হাসি-রসিকতায় ড্রেসিংরুম মাতিয়ে রাখেন মাহমুদউল্লাহ। ধারাবাহিক ব্যর্থতায় গত কদিনে দলে গুমোট একটা আবহ লক্ষ্য করা গেছে। এই দৃশ্যপটে মাহমুদউল্লাহ ব্যতিক্রম। যেন বিষাদে ডুবে থেকে, হতাশায় ভেঙে পড়ার কোনো অর্থ খুঁজে পাননি তিনি। নিজের মতো করে হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করছেন। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপেও মাহমুদউল্লাহকে এমন দেখা গিয়েছিল—বিধ্বস্ত দলের মধ্যে তিনি জ্বলেছিলেন উজ্জ্বল তারা হয়ে।
২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে তার দলে থাকা না থাকা নিয়ে যে আলোচনা-বিতর্ক, ওই কঠিন বাস্তবতা যখন পেরিয়ে এসেছেন, মাহমুদউল্লাহর এখন দুশ্চিন্তা নয়, এগিয়ে চলা শুধুই উপভোগের মন্ত্রে। দলের বাকিদের সঙ্গে মাহমুদউল্লাহর পার্থক্য এখানেই।
যে বয়সে তিনি দাঁড়িয়ে, ২০ ওভারের বিশ্বকাপ সামনে আর খেলা হবে কিনা কে জানে! শেষ ভেবেই হয়তো এবার ভিন্ন কিছু উপহার দেওয়ার প্রত্যয় মাহমুদউল্লাহর কণ্ঠে, ‘চেষ্টার কমতি থাকে না। আশা করি, এবার ভালো কিছুই করব। ট্রফি জিততে ভাগ্যের সহায়তা লাগে। খুব কাছাকাছি গিয়েছিলাম, তবে পারিনি। আমাদের সমর্থন করলে যেকোনো কিছু আমরা করতে পারি।
১৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে উপভোগ্য সময় যতটা পেয়েছেন, যন্ত্রণার পাল্লা তার চেয়ে বেশিই ভারি ছিল। মাহমুদউল্লাহ তাই বিসিবিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সংগ্রাম তো আলহামদুলিল্লাহ আমার ক্যারিয়ারজুড়েই কম-বেশি ছিল। সব সময় আল্লাহর ওপর বিশ্বাস করি। আল্লাহর কাছে সব সময় আমার যা কিছু বলার বলি এবং সব সময় বিশ্বাস করি, আল্লাহ সর্বোত্তম পরিকল্পনাকারী। আমার ভালো সময়, খারাপ সময়—সবকিছুরই একটা শিক্ষণীয় বিষয় থাকে। এটা বিশ্বাস করি।
আরব আমিরাতে হওয়া ২০২২ এশিয়া কাপে ভালো না খেলায় মাহমুদউল্লাহ বাদ পড়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। ওই বিশ্বকাপ না খেলার দুঃখ এখনো ভুলতে পারেন না তিনি, ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যখন ছিলাম না, খারাপ লেগেছিল। মনে হয়েছিল, দলে আমি থাকতে পারতাম। যাই হোক, সেটা হয়নি। সেটার জন্য আমার কোনো কষ্ট নেই। আমি সব সময়ই আলহামদুলিল্লাহ। যেটা বলি যে দলের জন্য যতটুকু করতে পারি, সেটা আমার উপস্থিতি দিয়ে হোক বা পারফরম্যান্স দিয়ে কিংবা অভিজ্ঞতা দিয়ে হোক— সর্বোচ্চটা সব সময় নিংড়ে দিই।
নিংড়ে দেওয়ার আরেকটা দারুণ সুযোগ মাহমুদউল্লাহ পাচ্ছেন এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। নিউইয়র্কে ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে শুধু তার ব্যাটই হেসেছিল। এবার মূল মঞ্চেও রাঙানোর অপেক্ষায় মাহমুদউল্লাহ।