সাকিব আল হাসান, এবাদত হোসেনের পর আয়ারল্যান্ড শিবিরে তাসকিন আহমেদের আঘাত। বিনা উইকেটে ৬০ রান করা আইরিশরা এরপর মাত্র ১৬ রানের ব্যবধানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপাকে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩৩৯ রানের বিশাল টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুভ সূচনা করে আয়ারল্যান্ড। ১১.১ ওভারে আইরিশদের সংগ্রহ ছিল ৬০ রান। এরপর মাত্র ২ রানের ব্যবধানে দুই ওপেনারের উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড।
সাকিব আল হাসানের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা দিতে গিয়ে উইকেটকিপারের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন স্টিফেন ডোহেনি।
দলীয় ৬০ রানে সাজঘরে ফেরার আগে ডোহেনি করেন ৩৮ বলে চার বাউন্ডারি আর এক ছক্কায় ৩৪ রান। তার বিদায়ে ১১.২ ওভারে প্রথম উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড।
তাসকিনের করা শর্ট বলে উইকেটকিপার মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন পল স্টার্লিং। তার বিদায়ে ১২.২ ওভারে ৬২ রানে দুই ওপেনারের উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড।
এবাদতের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন হ্যাটি ট্যাকার।
তাসকিন আহমেদ ওভার দা উইকেট থেকে ভেতরের দিকে বল ঢুকিয়েছিলেন। লাইন মিস করে বোল্ড হয়েছেন আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক এন্ডু বালবার্নি। তার বিদায়ে ১৫.৩ ওভারে ৭৩ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড।
তাসকিনের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন লরকান ট্যাকার। তাসকিনের বলটি স্লিপের উপর দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকাতে চেয়েছিলেন লরকান। ফাস্ট স্লিপে দাঁড়িয়ে থাকা ফিল্ডার ইয়াসির আলী দুই পা শূন্যে ভাসিয়ে দিয়ে ক্যাচটি তালুবন্দি করেন। লরকানের বিদায়ে ১৭.১ ওভারে ৭৬ রানে ৫ উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড।
এর আগে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে সাকিব আল হাসান, তৌহিদ হৃদয় ও মুশফিকুর রহিমের ব্যাটিং তাণ্ডবে রানের রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম খেলায় টাইগারদের সংগ্রহ ৮ উইকেটে ৩৩৮ রান। ওয়ানডে ক্রিকেটে এটাই বাংলাদেশের দলীয় সর্বোচ্চ।
এর আগে ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৬ উইকেটে সর্বোচ্চ ৩২৯ রান করেছিল টাইগাররা।
শনিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ২.৩ ওভারে মাত্র ১৫ রানে ফেরেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
৯.৩ ওভারে দলীয় ৪৯ রানে আউট হন আরেক ওপেনার লিটন কুমার দাস। লিটন ৩১ বলে দুই চার আর এক ছক্কার সাহায্যে ২৬ রান করে ফেরেন।
৪৯ রানে তামিম ও লিটন আউট হওয়ার পর তৃতীয় উইকেটে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ৩২ রানের জুটি গড়ে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তিনি ৩৪ বলে ২৫ রানে ফেরেন।
এরপর চতুর্থ উইকেটে অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়ের সঙ্গে ১২৫ বলে সাকিব গড়েন ১৩৫ রানের জুটি। এই জুটিতেই ক্যারিয়ারের ২২৮তম ওয়ানডে ম্যাচে ৫৩তম ফিফটি তুলে নিয়ে সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন সাকিব।
কিন্তু ব্যক্তিগত ৯৩ রানে দশম ওয়ানডে সেঞ্চুরি থেকে ৭ রান দূরে থাকতেই আউট হন। গ্রাহাম হিউমের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলে খোঁচা দিতে গিয়ে উইকেটকিপার লরকান টাকারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন সাকিব।
সাজঘরে ফেরার আগে ৮৯ বলে ৯টি বাউন্ডারির সাহায্যে ৯৩ রান করেন সাকিব। তার বিদায়ে ৩৭.২ ওভারে ২১৬ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
সাকিব আউট হওয়ার পর ব্যাটিংয়ে নেমে তৌহিদ হৃদয়ের সঙ্গে ব্যাটিং তাণ্ডব চালিয়ে ৪৯ বলে ৮০ রানের জুটি গড়ে ফেরেন মুশফিকুর রহিম। সাবেক এই অধিনায়ক মাত্র ২৬ বলে তিন চার আর সমান ছক্কার সাহায্যে খেলেন ৪৪ রানের ঝলমলে ইনিংস।
মুশফিক আউট হওয়ার পর সাকিবের মতো সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়। দেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে অভিষেকে সেঞ্চুরির পথে থাকা হৃদয় আউট হন ৯২ রানে।
গ্রাহাম হিউমের বলে বোল্ড হওয়ার আগে হৃদয় ৮৫ বলে ৮টি চার আর দুটি ছক্কার সাহায্যে করেন ৯২ রান। তার বিদায়ে ৪৫.৫ ওভারে ২৯৭ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপর সাত বলে এক ছক্কায় ১১ রান করে আউট হন তাসকিন আহমেদ। ১০ বলে এক চার আর এক ছক্কায় ১৭ রান করে ফেরেন ইয়াসির আলী।
শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে নেমে ৭ বলে দুই বাউন্ডারির সাহায্যে ১১ রান করে অপরাজিত থাকেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। বাংলাদেশ থামে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৩৩৮ রানে। আয়ারল্যান্ডের হয়ে গ্রাহাম হিউম ১০ ওভারে ৬০ রানে ৪ উইকেট শিকার করেন।