সিলেট গ্যালাকটিকো দলের গোলরক্ষক সেঁজুতি ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত
নারী প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে বেশ হতাশাজনক পারফর্মেন্স করেছে সিলেটের স্পার্টান এমকে গ্যালাকটিকো এফসি।
গত দুই ম্যাচে ২৫ গোল হজম করেছে দলটি।
গতকাল বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হেরেছে সিলেট গ্যালাকটিকো। তাও আবার কম নয়। এক ডজন গোল হজমের পরও যেন মন ভরেনি তাদের। খেলা শেষে ১৩টি গোলের বোঝা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাদের। অথচ এতোগুলো গোলের বিপরীতে ১টিও শোধ করতে পারেনি তারা।
একইরকম হতাশাজনক পারফর্মেন্স ছিল আগের ম্যাচে। নাসরিন স্পোর্টসের কাছে ১২ গোলে হেরে যায় গ্যালাকটিকো। সেদিনও কোনো গোল করতে পারেনি দলটি।
এই দুই ম্যাচে মনে হয়েছে ক্ষুধার্ত বাঘের সামনে পড়েছে সিলেটের দলটির। আর তাদের ওপর হামলে পড়ে একের পর এক শিকার করে গেছে প্রতিপক্ষ।
দুই ম্যাচে ২৫ গোল হজম করে কেমন বোধ করছেন? প্রশ্ন করা হয়েছিলে সিলেটের স্পার্টান এমকে গ্যালাকটিকোর গোলরক্ষক সেঁজুতি ইসলামকে।
এর পাল্টা জবাবে তিনি বলেন ‘২৫টা না তো, ২৩ গোল।’ অর্থাৎ এতো গোল হজম করেছেন যে, হিসাবই মেলাতে পারেননি তিনি।
এরপর সাংবাদিক তাকে বলেন, হিসাবে তো ২৫টিই। বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে ১৩ গোল আর নাসরিন স্পোর্টসের বিপক্ষে ১১।
জবাবে সেঁজুতি বলেন, ওহ! হ্যা, ভুল হয়েছে বসুন্ধরার বিপক্ষে আমি ১১ ভেবেছিলাম।
শুধরে দেয়ার জন্য সাংবাদিককে ধন্যবাদ জানিয়ে সেঁজুতি বলেন, ‘২৫ গোল খামু না তা কী করমু। দেখেন না আমরা তো নতুন দল। তারা কত ভালো খেলে।’
বসুন্ধরা কিংসের বেলায় সেঁজুতির এই বক্তব্যের সত্যতা মিলতেই পারে। কারণ সাবিনা খাতুন, কৃষ্ণা রানী সরকার, মারিয়া মান্দাসহ জাতীয় দলের ১৯ জন খেলোয়াড় নিয়ে গড়া বসুন্ধরা কিংস।
সেদিন সমর্থকদের অপক্ষো ছিল এটাই যে বসুন্ধরার বিপক্ষে কত রানে হারে সেঁজুতিরা।
এরপরও হতাশার সুর সেঁজুতির কণ্ঠ দিয়ে বের হলোই।
তিনি বলেন, ‘এর আগে কখনোই আমি এত গোল খাইনি। বঙ্গমাতা খেলেছি, জেলা দলের হয়ে খেলেছি । ৩ গোলের বেশি খাইনি। এবারই প্রথম এতগুলো গোল খেলাম।’
এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন সেঁজুতি। অভিজ্ঞ বলতে গোলরক্ষক সেঁজুতি। কিন্তু তাতে রেহাই পায়নি তার দল সিলেট স্পার্টান এমকে গ্যালাকটিকো।
মানভেদে অত্যান্ত দুর্বল দল এটি। দলের সাত ফুটবলারই বিভিন্ন চা–বাগানের শ্রমিক। পেশাদার ফুটবলার নন। তেমন কোনো প্রশিক্ষণও নেই ।
সেই দল জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের বিপক্ষে কেমন খেলেন সেটা নিয়েই ভাবনায় ছিলেন সমর্থকরা।
দলের একমাত্র কাণ্ডারী গোলরক্ষক সেঁজুতিই। সবে মাত্র এসএসি দিয়েছেন। টাঙ্গাইলের এই কিশোরীর প্রথমে বসুন্ধরাত কিংসেই খেলবেন বলে জানা গিয়েছিল। ক্যাম্পেও ছিলেন তিনি।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারকাবহুল দলে ঠাঁই হয়নি তার। এরপর পর গ্যালাকটিকোয় নাম লেখান তিনি। তবে দলকে কতটুকু টেনে নিতে পারবেন সেটা নিয়েই সংশয়।