মাইস আলবোস্তামি। ছবি: সংগৃহীত
গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে ইসরাইল। লাখো ফিলিস্তিনির মতো দেশটির নারী কারাতে চ্যাম্পিয়ন মাইস আলবোস্তামির জীবনও এলোমেলো হয়ে যায়। আগের দিন কারাতে প্রতিযোগিতা জিতে আনন্দ-উৎসব করা মাইসকে তখন অনিশ্চিত যাত্রা করতে হয়।
১৮ বছরের মাইস এবং তার পরিবারকে ঘর ছাড়তে হয়। তার ভাষায়, ‘বোমাবর্ষণে নারকীয় অবস্থার সৃষ্টি হয়। বারবার এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পালাতে বাধ্য হই আমরা। প্রতিটি ঘণ্টাকে একেক বছরের মতো মনে হচ্ছিল।’
ইসরাইলি হামলায় তার কোচ এবং বন্ধুকে হারান মাইস, ‘প্রথম ১০ দিনেই আমি আমার কোচ জামাল আল-খাইরিকে হারাই। তার নাতনীও নিহত হন। সে আমার সঙ্গে কারাতে প্রশিক্ষণে অংশ নিতো।’
মাইস এখন মিসরের রাজধানী কায়রোর শহরতলীতে তার পরিবারের সঙ্গে বসবাস করছেন। যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে তিনি ও তার পরিবার এখানে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন।
পরিবার নিয়ে মাঠে এসেও তুরস্ককে জেতাতে পারলেন না এরদোগান
তবে এমন কঠিন সংগ্রামের মধ্যেও দমে যাননি মাইস। বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, তিনি নিয়মিত প্রশিক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং আশা করছেন কোনো একদিন আন্তর্জাতিক প্রাঙ্গণে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাবেন।
ফিলিস্তিনি জাতীয় কারাতে কোচ হাসান আল-রাইয়ি গাজায় আটকা পড়লেও মিসরের জাতীয় দলের সঙ্গে মাইসের যোগাযোগ করিয়ে দিন। যার ফলে মাইসের প্রশিক্ষণে কোনো ভাঁটা পড়েনি।
মাইস বলেন, ‘মিসরে আমার কোচরা আমাকে সন্তানের মতো দেখেন। তারা আমাকে পরবর্তী চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত করে তুলছেন।’
মাইসের এখন একটাই লক্ষ্য, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়িয়ে ইসরাইলি আগ্রাসনের ভয়াবহতার কথা তুলে ধরা।
হজ পালনের মুহুর্তকে ‘আজীবনের যাত্রা’ বলছেন সানিয়া
এএফপিকে নিজের লক্ষ্যের কথা জানিয়ে মাইস বলেন, ‘আমি ফিলিস্তিনের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ফিলিস্তিনের পতাকা ওড়াতে চাই। ফিলিস্তিনিদের আশা-প্রত্যাশার কথা সবার নজরে আনার জন্য আমি সর্বাত্মক চেষ্টা চালাব। এটা আমার দেশের জন্য, ফিলিস্তিনি শহিদ ও আহতদের জন্য আমার সংগ্রাম।’
আপাতত মাইসের ধ্যানজ্ঞান আগস্টে মিসরের জাতীয় কারাতে প্রতিযোগিতা। সেখানে অংশ নিতে চান মাইস। তবে যেহেতু মিসরের কারাতেরা পারদর্শিতায় অনেক এগিয়ে, তাই এটাকে ‘কঠিন পরীক্ষা’ বলছেন এই ক্রীড়াবিদ। তবে কিনা জীবনযুদ্ধে প্রতিনিয়ত লড়াই করে যাওয়া মাইসের যে কঠিনের সঙ্গেই বসবাস।