দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিশ্চিত হারের ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অনবদ্য সেঞ্চুরি। ৬৭ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করার পর লেজের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে লড়াই করে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন রিয়াদ।
ওয়ানডে ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ২২৫তম ম্যাচে চতুর্থ সেঞ্চুরি হাঁকান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তিনি ১০৪ বলে ১০টি চার আর ৩টি ছক্কার সাহায্যে বিশ্বকাপের বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৩টি সেঞ্চুরি হাঁকান রিয়াদ।
৩৮৩ রানের টার্গেট তাড়ায় ৮১ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে যায় বাংলাদেশ। দল যখন পরাজয়ের প্রহর গুনছে তখন জ্বরে ওঠেন সাবেক অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে তিনি একাই লড়াই করে যান।
প্রোটিয়াদের বিপক্ষে আসা-যাওয়ার মিছিলে অংশ নেন, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, লিটন কুমার দাস ও মেহেদি হাসান মিরাজ।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিততে হলে ভাঙতে হবে রেকর্ড। ক্রিকেট বিশ্বকাপে ৩৪৫ রানের বেশি টার্গেট তাড়ায় জয়ের ইতিহাস নেই। চলতি বিশ্বকাপে শ্রীলংকার বিপক্ষে এমন নজির গড়ে পাকিস্তান।
আজ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিততে হলে পাকিস্তানের সেই রেকর্ড ভাঙতে হবে টাইগারদের। ৩৮৩ রানের পাহাড় ডিঙাতে নেমে ওপেনিংয়ে ৩০ রান করে বাংলাদেশ।
এরপর মাত্র ১ রানের ব্যবধানে হারায় ৩ উইকেট। একের পর এক সাজঘরে ফেরেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম, ওয়ানডাউনে ব্যাটিংয়ে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
৩ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৩১ রান। এরপর ২৭ রানের ব্যবধানে বাংলাদেশ হারায় আরও ২ উইকেট। ১৭ বলে ৮ রান আর ৪৪ বলে ২২ রানে ফেরেন ওপেনার লিটন দাস। দলীয় ৮১ রানে ফেরেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তিনি ১৯ বলে ১১ রানে ফেরেন।
আগে ব্যাট করে কুইন্টন ডি কক, হেনরি ক্লেসেন ও এইডেন মার্করামের ব্যাটিং তাণ্ডবে ৩৮২ রানের পাহাড় গড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রোটিয়াদের এটাই দলীয় সর্বোচ্চ স্কোর।
এর আগে ২০১৭ সালে ইস্ট লন্ডনে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে ৬ উইকেটে সর্বোচ্চ ৩৬৯ রান করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
আজ মঙ্গলবার ভারতের মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ১৩তম আসরের ২৩তম ম্যাচে ৫ উইকেটে ৩৮২ রানের পাহাড় গড়েছে প্রোটিয়ারা।
ক্রিকেট বিশ্বকাপের চলতি আসরে দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডও গড়ে প্রোটিয়ারা। নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে ৪২৮ রানের পাহাড় গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। বিশ্বকাপের ইতিহাসে কোনো দলের এটাই সর্বোচ্চ স্কোর।
মঙ্গলবার টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৬ রানে ২ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তৃতীয় উইকেটে এইডেন মার্করামের সঙ্গে ১৩৭ বলে ১৩১ রানের জুটি গড়েন ওপেনার কুইন্টন ডি কক। ৬৯ বলে ৭টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৬০ রান করে ফেরেন অধিনায়ক মার্করাম।
এরপর চতুর্থ উইকেটে হেনরি ক্লেসের সঙ্গে রীতিমতো তাণ্ডব চালান ডি কক। এই জুটিতে তারা মাত্র ৮৭ বল মোকাবেলা করে ১৪২ রানের জুটি গড়েন। ইনিংস ওপেন করতে নেমে ৪৫.১ ওভারে দলীয় ৩০৯ রানে চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন ডি কক। তার আগে চলতি বিশ্বকাপে নিজের পঞ্চম ম্যাচে তৃতীয় সেঞ্চুরি হাঁকান।
হাসান মাহমুদের শিকারে পরিণত হওয়ার আগে ১৪০ বলে ১৫টি চার আর ৭টি ছক্কার সাহায্যে ১৭৪ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন ডি কক। ডি কক আউট হওয়ার পর ব্যাটিং তাণ্ডব অব্যাহত রাখেন হেনরি ক্লেসেন ও ডেভিড মিলার। পঞ্চম উইকেটে মাত্র ২৫ বলে ৬৫ রানের জুটি গড়েন তারা।
একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন হেনরি ক্লেসেন। নার্ভাস নাইনটিতে আউট হওয়ার আগে ৪৯ বলে দুটি চার আর ৯টি ছক্কার সাহায্যে খেলেন ৯০ রানের ঝলমলে ইনিংস।
ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত খেলে ডেভিড মিলার ১৫ বলে এক চার আর ৪টি ছক্কায় ৩৪ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। দক্ষিণ আফ্রিকা থামে ৫ উইকেটে ৩৮২ রানে।
বাংলাদেশ দলের হয়ে ৯ ওভারে ৭৬ রান খরচ করে কোনো উইকেট পাননি মোস্তাফিজুর রহমান। ৯ ওভারে ৭৬ রানে ১ উইকেট নেন পেসার শরিফুল ইসলাম। মাত্র ৬ ওভারে ৬৭ রানে ২ উইকেট নেন পেসার হাসান মাহমুদ। ৯ ওভারে ৪৪ রানে ১ উইকেট নেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ৫ ওভারে ২৭ রানে কোনো উইকেট পাননি নাসুম। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৩ ওভারে ২০ রানে কোনো সাফল্য পাননি।