‘এক একটা ডট বল, এক টুকরো সোনা’ – কথাটা শন পোলকের, প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ক্রিস গেইলের কাছে বেধড়ক পিটুনি খেয়ে কথাটা বলেছিলেন। আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দাম যেমন বেড়েছে, আধুনিক ক্রিকেটে বোলারদের কাছে ডট বলের মূল্যও যেন বেড়েছে পাল্লা দিয়ে।

ডট বলের মূল্যই যদি সোনার মতো হয়, তাহলে উইকেটকে কী বলবেন? হীরা? তাহলে এক ওভারে একজন বোলার কয়টা হীরা শিকার করতে পারেন? এক? দুই? তিন? না, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক ওভারে সর্বোচ্চ চার উইকেট শিকারের নজির আছে। সেটাও এক-দু’বার নয় টেস্ট ওয়ানডে মিলিয়ে এই কীর্তির দেখা মিলেছে আট বার! 

আন্তর্জাতিক টেস্ট ক্রিকেটে একটি ওভারে ৪ উইকেট নেওয়ার ঘটনা এখন পর্যন্ত ছয়বার ঘটেছে। এর মধ্যে পাঁচবারই এই কীর্তি গড়েছেন ইংল্যান্ডের বোলাররা। মরিস আলোম প্রথমবারের মতো এই কীর্তি গড়েন। ১৯২৯-৩০ মৌসুমে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চে নিজের অভিষেক ম্যাচেই এই কীর্তি গড়েন। এরপর ১৯৪৭ সালে কেন ক্র্যানস্টন হেডিংলিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে, ১৯৬৫ সালে ফ্রেড টাইটমাস একই মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে, ১৯৭৮ সালে ক্রিস ওল্ড এজবাস্টনে পাকিস্তানের বিপক্ষে এবং ২০০০ সালে অ্যান্ডি ক্যাডিক হেডিংলিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই কীর্তি অর্জন করেন। এর বাইরে একমাত্র অ-ইংলিশ বোলার হিসেবে পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম ১৯৯০ সালে লাহোরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটি ওভারে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন।

ওয়াসিম আকরাম ও ক্রিস ওল্ড ৪ বলের মধ্যে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন, তবে দুজনেই হ্যাটট্রিকের বল হাতছাড়া করেন। ক্রিস ওল্ডের ক্ষেত্রে এটি নো বল হয়েছিল, আর আকরামের ক্ষেত্রে একটি ক্যাচ ফেলে দেওয়া হয়েছিল। মরিস আলোম ৪ উইকেট নেওয়ার পথে গড়েছিলেন হ্যাটট্রিক।

ওয়ানডে ক্রিকেটে একটি ওভারে ৪ উইকেট নেওয়ার ঘটনা মাত্র দু’বার ঘটেছে। যার একটিতে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের নাম। ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কার ম্যাচে চামিন্দা ভাস প্রথম তিন বলেই হ্যাটট্রিক করেন এবং চতুর্থ উইকেটটি নেন দুই বল পরে। এরপর গেল ২০২৩ এশিয়া কাপের ফাইনালে মোহাম্মদ সিরাজ নিয়েছিলেন এক ওভারে চার উইকেট। 

তবে দল হিসেবে এক ওভারে ৫ উইকেট শিকারের নজিরও আছে। ২০১০ সালের মে মাসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মোহাম্মদ আমির এই কীর্তি গড়েন। সেই ওভারে দুটি রান আউটসহ তিনি ৫টি উইকেট আদায় করেন। বোলার হিসেবে সবকটি উইকেট তার না হওয়ায় তিনি এই তালিকায় ধর্তব্যে আসেননি।