মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক পিন্টু
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৩ এএম
![মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক পিন্টু](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2024/11/18/8-(3)-673ac5dcc096d.jpg)
সংগৃহীত
মুখে অক্সিজেন মাস্ক। রাজধানী শংকরের ইবনে সিনা হাসপাতালে আইসিইউতে অচেতন অবস্থায় শুয়ে আছেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু। হার্ট, লিভার ও কিডনি-শরীরের তিনটি অঙ্গেই সমস্যা ধরা পড়েছে ৮৫ বছর বয়সি সাবেক এই ফুটবলারের।
রোববার সন্ধ্যায় হার্টে ব্যথা হলে মাটিতে পড়ে যান। এরপর কিংবদন্তি এ ফুটবলারকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসেন ছেলে তানভির। তিনি বলেন, ‘বাসায় হঠাৎ করেই বাবা মাটিতে পড়ে যান। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর চিকিৎসক জানিয়েছেন হৃদ্যন্ত্রে ব্যথা হওয়ায় এ অবস্থা হয়েছে। এছাড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায়, লিভার ও কিডনিতে সমস্যা রয়েছে।’ জানা যায়, আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন জাকারিয়া পিন্টু।
জাকারিয়া পিন্টুর মাঠের ও মাঠের বাইরের সতীর্থ এবং তারকা ফুটবলার প্রতাপ শঙ্কর হাজরা জানিয়েছেন, ‘পিন্টু ভাই বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি। আমি তাকে দেখে এসেছি। তার এক ছোট ভাইও ডাক্তার। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, ওনার (পিন্টুর) হার্ট, লিভার ও কিডনি খারাপ হয়ে গেছে। তার চিকিৎসা চলছে। আমরা সবাই তার সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছি।’
মুক্তিযুদ্ধে বাংলার আপামরসাধারণ শুধু অস্ত্র হাতেই নয়, তারা লড়েছেন গান, কবিতা ও ফুটবল পায়ে নিয়েও। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালীন ফুটবলের জাদু দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরির কাজ করেছিল ‘স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল’।
সেই দলের অকুতোভয় অধিনায়ক ছিলেন জাকারিয়া পিন্টু। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে জাকারিয়া পিন্টু ও তার নেতৃত্বাধীন ‘স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের’ নাম অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে চিরকাল। তবে শুধু স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের হয়ে নন, একজন অসাধারণ ফুটবলার এবং অধিনায়ক হিসাবেও স্মরণীয় হয়ে থাকবেন সাবেক এই ডিফেন্ডার।
১৯৭১ সালে তার নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল ভারতের নদীয়সহ বিভিন্ন রাজ্য ও জেলায় ১৬টি ম্যাচে অংশ নিয়ে ১২টিতে জিতেছিল। ওই ম্যাচগুলো খেলে যে অর্থ সংগ্রহ হয়েছিল, তা তৎকালীন মুক্তিযুদ্ধ তহবিলে দিয়েছিলেন তারা।
১৯৭২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা স্টেডিয়ামে রাষ্ট্রপতি একাদশ ও মুজিবনগর একাদশের মধ্যে প্রথম ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। মুজিবনগর একাদশের অধিনায়ক ছিলেন এই ডিফেন্ডার। এছাড়া বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের প্রথম অধিনায়ক ছিলেন তিনি।
১৯৭৩ সালে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত ১৯তম মারদেকা ফুটবলে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেন। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল, বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক এবং একজন দুর্দান্ত খেলোয়াড় হিসাবে তিনি ইতিহাস হয়ে আছেন। খেলোয়াড়ি জীবন শেষে সংগঠকও ছিলেন। ঐতিহ্যবাহী মোহামেডানের পরিচালক পদেও কাজ করেছেন সাবেক এই তারকা ফুটবলার।