বিশ্বকাপ ফাইনালে প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ বেন স্টোকস

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০১৯, ০১:১৮ এএম

রোমাঞ্চকর ফাইনাল ম্যাচ দিয়ে সমাপ্তি ঘটল বিশ্বকাপ মঞ্চের। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই বললেও কম বলা হয়ে যাবে।
টার্গেট ছুঁতে শেষ দিকে প্রতিটি বল নিয়েই যেন কাব্য লেখা যাবে। প্রতিটি রানের সঙ্গেই জড়িয়েছিল স্বপ্ন জয় বা দীর্ঘশ্বাসের টান।
খেলায় জয়-পরাজয় নির্ধারণ হচ্ছিলই না। তা নিশ্চিত করতে বিশ্ব ক্রিকেটপ্রেমীদের অপেক্ষা করতে হয়েছে সুপার ওভার পর্যন্ত। তাতেও শান্তি নেই কানায় কানায় পূর্ণ গ্যালারির দর্শক ও টিভি সেটের সামনে বসে থাকা বিশ্ববাসীর। সুপার ওভারেও টাই হয়ে গেল।
আর খেলাকে চরম উত্তেজনার পর্যায়ে যিনি নিয়ে গেলেন তিনি ইংল্যান্ড শিবিরের অলরাউন্ডার বেন স্টোকস।
৯৮ বলে ৮৪ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে কিউইদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন ম্যাচটি। সুপার ওভারেও বাটলারের সঙ্গে নেমে ১৫ রানের টার্গেট ছুঁড়ে দেন।
আর সেখানেই হেরে বসেন কেন উইলিয়ামসনরা।
যে কোন দিক থেকেই বোঝা যায় ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ ফাইনালের হিরো - বেন স্টোকই।
দলকে সামনে তেকে নেতৃত্ব দিয়ে ক্রিকেটের জন্মভূমির দশকে এনে দিলেন শিরোপা।
প্রেজেন্টেশন অনুষ্ঠানে উচ্চারিত হলো বেন স্টোকসেরই নাম। বিশ্বকাপ ফাইনালে ম্যান ওব দ্য ম্যাচ হলেন তিনি।
হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের রোমাঞ্চকর ফাইনালে রোববার দুই দলকে আলাদা করল কেবল বাউন্ডারির হিসাব। বেশি বাউন্ডারি মেরে প্রথমবার ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতল ইংল্যান্ড। ক্রিকেটের জন্মভূমি, ওয়ানডের জন্ম যেখানে সেই দেশ অবশেষে বিশ্বকাপ জিতল নিজেদের আঙিনায়।
বিশ্বকাপের ফাইনালে লর্ডসে রোববার টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা নিউ জিল্যান্ডকে ৫০ ওভারে ২৪১ রানে আটকে রাখে ইংল্যান্ড। এক সময় শঙ্কায় পড়ে যাওয়া ইংল্যান্ডকে জয়ের পথে রাখেন বেন স্টোকস। শেষ ওভারে ট্রেন্ট বোল্টের দুর্দান্ত বোলিংয়ে শেষ বলের ঠিক ২৪১ রানেই অল আউট হয় স্বাগতিকরা। ম্যাচ গড়ায় তাই সুপার ওভারে।
তীরে গিয়ে তরী ডোবার অবস্থা হয় ইংল্যান্ডের। জয়ের জন্য শেষ ১০ বলে প্রয়োজন ছিল ২২ রান। এমন অবস্থায় জেমি নিশামের ৪৯তম ওভারের চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ট্রেন্ট বোল্টের ক্যাচে পরিণত হন। কিন্তু ক্যাচ তালুবন্দি করে ব্যালেন্স রাখতে পারেননি বোল্ট।
তার পা বাউন্ডারি রশি স্পর্শ করলে আম্পায়ার ছক্কার নির্দেশ দেন। তখন বেন স্টোকস আউট হলে ম্যাচের ভাগ্য অন্যরকম হতে পারত।
তারপরও খেলায় ছিল নিউজিল্যান্ড। শেষ ওভারে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ১৫ রান। প্রথম দুই বল ডট দেন ট্রেন্ট বোল্ট। ঠিক পরের বলে ছক্কা হাঁকান বেন স্টোক। তার পরের বলে ডাবল রান নেয়ার চেষ্টা করেন বেন স্টোকস ও আদিল রশিদ।
কিন্তু নিউজিল্যান্ডের ফিল্ডার সঠিক জায়গায় বল থ্রো না করায় অতিরিক্ত আরও চার রান পেয়ে যায় ইংল্যান্ড।
শেষ দুই বলে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল ৩ রান। পঞ্চম বলে রান আউট হন আদিল রশিদ। শেষ বলে প্রয়োজন ছিল মাত্র ২ রান। বেন স্টোকস ও মার্ক উড দৌড়ে সেই রান নিতে গিয়ে রান আউট হন বেন স্টোকস।
রোববার ইংল্যান্ডের ঐতিহ্যবাহী লর্ডস স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ২৪১ রান করে নিউজিল্যান্ড। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৫ রান করেন হেনরি নিকোলস। এছাড়া ৪৭ রান করেন টম লাথাম।
টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৮৬ রানে জেসন রয়, জো রুট, জনি বেয়ারস্টো ও অধিনায়ক ইয়ন মরগানের উইকেট হারিয়ে চাপের মধ্যে পড়ে যায় ইংল্যান্ড।
এমন পরিস্থিতিতে দায়িত্বশীল ব্যাটিং করে দলকে খেলায় ফেরান বেন স্টোকস ও জস বাটলার। পঞ্চম উইকেটে তারা ১১০ রানের জুটি গড়েন। এরপর ৭ রানের ব্যবধানে বাটলার ও নতুন ব্যাটসম্যান ক্রিস ওকসের উইকেট হারিয়ে ফের চাপের মধ্যে পড়ে যায় ইংল্যান্ড। তবে অনবদ্য ব্যাটিং করে যান বেন স্টোকস।
ফাইনাল ম্যাচ স্টোকসময় হয়ে থাকল।