স্টিক হাতে মেয়ে দৌড়াচ্ছে। পাশ থেকে মায়ের চিৎকার-‘গোওওওল’। অন্য অভিভাবক বলছেন ‘আটকাও’। মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে ফাইভ-এ-সাইড হকি শুরু হয়েছে রোববার।
গোটা মাঠের তিন ভাগের এক ভাগে দুদিনের প্রতিযোগিতায় উৎসবের আমেজে ছেলে-মেয়েদের ১০ দলের হয়ে খেলছেন প্রায় ৬০ জন। সবাই পুরান ঢাকার। আরমানিটোলা স্কুল মাঠে আগে খেললেও নীল টার্ফে এই প্রথম। জাতীয় দলের সাবেক তারকা খেলোয়াড় ও বর্তমানে কোচ মাকসুদ আলম হাবুল আহমেদ বাওয়ানী একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে নিয়ে এসেছেন প্রায় ৩০ জনকে।
দুই বছর ধরে হকি খেলছেন নবম শ্রেণির ছাত্রী মুশরিফুন ফারিনা। এতদিন ঘাসের মাঠে খেলেছেন। টার্ফে খেললেন এই প্রথম। তার কথায়, ‘এখানে খেলতে এসে খুব ভালো লাগছে। খুব যে ভালো খেলি তা নয়। চেষ্টা করছি।’ একই ক্লাসের নাফিশা ইশার বলেন, ‘আরও অনেক খেলা থাকলেও হকি আমাকে টানে। তাই এই খেলাটিকেই বেছে নিয়েছি। ভালোই লাগে খেলতে।’
দশম শ্রেণির সিনথিয়া রহমান জাতীয় দলে খেলতে আগ্রহী, ‘আমার লক্ষ্য জাতীয় মহিলা হকি দলে সুযোগ পাওয়া। দেশের জন্য কিছু করতে চাই।’ নবম শ্রেণির রোকশার আক্তারেরও একই মত, ‘সুযোগ পেলে আমিও জাতীয় দলে খেলে দেশের জন্য কিছু করতে চাই।’ কোচও আশাবাদী, ‘ওরা শিখছে। ঠিকমতো পরিচর্যা করতে পারলে জাতীয় নারী দলের সম্পদ হবে ওরা।’
পাশে বসে খেলা দেখছিলেন জাতীয় হকি দলের সাবেক তারকা খেলোয়াড় ও জাতীয় কোচ কাওসার আলী। উৎফুল্ল তিনি বলেন, ‘মেয়েদের হকিতে ভবিষ্যৎ আছে। তার প্রমাণ আমরা পেয়েছি এশিয়া কাপে। পুরোনোদের পাশাপাশি নতুনদের নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে হবে। স্কুল হকি টার্ফে গড়াতে হবে। জেলা লিগে দৃষ্টি দিতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি ক্যাম্প করতে হবে। তাহলেই এর সুফল ভোগ করতে পারবে বাংলাদেশ।’