মাহমুদউল্লাহ, সাম্প্রতিক ছবি
টপ অর্ডাররা যেদিন খেলা গড়ে দিয়ে যান সেদিন ফিনিশারদের কাজটা হয়ে যায় সহজ। চাপ মুক্ত হয়ে শেষ দিকে দলের সংগ্রহটাকে একটা শক্ত অবস্থানে পৌঁছে দেন তারা। তবে বাংলাদেশের মতো মাঝারি মানের দলে এমনটা নিয়মিত চোখে পড়ে না। শুরুতে দ্রুত উইকেট হারানোর ঘটনা অনেকটা নিয়মিতই বলা চলে।
স্বাভাবিকভাবেই তাই শুরুতে মন দিতে হয় উইকেট বাঁচানোতেই, ইনিংস গড়ায়; আর টেল-এন্ডার নিয়ে খেলাটা শেষ করে আসায়। যা বেশ কঠিনই বটে। টেল এন্ডারদের নিয়ে এমন কাজ নিয়মিতই করতে হচ্ছে টাইগার ব্যাটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে। আর সেই কাজ করতে গিয়ে মাঝে মাঝেই ব্যর্থও হতে হচ্ছে তাকে। শুনতে হচ্ছে সমালোচনাও। এই যেমন চলতি বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে পারলেও, পারেননি দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে। যা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। যেন ম্যাচ শেষ করে আসার দায়িত্বটা কেবলই রিয়াদের।
অবশ্য অন্যদের দিকে তাকানোর সুযোগই তো নেই সমর্থকদের। দিনশেষে ৩৮ বছরের একজনের ওপরই নির্ভর করতে হচ্ছে বাংলাদেশ দলকে। এখনও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ওপরই নির্ভর করছে দল। শেষটা তিনি রাঙাতে পারলেই, ম্যাচ শেষ করে আসতে পারলেই, হাসি ফুটছে সমর্থকদের মুখে। যা দীর্ঘ ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলাতেও হাসিমুখে করে যাচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দায়টা নিচ্ছেন নিজের কাঁধেই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারিতে আউট হওয়ার পর মাহমুদউল্লাহর মাথায় হাত দেওয়া, বলছিল সে কথাই।
অবশ্য পরের ম্যাচে ঠিকই ফের দায়িত্ব নিয়েছেন। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সাকিবের সঙ্গে নেমে ২৫ রানের ইনিংস খেলে দলকে রেখে গেছেন ভালো অবস্থানে। যা পরবর্তীতে লড়াকু পুঁজি পাইয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশকে।
এই বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহই বাংলাদেশের অন্যতম কাণ্ডারি। যার ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের সাফল্য। অথচ এই মাহমুদউল্লাহকে সবশেষ বিশ্বকাপে বিবেচনাই করেনি ম্যানেজমেন্ট। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে এই বিশ্বকাপে তিনিই এখন বাংলাদেশর আস্থার প্রতীক। হয়তো নিজের শেষ বিশ্বকাপটাই খেলে ফেলছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
সত্যিই যদি তা হয়, আচমকা বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচে বিদায় বলে দেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ! কিংবা আরও দুয়েকটা সিরিজ পরে! তাহলে শেষদিকে কার ওপর তাকিয়ে টিভিতে চোখ রাখবে সমর্থকরা? কে বিপদে হাল ধরে দলকে এভাবে টেনে তুলবে বারবার? হয়তো কেউ আসবে, তবে লম্বা সময় যে এই মাহমুদউল্লাহকে মিস করবে বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকরা- সেটা নিশ্চিত করেই বলা যায়।