ফাইল ছবি
সামনে এশিয়া কাপ, বাংলাদেশে আসবে নিউজিল্যান্ড, এর পর বিশ্বকাপ। এসব ক্রিকেট লড়াই হবে ৫০ ওভারের। আর দেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম। কিন্তু তার বর্তমান যে পরিস্থিতি তাতে আসন্ন টুর্নামেন্ট ও সিরিজে খেলতে পারবেন কিনা তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ।
কোমরের পুরনো ব্যথার জন্য ইনজেকশন নিয়ে লন্ডন থেকে ফিরলেও তার মাঠে ফিরতে লাগবে আরও কিছুটা সময়। আর দলে ফিরলেও শঙ্কা যেমন থাকবে ইনজুরি ফিরে আসার, তেমনি তার ফর্ম নিয়েও আছে প্রশ্ন। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ থেকে এখন পর্যন্ত ২২টি আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে তার ব্যাট থেকে আসেনি কোনো সেঞ্চুরি। ফিফটি হাঁকিয়েছেন পাঁচটি, ৩৪.০৫ গড়ে করেছেন ৬৪৭ রান।
যদিও তার নেতৃত্বে আইসিসির ওয়ানডে সুপার লিগে বাংলাদেশ ২৪ ম্যাচের ১৫টিতে জয় তুলে নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে। তাই তার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা কঠিন। তবে তার ফিটনেসের যে অবস্থা তাতে বইছে শঙ্কার হাওয়া।
অধিনায়ক থাকতে পারবেন তো তিনি! যদিও এ সিদ্ধান্ত এখন তিনি জানাবেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি)। এরই মধ্যে তার আলোচনায় বসার কথা বোর্ডের কর্তাদের সঙ্গে। তবে সেটি কবে! এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ বিসিবি।
এ বিষয়ে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনূস বলেন, ‘তামিম দেশে ফিরেছে। তার সঙ্গে আমাদের আলোচনায় বসার কথা রয়েছে। তবে এ আলোচনা অত্যন্ত গোপনীয়। কবে বসব তা আমরা বলতে পারব না। তবে সেই আলোচনা থেকে কিছু জানানোর থাকলে তা আমরা প্রকাশ করব অনুষ্ঠানিকভাবে!’
শুধু তামিম ইকবালের সঙ্গে আলোচনা নিয়ে গোপনীয়তা, তা নয়। তার বর্তমান ইনজুরির অবস্থা নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা। তার চাচা বিসিবি পরিচালক ও সাবেক অধিনায়ক আকরাম খানও এ নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। সরাসরি কোনো কিছু জানাতে চেয়ে বললেন, ‘আমি আসলে ইউএস গিয়েছিলাম। দেশে ফিরে ওর (তামিম) সঙ্গে কথা হয়নি। তাই ইনজুরির অবস্থা কি তা বলতে পারব না।’ অন্যদিকে বিসিবির মেডিকেল বিভাগও সরাসরি কিছু বলতে নারাজ। যদিও জানা গেছে, তার ইনজুরি আক্রান্ত স্থানে ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে।
আপাতত ৫-১০ দিন বিশ্রামে থাকবেন। এর পর হয়তো মাঠে ফিরে রিহ্যাব শুরু করবেন দেশসেরা এই ওপেনার। সব মিলিয়ে তার এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সময় লাগবে অন্তত ২০ দিনের মতো। তাও সঠিকভাবে বলা মুশকিল। ততদিন দিনে এশিয়া কাপ ঘনিয়ে আসবে। সেপ্টেম্বরের শুরুতেই এশিয়া কাপ শুরু হবে পাকিস্তান ও শ্রীলংকায়। তাই তামিম দলে যদি থাকেও তাতে তার ম্যাচ ফিটনেস নিয়ে সন্দেহ থাকছেই। ম্যাচ খেলতে গিয়ে আবারও ইনজুরি ফিরে আসার শঙ্কাও কম নয়। যে কারণে বিসিবিকে বিকল্প অধিনায়ক ভাবতেই হচ্ছে। জানা গেছে, তামিম শেষ পর্যন্ত এশিয়া কাপে না থাকলে দলের নেতৃত্ব দিতে পারেন সহঅধিনায়ক লিটন দাস!
অন্যদিকে বিসিবির সঙ্গে আলোচনায় কি বলবেন তামিম তা নিয়েও গুঞ্জনের শেষ নেই। ধারণা করা হচ্ছে যে, অভিমান নিয়ে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন দলের সেই অন্তঃকোন্দলই হবে বিসিবি ও তামিমের আলোচনার মূল বিষয়। তার মানে প্রধান কোচ হাথুরুসিংহের বিষয়টাই সেই আলোচনায় বড় হয়ে আসবে। কারণ যতটা জানা গেছে, কোচের আচরণেই তামিম কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। আর সে কারণেই দলে ফিরলে নিজের স্বাধীনতার বিষয়টিও অন্যতম শর্ত হতে পারে তামিমের।
দেশ ছেড়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার আগে তামিম এমনটা জানিয়েছিলেন দু’-একটি সংবাদমাধ্যমকে। তিনি বলেছিলেন, ‘বোর্ডের সঙ্গে আলোচনায় অনেক কিছু নির্ভর করবে।’ তবে এমন গুঞ্জন আছে তিনি নিজেকে পুরোপুরি ফিট না মনে করলে হয়তো নেতৃত্ব থেকেই সরে দাঁড়াবেন। সেই ক্ষেত্রে দলে থাকবেন একজন ওপেনার হিসেবেই। তখন তাকে স্কোয়াডে রাখা হবে কিনা সেটি সিদ্ধান্ত নিবে টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকরা।