বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রামে সংবাদ সম্মেলন করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়ে চমকে দিয়েছেন দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল।
তামিম ইকবালের হঠাৎ এমন ঘোষণায় ক্রিকেট বিশ্লেষক, সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষের মতো অবাক হয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুলও।
ইংল্যান্ডে অবস্থান করা আশরাফুল তামিমের অবসর নিয়ে বলেন, আজ ঘুম থেকে ওঠার পরেই দেখলাম তামিম ইকবাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছে। খবরটি দেখে অবাক হয়েছি। যতটুকু আমি তামিমকে চিনি আমরা একসাথে খেলেছি। তার বড় ভাই নাফিস ইকবালের সাথে ২০০০ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ দলের হয়ে প্রথম খেলা শুরু। পাকিস্তান সফরে নাফিস অধিনায়ক আর আমি সহ-অধিনায়ক ছিলাম। তখন থেকেই আমি তামিমকে চিনি।
টেস্টের সর্বকনিষ্ঠ এই সেঞ্চুরিয়ান আরও বলেন, সেই সময় তামিম বিমানবন্দরে এসেছিল হাফপ্যান্ট পরে। সে তখন অনেক ছোট ছিল, আমার চেয়ে চার-পাঁচ বছরের ছোট হবে। তখন থেকেই আমি তাকে চিনি, যে নাফিস ইকবালের ছোট ভাই আর আকরাম ভাইয়ের ভাতিজা। ওভাবে আমরা তামিমকে চিনতাম। ২০০৬ সালে সাকিব, তামিম, মুশফিকরা জিম্বাবুয়ে সফরে খেলতে যাওয়ার আগে প্রিমিয়ার লিগে ওল্ড ডিওএইচএসের হয়ে একটা ম্যাচে ১৮৮ রান করেছিল তামিম। তখন থেকেই আমরা জনতাম বাংলাদেশ টিমে একটা ড্যাশিং ওপেনার এসেছে।
তিনি আরও বলেন, তামিমের খেলা দেখে সব সময়ই মুগ্ধ হতাম। জাতীয় দলের সাবেক প্রধান কোচ জেমি সিডন্স, তামিমকে নিয়ে অনেক কাজ করেছেন, স্থানীয় কোচ সালাউদ্দিন ভাই তামিমকে অনেক হেল্প করেছেন। এখন বিশ্বের চার-পাঁচজন ওপেনারের মধ্যে তামিমের নাম থাকবে। তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটেই সে দুর্দান্ত খেলেছে। তবে শেষ কয়েকটি ওয়ানডে ম্যাচে প্রত্যাশিত পারফর্ম করতে পারেনি। তবে তার ক্যাপ্টেন্সি ছিল অসাধারণ।
আশরাফুল বলেন, দেশকে নিয়ে তার উঁচু স্বপ্ন ছিল। গত এক বছর ধরেই মিডিয়াতে শুনেছি, তামিম বিশ্বকাপ জয়ের ঘোষণা দিয়ে বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাবে; কিন্তু আজ ঘুম থেকে উঠেই ফেসবুকে দেখলাম তামিম অবসর নিয়েছি। খবরটা দেখে একটু অবাক হয়েছি। তামিমকে আমি যতটুকু চিনি সে যেই সিদ্ধান্তই নেয় হঠাৎ করেই নেয়, নিজের সিদ্ধান্ত নিয়ে সে স্থির থাকে। আমার মতো তামিম অসাধারণ একজন পার্সন।
তিনি বলেন, তামিমের সিদ্ধান্তে অবাকই হয়েছি, আবার অন্যদিক থেকে যদি বলি, সে সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। তরুণদের দায়িত্ব নেওয়ার সময় এসেছে। তাছাড়া আফগানিস্তানের বিপক্ষে আমরা প্রথম ম্যাচে হেরেছি। শেষ দুই ম্যাচেও যদি হেরে যাই, সিরিজ যদি হাতছাড়া হয় তাহলে তার ক্যাপ্টেন্সি সরে যেতে পারত।
জাতীয় দলের সাবেক এই তারকা আরও বলেন, আমার কাছে মনে হয়, যেহেতু শেষ ১২-১৩টা ওয়ানডেতে সে প্রত্যাশিত রান পায়নি। মিডিয়া এবং সাধারণ মানুষের চাওয়া ছিল ২০০৭ সালের তামিমকে, তখন যেভাবে ডাউন দ্য উইকেটে গিয়ে মারবে, ১৫ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার পর এখনো তো আর একটা বাচ্চা ছেলের মতো গিয়ে খেলা তামিমের জন্য সম্ভব না।