১০ হাজারি ক্লাবে অধিনায়কের বেশেই ঢুকলেন স্মিথ
প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:০০ পিএম
সে একটা গল্প হতে পারত। নিজের ঘরের মাঠ সিডনি প্রস্তুত ছিল। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিল। কিন্তু স্টিভেন স্মিথ সে মাইলফলকটা ছুঁতে পারেননি।
সে ম্যাচের মাসখানেক পর এবার তিনি নামলেন অধিনায়কের বেশে। নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্স এই শ্রীলঙ্কা সিরিজে নেই, তার বদলি অধিনায়ক হিসেবে খেলছেন স্মিথ। নেমেই মাইলফলকটা ছুঁলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে যেন একটা চক্রও পূরণ হলো বৈকি!
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে পাঁচ অঙ্কের টেস্ট রান, মানে ১০০০০ রান। মাইলফলকটা এর আগে ছুঁয়েছেন অ্যালান বোর্ডার, স্টিভ ওয়াহ আর রিকি পন্টিং। বোর্ডার সবার আগে, তারপর ওয়াহ, তারপর পন্টিং।
স্মিথও তাদেরই পথে ছিলেন। সেটা ভারতের বিপক্ষে বোর্ডার গাভাস্কার সিরিজের পঞ্চম ম্যাচ শুরুর আগেই। দুই ইনিংস মিলিয়ে স্রেফ ৩৮ রান করলেই হতো।
তার এই উপলক্ষ্যকে বরণ করে নিতে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড ভর্তি দর্শক তো বটেই, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া আমন্ত্রণ জানিয়েছিল আগের তিন ১০ হাজারি ক্লাবের ব্যাটারকে। তবে স্মিথের তাদের সামনে রেকর্ডটা গড়া হয়নি।
দুই ইনিংসেই শিকার বনে গেলেন প্রসিধ কৃষ্ণার। দুই ইনিংস মিলিয়ে রান উঠল ৩৭। নড়বড়ে নব্বই শুনেছেন-দেখেছেন আপনি। নিরানব্বইয়ে আউট হওয়া ব্যাটারের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। কিন্তু নড়বড়ে নয় হাজার নয়শো নিরানব্বই? বিষয়টা বিরল। আর তাতে নতুন সংযোজন হয় স্মিথের নাম।
আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তাই মাইলফলক থেকে এক রানের দূরত্বে ছিলেন স্মিথ। সেটা নিয়ে খুব বেশি না ভাবার কথা জানাচ্ছিলেন তিনি ম্যাচের আগে। এক রান আর এমন কী! সেটা করতেও বেশি সময় নেননি।
দুই ব্যাটারের বিদায়ের পর লাঞ্চ ব্রেকের একটু আগে উইকেটে এলেন। এরপর প্রবাথ জয়াসুরিয়ার ফুলার লেন্থের বলটা মিড অনে ঠেলে দিয়েই একটা রান নিয়ে নিলেন। ১০ হাজারি ক্লাবে পা রাখলেন সঙ্গে সঙ্গে। ক্রিকেট ইতিহাসে পঞ্চম দ্রুততম সময়ে তিনি রেকর্ডটা গড়লেন।
তার এই অর্জনে গলে হাজির দর্শকরা তাকে দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানালেন। তবে সেটা ঠিক সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে যতটা হতো ততটা হতো না। এই ম্যাচ নিয়ে অতো আয়োজনও করেনি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
তবে এই ম্যাচে মাইলফলকটা ছোঁয়া অন্যরকম একটা মাহাত্ম্য নিয়ে এসেছে স্মিথের জন্য। সিডনিতে বোর্ডার গাভাস্কার ট্রফিতে যদি ছুঁয়ে ফেলতেন, সেটা তাকে অন্য রকম কদর দিত তাকে, এটা ঠিক। কিন্তু সেটা হলে একটা ‘রেওয়াজ’ ভেঙে যেত। আজ বুধবার হয়ে যাওয়াতে ‘চক্রটা’ পূরণ হয়ে গেছে।
কী সেই রেওয়াজ? বোর্ডার, ওয়াহ, পন্টিং— নামগুলো খেয়াল করুন। কোনো মিল কি খুঁজে বের করতে পারছেন ১০০০০ টেস্ট রান বাদেও? হ্যাঁ, তাদের সবাই অধিনায়ক ছিলেন; তাদের ১০ হাজার ছোঁয়ার ম্যাচেও প্রত্যেকে টসটা করেছেন।
স্মিথ যদি সিডনিতে সে মাইলফলকটা ছুঁয়ে ফেলতেন, তাহলে এ চক্রটা ভেঙে যেত, কারণ তিনি যে বিশেষজ্ঞ ব্যাটার হিসেবে খেলেছিলেন সেদিন, টসটা করেছিলেন কামিন্স। সেই কামিন্স এই সিরিজে নেই চোটের কারণে, তাই ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক স্মিথ। মাঠে নেমেই গড়লেন রেকর্ড, যাতে এই চক্রটা রক্ষা পেয়ে গেল। দশ হাজারি ক্লাবে পা রাখলেন আরও এক ‘অজি অধিনায়ক’।