সিলেটে রাজত্ব করেছেন পেসাররা। চট্টগ্রামে কন্ডিশন সম্পূর্ণ ভিন্ন হতে পারে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেট হতে পারে স্পিন সহায়ক। সেই সঙ্গে সহায়তা পেতে পারেন ব্যাটাররাও। তেমন আভাসই পাওয়া গেছে।
যদি তাই হয়, তাহলে বাংলাদেশের জন্য এটি খুবই ভালো খবর। দ্বিতীয় টেস্টে খেলবেন সাকিব আল হাসান। তার প্রত্যাবর্তনে স্বাগতিকদের আÍবিশ্বাস বাড়বে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
একে তো সাকিব বাংলাদেশের সেরা ব্যাটারদের একজন। তারওপর চট্টগ্রামে বোলার হিসাবেও অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ।
সাগরিকায় ১৯ টেস্টে তার শিকার ৬৪ উইকেট, যা এই ভেন্যুতে যে কোনো বোলারের সর্বোচ্চ। তাই সিলেটে প্রথম টেস্টে ৩২৮ রানে হেরে যাওয়া নাজমুল হোসেনরা সিরিজে সমতা আনার রসদ ও আত্মবিশ্বাস দুই-ই পাচ্ছেন চট্টগ্রামে। দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট আজ শুরু সকাল ১০টায়।
গত বছর তামিম ইকবাল ওয়ানডে অধিনায়কত্ব ছাড়ার পর থেকে তিন সংস্করণে অধিনায়ক হিসাবে বিসিবির প্রথম পছন্দ ছিলেন সাকিব। ভারতে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারের নেতৃত্বে খেলেছে বাংলাদেশ। আর টি ২০ ও টেস্টে আগে থেকেই তার কাঁধে ছিল নেতৃত্ব।
তবে চোখের সমস্যায় সব হিসাব পালটে যায়। সব ফরম্যাটের নেতৃত্ব ছাড়েন। নাজমুল হোসেন শান্ত ওয়ানডে ও টি ২০ ফরম্যাটে ভালো করার পর আসল লড়াইটা টের পেয়েছেন টেস্টে। কঠিন পরীক্ষায় অবশ্য শুরুতে হোঁচট খেয়েছেন তিনি। ব্যাটিং ব্যর্থতায় বড় হারের ম্যাচে বোলিংয়ের সময়ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিসের পালটা আক্রমণের কোনো জবাব দিতে পারেনি বাংলাদেশ।
সাকিব ফেরায় দ্বিতীয় টেস্টে নাজমুলের জন্য অনেক কিছু সহজ হয়ে যাবে। একজন বাড়তি ব্যাটারও পাবে বাংলাদেশ। দলের স্বস্তির কথা অকপটে স্বীকার করলেন ভারপ্রাপ্ত কোচ নিক পোথাস।
শুক্রবার তিনি বলেন, ‘যে কোনো দলেই সাকিবকে পাওয়া ভাগ্যের বিষয়। আমরা তাকে স্বাগত জানিয়েছি। তার মতো একজন ক্রিকেটারকে ড্রেসিংরুমে পাওয়া দারুণ কিছু। তার শক্তি সবার মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তার অভিজ্ঞতা মূল্যবান। যখনই সে ফিরে আসে নিজের সর্বোচ্চটা উজাড় করে দেয়। আমরা তার সঙ্গও উপভোগ করি।’
তিনি বলেন, ‘সাকিব যখন দলে ফেরে তখন স্বস্তি নিয়ে আসে। সঙ্গে নাজমুল এমন একজনকে পেয়েছে যার কাছ থেকে বাড়তি তথ্য পেতে পারে। কারণ সাকিব এই মুহূর্তে দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। সে স্বস্তি নিয়ে এসেছে। বিশ্বের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়।’
সিলেট টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে মুমিনুল হক ছাড়া আর কেউই ব্যাট হাতে ভালো করতে পারেননি। শ্রীলংকার বোলারদের সামনে অসহায় আÍসমর্পণ করেছেন। এমন বাজে ব্যাটিংয়ের কারণ জানা নেই নাজমুলের। বোলাররাও শুরুতে উইকেট এনে দিলেও মিডল অর্ডারে কামিন্দু মেন্ডিস ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে সহজে আউট করতে পারেননি তারা। সাকিব ফেরায় শাহাদাত হোসেনকে একাদশের বাইরে যেতে হতে পারে। পেসার শরীফুল ইসলামকে বিশ্রাম দিতে শেষ ম্যাচে তাকেও একাদশে না-ও রাখতে পারে টিম ম্যানেজমেন্ট।
এদিকে শ্রীলংকার অন্যতম সেরা পেসার কাসুন রাজিথা নেই শেষ ম্যাচে। বাংলাদেশের বিপক্ষে সব সময় দুর্দান্ত এই পেসার। তার পরিবর্তে দলে ঢুকেছেন আসিথা ফার্নান্ডো। চট্টগ্রামের উইকেট ব্যাটিং সহায়ক হয়। এই টেস্টেও ব্যাটাররা সুবিধা পাবেন বলে ধারণা রয়েছে।
শ্রীলংকার অধিনায়ক ধনঞ্জয়া বলেন, ‘উইকেট দেখে ভালো লেগেছে। ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো মনে হয়েছে। আমাদের টপঅর্ডার যদি এই ম্যাচে রান করে, তাহলে হয়তো আমাকে ব্যাটিংয়েই নামতে হবে না। আমার টপঅর্ডার নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তারা আগের ম্যাচে খারাপ করলেও এই ম্যাচে ভালো করবে।’
বাংলাদেশে কখনো কোনো টেস্ট ম্যাচ হারেনি শ্রীলংকা। কিন্তু চট্টগ্রামে তাদের সামলাতে হবে সাকিবকে। তাই পরিসংখ্যান যদি হয় সফরকারীদের পক্ষে, তাহলে স্বাগতিকদের পক্ষে আত্মবিশ্বাস।