কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন
বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১৯ পিএম
আজ কিংবদন্তি কোকিলকণ্ঠী সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের জন্মদিন। ৭০ পেরিয়ে ৭১ বসন্তে পা দিয়েছেন তিনি। তার জন্মদিনে সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি। জন্মদিন উপলক্ষে দেশের একটি গণমাধ্যমের এক সাক্ষাৎকারে এ ‘গানের পাখি’ বলেন, এবারের জন্মদিন নিয়ে বিশেষ কোনো পরিকল্পনাই নেই। বাসা থেকে কোথাও যাচ্ছি না। বাসাতেই সময় কাটবে আমার।
সাবিনা ইয়াসমিন ১৯৬২ সালে ‘নতুন সুর’ চলচ্চিত্রে শিশু কণ্ঠশিল্পী হিসেবে, রবীন ঘোষের সুরে একটি গান গেয়েছিলেন। ১৯৬৪ সালে তিনি বেতারে ছোটদের গানের অনুষ্ঠান ‘খেলাঘর’-এ নিয়মিত অংশ নিতেন। ১৯৬৭ সালে ‘আগুন নিয়ে খেলা’ ছবিতে প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে সাবিনা ইয়াসমিনের। এরপর কেবলই এগিয়ে চলা।
সাবিনা ইয়াসমিন অসংখ্য জনপ্রিয় গান গেয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে— ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো’, ‘আমি রজনীগন্ধা ফুলের মতো গন্ধ বিলিয়ে যাই’, ‘চিঠি দিও প্রতিদিন, চিঠি দিও’, ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘অশ্রু দিয়ে লেখা এ গান’, ‘দুঃখ ভালবেসে প্রেমের খেলা’, ‘এ সুখের নেই কোন সীমানা’, ‘বরষার প্রথম দিনে’ ও ‘আমার ভাঙা ঘরে ভাঙা চালা’ ।
এ ছাড়া তার দেশাত্মবোধক গানের মধ্যে রয়েছে— ‘জন্ম আমার ধন্য হলো মাগো’, ‘সব ক’টা জানালা খুলে দাও না’, ‘ও আমার বাংলা মা’, ‘মাঝি নাও ছাড়িয়া দে’, ‘সুন্দর সুবর্ণ’ ও ‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতা’ উল্লেখযোগ্য।
চলচ্চিত্রে তার গাওয়া গানের সংখ্যা কয়েক হাজার। পেয়েছেন একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কার। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ১৪ বার। আরটিভি স্টার অ্যাওয়ার্ড ২০১৮-এ আজীবন সম্মাননা পান সাবিনা ইয়াসমিন। তার প্রাপ্তির ঝুলিতে রয়েছে এইচএমভির ডবল প্লাটিনাম ডিস্ক, উত্তম কুমার পুরস্কার, বিশ্ব উন্নয়ন সংস্থা থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি, জহির রায়হান চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য পদক ও সম্মাননা।
৭১ পা দেওয়ায় তার জন্মদিনের উৎসব পালন প্রসেঙ্গ এ কোকিলকণ্ঠী বলেন, এখন দেশের যে পরিস্থিতি, এ পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই আসলে জন্মদিন উদযাপনের আগ্রহ নেই। সময়টা অন্য রকম। এখন দেশ গড়ার সময়, নতুন করে দেশটা ঠিকঠাকভাবে গড়ে তোলার সময়। সবকিছু স্বাভাবিক হোক, তখন না হয় নিজের জন্মদিন উপলক্ষে কিছু একটা করা যেতে পারে।
সবার দোয়া চেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, আমার জন্য দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন সুস্থ রাখে, ভালো রাখে। আর সবাই যেন ভালো থাকেন নিজ নিজ পরিবারের সঙ্গে_ আমিও এ দোয়া করি।
তিনি বলেন, জন্মদিন এলেই আব্বা-আম্মা ও আমার বোনদের খুব মিস করি। কিন্তু তারপরও সবার ভালোবাসা পেয়ে আমি সে কষ্ট ভুলে থাকার চেষ্টা করি। ঈদ এলে যেমন নতুন জামা-কাপড় লুকিয়ে রাখতাম, জন্মদিন এলেও তাই করতাম। জন্মদিনে এসব কাপড় বের করতাম। আনন্দটাই ছিল অন্য রকম। পরিবারের মধ্যকার সে আনন্দটা মিস করি।
সংগীত পরিবারে সুরের আবহাওয়ায় সাবিনা ইয়াসমিনের জন্ম। তার বাবা লুৎফর রহমান ছিলেন সরকারি চাকরিজীব। তিনি চমৎকার রবীন্দ্র সংগীত গাইতেন। মা মৌলুদা খাতুন মুর্শিদাবাদের প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ ওস্তাদ কাদের বক্সের কাছে শাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম নিয়েছিলেন। সাবিনা ইয়াসমিন ওস্তাদ পিসি গোমেজের কাছে একটানা ১০ বছর শাস্ত্রীয় সংগীতের তালিম নিয়েছেন। তবে মঞ্চে গান গাইতে উঠেছেন মাত্র ৭ বছর বয়সে।