সেদিন বিশ্ব ক্রিকেট পেয়েছিল আফ্রিদির আগমনী বার্তা
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৪, ০৪:২৪ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
১৯৯৬ সাল। সে বছরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন এক তরুণ সাহিবজাদা মোহাম্মদ শহিদ খান আফ্রিদি। ১৯৯৬ সালের ২ অক্টোবর কেনিয়ার বিপক্ষে অভিষেক হয় তার। প্রথম ম্যাচে ব্যাটিংয়ে সুযোগ পাননি। কেনিয়ার বিপক্ষে জয়ের ম্যাচে দলের ৮ ব্যাটার ব্যাট করলেও সুযোগ হয়নি আফ্রিদির। তখনই হয়তো তরুণ ছেলেটি বুঝে গিয়েছিলেন কঠিন বাস্তবতাটা।
বুঝে ছিলেন ব্যাটিংয়ে সুযোগ দিতে বাধ্য না করলে এমন নিচের দিকেই ব্যাট করতে হবে তাকে। আফ্রিদি অপেক্ষায় থাকলেন ব্যাটিংয়ে সুযোগ পাওয়ার। শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন নম্বরে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে গেলেন তিনি। সুযোগটা কেবল লুফেই নিলেন না বরং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রীতিমতো হইছই ফেলে দিলেন এই তরুণ। ৩৭ বলে ১১ ছক্কা ও ৬ চারে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে বিশ্বকে জানান দিলেন আফ্রিদি আসছে, ‘ক্রিকেটে ব্যাট হাতে তাণ্ডব চালাতে, বোলারদের শাসন করতে’।
কেনিয়ার নাইরোবিতে হওয়া ওই ম্যাচে আফ্রিদি ঝড়ের মুখে পড়ল শ্রীলংকা। আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে তখনও তিনশ+ স্কোর নিয়মিত হয়নি। সেই পাকিস্তান সেদিন আফ্রিদির কল্যাণে স্কোরবোর্ডে জমা করল ৯ উইকেটে ৩৭১ রান। যা ছিল ওয়ানডেতে পাকিস্তানের দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।
পাকিস্তানকে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রান পাইয়ে দেওয়ার দিনে আফ্রিদি গড়লেন ওয়ানডেতে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। বিশ্ব ক্রিকেটে রীতিমতো হইছই পড়ে গেল। পাকিস্তান পেল নতুন এক সাহসী তরুণ ক্রিকেটারকে।
ওই ম্যাচে ৪০ বলে ১১ ছক্কা ও ৬ চারে ২৫৫ স্ট্রাইক রেটে আফ্রিদি করেন ১০২ রান। যা তখন পর্যন্ত কেউ চিন্তাও করতে পারেনি। এমন ম্যাচে দাপুটে জয়ই পেয়েছিল পাকিস্তান। শ্রীলংকা ম্যাচ হেরেছিল ৮২ রানের বড় ব্যবধানে। তবে সে সব ছাপিয়ে তখন শিরোনাম হয়েছিল আফ্রিদি। আফ্রিদির সেই রেকর্ড ক্রিকেট বিশ্বে বহুদিন অক্ষত ছিল।
সেই আফ্রিদি পরবর্তীতে দীর্ঘদিন সার্ভিস দিয়েছেন পাকিস্তানকে। পাকিস্তানে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়েও আফ্রিদির ছিল আগ্রণী ভূমিকা। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে পাকিস্তানকে নেতৃত্বও দিয়েছেন তিনি। পাকিস্তানের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলার আগে পাকিস্তানের হয়ে ২৭টি টেস্ট, ৩৯৮টি ওয়ানডে ও ৯৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। পথে গড়েছেন বহু কীর্তি।
এক সময় তো আফ্রিদির নামের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল বুম বুম আফ্রিদি। ব্যাট হাতে প্রতিপক্ষের বোলারদের কচুকাটা করতে পারতেন বলে ভক্তরা ভালোবেসে তাকে এই নামে ডাকত। অবসর বলার এত বছর পরও এখনও নানা কারণে বুম বুম আফ্রিদিকে মিস করে তার ভক্তরা।