আফগানিস্তান শেষ সাত বছরে শারজাহতে কোনো সিরিজই হারেনি। যুদ্ধবিধ্বস্ত এ দেশটির কাছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের এ স্টেডিয়াম এখন রীতিমতো ঘরবাড়ির সমতুল্য। এটি তাদের নিজেদের মাঠ বলেও মনে করেন রশিদ খানরা। আর শাহজাহের এ মাঠে দিনে দিনে দুর্গে পরিণত করেছেন আফগান স্পিনাররা। ঐতিহ্যগতভাবেই কিছুটা ধীরগতির এ উইকেটে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে স্পিন শক্তিতেই।
শারজাহ এ মাঠের পরিসংখ্যান বলছে, ওয়ানডে ফরম্যাটে রানপ্রতি উইকেটের হিসাবে সবচেয়ে এগিয়ে থাকছেন স্পিনাররাই। আরও স্পষ্ট করে বললে লেগব্রেক এবং অফব্রেক বোলাররা।
শেষ ৩০ ওয়ানডের পরিসংখ্যানে জানা গেছে, লেগস্পিনাররা এ মাঠে উইকেট পেতে খরচ করেছেন ২৫-এর কম রান। ওভারপ্রতি দিয়েছেন সাড়ে চারের কম রান। অন্যদিকে অফস্পিনে এ উইকেট এসেছে গড় হিসাবে ৩০-এর কম রান। অর্থডক্স বোলারদের ইকোনমি রেট কিছুটা বেশি হলেও উইকেটপ্রতি তারা খরচ করেছেন ২৯ রান। আবার পেসাররা উইকেট পেতে গড়ে খরচ করেছেন ৩৯ রান। সবচেয়ে বেশি উইকেটপ্রতি ৬০ রান খরচ করেছেন চায়নাম্যান বোলাররা।
এমন এক পিচে বাংলাদেশকে নামতে হচ্ছে পুরোপুরি পেসবান্ধব বোলিং লাইনআপ নিয়ে। স্কোয়াডে থাকলেও ভিসা জটিলতায় আরব আমিরাতে যাওয়া হয়নি পেসার নাহিদ রানা ও স্পিনার নাসুম আহমেদের। স্বাভাবিকভাবেই মাঠে বাংলাদেশকে নামতে হচ্ছে দুই স্পিনার কম্বিনেশন নিয়ে। মিরাজ ও রিশাদের একে অপরের সঙ্গে জুটি বেঁধে খেলার অভিজ্ঞতা কম থাকায় এ স্পিন আক্রমণ নিয়েও কিছুটা দুশ্চিন্তা হয়তো থেকেই যাচ্ছে।
এ ছাড়া বাড়তি স্পিনার নেওয়ার কোনো সুযোগ প্রথম ম্যাচে পাচ্ছেন না কোচ ফিল সিমন্স। সাকিবের অনুপস্থিতি এরই মাঝে বাংলাদেশের জন্য বেশ বড় এক ধাক্কা হয়ে এসেছে। এমনকি বাড়তি একজন বিশেষজ্ঞ ব্যাটারের জায়গাতেও বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট সাকিবকে মিস করবে, সেটি বলাই বাহুল্য।
বর্তমানে যে ১৩ ক্রিকেটার আছেন, সেখানে স্পিনার দুজন। সে ক্ষেত্রে দুই স্পিনারের সঙ্গে তিন পেসার খেলাতে হবে টিম ম্যানেজমেন্টকে ৫০ ওভার বোলিং কোটা পূরণের জন্য। এমনকি পেসারদের মাঝেও বিকল্প নেই। স্কোয়াডে তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান ও শরিফুল ইসলাম থাকছেন শুরুর একাদশে তা নিশ্চিত। এ ক্ষেত্রে স্পিনসহায়ক এ মাঠে বিকল্প হতে পারেন বর্ষীয়ান অলরাউন্ডার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। যদিও তাকে দিয়ে পুরো ওভারের কোটা অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত পূরণ করাবেন কিনা তা নিয়ে আছে প্রশ্ন।
অবশ্য স্লো মিডিয়াম ফাস্ট বোলার সৌম্য সরকারকেও চাইলে লাগাতে পারে বাংলাদেশ। তবে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বোলিং আক্রমণ এবং পরিকল্পনায় অনেকটা পিছিয়ে থেকেই সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে মাঠে নামতে হচ্ছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের।