার জন্য একটি দুর্দান্ত সূচনা।
৩৮ টেস্টে ৬৬ গড়ে ব্যাট করা স্মিথ এ ম্যাচে ফের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্স পিতৃত্বকালীন ছুটিতে থাকার সুযোগে দায়িত্ব পেয়ে দারুণ ছন্দে ছিলেন এদিন। মধ্যাহ্নভোজের পরই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন তিনি। ৫৭ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন এ সময়। তবে পরে শ্রীলঙ্কার প্রধান স্পিনার প্রবাথ জয়সুরিয়ার রক্ষণাত্মক লাইন সামলে ধৈর্যের পরিচয়ও দেন।
স্মিথ তার অর্ধশতক পূর্ণ করার পথেই টেস্ট ক্যারিয়ারের ১০,০০০ রান পূর্ণ করেন মধ্যাহ্নভোজের ঠিক আগে। মিড-অন অঞ্চলে একটি ফ্লিক শট খেলে। ওসি কিংবদন্তি রিকি পন্টিং, অ্যালান বোর্ডার এবং স্টিভ ওয়াহর পর চতুর্থ অস্ট্রেলিয়ান হিসেবে তিনি এই কীর্তি গড়েন।
এরপর স্মিথ তার ৩৫তম টেস্ট সেঞ্চুরিও তুলে নেন। যা ছিল শ্রীলঙ্কার মাটিতে তার তৃতীয় শতক এবং অস্ট্রেলিয়ানদের মধ্যে সর্বোচ্চ।
১০,০০০ রান পূর্ণ করার পর সতীর্থদের কাছ থেকে উষ্ণ অভ্যর্থনা পান স্মিথ। যদিও পরের ওভারেই একবার জীবন পান তিনি। ওই সময় জয়সুরিয়া তার ক্যাচটি নিতে ব্যর্থ হন। এরপর স্মিথ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ব্যাট চালিয়ে যান।
এদিকে ২০২৩ অ্যাশেজের পর এদিনই শতকের খরা কাটান উসমান খাজা। ১৩৫তম বলে তিন অঙ্কের ঘরে পৌঁছান বাঁহাতি এই ওপেনার। যদিও বেশ কয়েকবার শ্রীলঙ্কার বাজে ফিল্ডিংয়ের কারণে জীবন পান তিনি। উইকেটরক্ষক কুশল মেন্ডিসও ক্যাচ ফেলে দেন তার। যার ফলে অপরাজিত থাকেন ১৪৭ রানের ইনিংস খেলে।
শ্রীলঙ্কার বোলাররা সারাদিন সংগ্রাম করলেও লেগস্পিনার জেফরি ভ্যান্ডারসে কিছুটা হুমকি সৃষ্টি করেন। শুরুর দিকেই লাবুশেনকে আউট করে স্বস্তি এনে দেন স্বাগতিকদের।
এর আগে ট্র্যাভিস হেড এদিন নতুন ব্যাটিং পজিশনে খেলতে নামেন। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে মাত্র ৩৫ বলেই হাফ-সেঞ্চুরি করেন এই ওপেনার এবং ৫৭ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে আউট হন। তিনি জয়সুরিয়ার বলে ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।
শ্রীলঙ্কা ফিল্ডিংয়ে বেশ বাজে একটা দিন কাটিয়েছে বুধবার। এদিন জয়সুরিয়ার বলে খাজার দুটি সহজ ক্যাচ ছেড়ে দেওয়া এবং ভুল রিভিউ নেওয়ার ঘটনা তাদের হতাশার কারণ হয়েছে। তবে নতুন বল নেওয়ার পরপরই বৃষ্টি নামলে স্বাগতিকরা কিছুটা স্বস্তি পায়।
অস্ট্রেলিয়াও এই টেস্টে স্পিন নির্ভর বোলিং আক্রমণ সাজিয়েছে। তাদের একাদশে আছেন নাথান লায়নের সঙ্গে টড মারফি ও ম্যাথু কুনেম্যানের মত স্পিনার। অন্যদিকে পেসার হিসেবে একমাত্র মিচেল স্টার্ককে দলে রাখা হয়েছে।
যাইহোক দুই শতকে প্রথম দিনের খেলা শেষে শক্ত অবস্থানেই আছে অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় দিনে স্মিথ-খাজার জুটি আরও বড় স্কোর করতে চাইবে নিঃসন্দেহে। আর তাতে ৩৩০/২ থেকে তাদের স্কোর কোথায় গিয়ে ঠেকে সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।