ছবি: সংগৃহীত
২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর পর এ নিয়ে নবমবারের মতো মাঠে গড়িয়েছে ২০ ওভারের বৈশ্বিক আসর। প্রথমবারের মতো যেই আসরের আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন মুলুকে ক্রিকেট ছড়িয়ে দিতে খেলাটিকে আরও জমজমাট করে তুলতে মূল দায়িত্বটা থাকবে ব্যাটারদের ওপরই। কেননা, চার-ছক্কায় দর্শকরা বিনোদিত হলেই যে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে যাবে ক্রিকেট।
টি-টোয়েন্টিকে মূলত বলা হয়, ব্যাটসম্যানদের খেলা। সেই ব্যাটসম্যানদের খেলায় এবারও রয়েছে এমন বেশ কয়েকজন ব্যাটার। যারা প্রতিপক্ষের বোলারদের নিজেদের দিনে কাঁদিয়ে ছাড়তে পারেন। ম্যাচটা একা হাতেই নিজেদের দিকে হেলিয়ে দিয়ে বড় মঞ্চে দলকে সাফল্য এনে দিতে পারেন। বিশ্বকাপে বোলারদের ত্রাস হতে পারেন এমন পাঁচ ব্যাটারকে নিয়েই এ প্রতিবেদন।
যেখানে রাখা হয়েছে ইংল্যান্ড অধিনায়ক জশ বাটলার, দক্ষিণ আফ্রিকার হেনরিখ ক্লাসেন, ভারতের বিরাট কোহলি, পাকিস্তানের বাবর আজম ও অস্ট্রেলিয়ার ট্রাভিস হেডকে।
জস বাটলার (ইংল্যান্ড)
সদ্যই আইপিএল মাতিয়েছেন জস বাটলার। ১১ ইনিংসে ৩৯.৮৯ গড়ে করেছেন মোট ৩৫৯ রান। যেখানে স্ট্রাইক রেট ১৪০.৭৮। টুর্নামেন্টে দুটি সেঞ্চুরিও আছে তার। অর্থাৎ নিজের দিনে একাই ম্যাচ নিজেদের দিকে হেলিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য আছে তার। বিশ্বকাপ শুরুর আগে যেই প্রমাণ তিনি দিয়েছেন পাকিস্তান সিরিজেও। যে দুটি ম্যাচ তিনি খেলেছেন, তার মধ্যে তার রান ৮৪ ও ৩৯। অর্থাৎ হিসাবটা পরিষ্কার— ম্যাচে ব্যবধান গড়ে দেওয়ায় অগ্রণী ভূমিকায় পালন করবেন বাটলার। প্রতিপক্ষের বোলারদের তাই সাবধানেই থাকতে হবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক বাটলারের বিপক্ষে বল করার আগে।
হেনরিখ ক্লাসেন (দক্ষিণ আফ্রিকা)
মূলত মিডল অর্ডারে ব্যাট করে থাকেন প্রোটিয়ার এ ব্যাটার। স্বাভাবিকভাবেই তাই তার মূল দায়িত্বটা থাকে ম্যাচ শেষ করে আসা। আর সেই কাজটা বেশ দক্ষতার সঙ্গেই করেন তিনি। ক্লাসেনঝড়ের মুখে পড়লে খবরই আছে বোলারদের। কেননা, নিজের দিনে প্রতিপক্ষের বোলারদের কচুকাটা করতে একটুও দ্বিধা করেন না তিনি। বিশাল সব ছক্কায় দর্শকদের বিনোদন দেওয়ার দায়িত্বটা যেদিন কাঁধে তুলে নেন ক্লাসেন, সেদিন আর রক্ষা নেই কোনো বোলারের। সদ্য শেষ হওয়া আইপিএলে ১৬ ম্যাচে ৩৯ গড় ও ১৭১ স্ট্রাইক রেটে ৪৭৯ রান করেছেন ক্লাসে।
বিরাট কোহলি (ভারত)
সময়ের সেরা ব্যাটারদের তালিকা করলে সেখানে কোহলিকে জায়গা না দিয়ে উপায় নেই। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বাধিক রান নিজের নামের পাশে রেখে বিশ্বকাপ শুরু করবেন কোহলি। তা ছাড়া কোহলি নিজেও আছেন দারুণ ছন্দে। সদ্য শেষ হওয়া আইপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। যেই স্ট্রাইক রেট নিয়ে সমালোচিত হতে হতো তাকে, সেই স্ট্রাইক রেটেও বেশ মনোযোগ দিয়েছেন তিনি। যা স্বাভাবিকভাবেই দুশ্চিন্তার কারণ প্রতিপক্ষের বোলারদের জন্য। তাছাড়া ম্যাচ নিজেদের দিকে হেলানোর বিচারে কোহলির দ্বিতীয় বিকল্প নেই খুব একটা। সদ্য শেষ হওয়া আইপিএলে ১৫ ম্যাচে ৭৪১ রান করে কোহলি জিতেছেন অরেঞ্জ ক্যাপ। যেখানে তার সর্বোচ্চ ইনিংস ১১৩ রানের। তবে সবচেয়ে আশার কথা, কোহলি টুর্নামেন্ট শেষ করেছেন ১৫৪.৭০ স্ট্রাইক রেটে।
বাবর আজম (পাকিস্তান)
ব্যাট হাতে লম্বা সময় ধরেই পাকিস্তানের সেরা ক্রিকেটার তিনি। সম্প্রতি টি-টোয়েন্টিতে রোহিত-কোহলিদেরকেও চোখ রাঙাচ্ছেন এ ব্যাটার। ইনিংসের শুরুতে নেমে ম্যাচ গড়ে দেওয়ার সামর্থ্য তাকে করেছে অন্য যে কারোর চেয়ে আলাদা। তবে বাবর আজমের সবচেয়ে বড় সমস্যা স্ট্রাইক রেট। তবে সবশেষ আয়ারল্যান্ড সিরিজে দেখা গেছে সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠেছেন বাবর। আর সেটা যদি বিশ্বকাপেও ধরে রাখতে পারেন তিনি, তবে খবরই আছে বোলারদের। টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত ১১৯ ম্যাচে ৪১ গড় ও ১৩০ স্ট্রাইক রেটে মোট ৪ হাজার ২৩ রান করেছেন তিনি।
ট্রাভিস হেড (অস্ট্রেলিয়া)
সময়ের সেরা বিধ্বংসী ওপেনারদের একজন ট্রাভিস হেড। অস্ট্রেলিয়া দলের অন্যতম হাতিয়ার। ট্রাভিস হেড যেদিন খেলেন সেদিন দলের কারও কিছু করতে হয় না। তবে সমস্যা হলো— সবদিন তিনি খেলতে পারেন না। সবশেষ আইপিএলেও যা দেখা গেছে। বলতে গেলে ব্যাট হাতে প্রতিপক্ষের বোলারদের শাসন করে হায়দরাবাদকে ফাইনালে তুলেছিলেন হেড। সেই তিনি ফাইনালে ফিরেন শূন্য রানে। ম্যাচ জিতেনি তার দলও। তাই হেডকে নিয়ে সেই ভয় থাকছেই। তবে নিশ্চিতভাবেই যেই ছন্দে রয়েছেন তিনি, তাতে তাকে মোকাবিলা করার আগে দুবার ভাবতে হবে বোলারদের। সদ্য শেষ হওয়া আইপিএলে ১৫ ইনংসে ১৯১ স্ট্রাইক রেটে ৪০ গড়ে মোট ৫৬৭ রান করেছেন হেড।