Logo
Logo
×

গান

কিংবদন্তি শিল্পী রুনা লায়লাকে বিশেষ সম্মাননা

Icon

হক ফারুক আহমেদ

প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:২৮ পিএম

কিংবদন্তি শিল্পী রুনা লায়লাকে বিশেষ সম্মাননা

বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের যে কিন্নরী কণ্ঠের প্রশংসা চিরকালের, তিনি রুনা লায়লা। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই সংগীত-তারকা গানে গানে মাতিয়ে রেখেছেন ছয় দশকের বেশি সময়। গানপ্রিয় মানুষের তৃষ্ণা মিটিয়েছেন জনপ্রিয় সব গান উপহার দিয়ে। দেশের সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য কিংবদন্তি এই শিল্পীকে বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত করেছে যুগান্তর।

বুধবার যমুনা ফিউচার পার্কের মুঘল হলে যুগান্তরের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আনন্দ আয়োজনে শিল্পী রুনা লায়লাকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়। তার হাতে ক্রেস্ট ও সম্মাননা চেক তুলে দেন যুগান্তর প্রকাশক এবং যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান সংসদ-সদস্য অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন যমুনা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শামীম ইসলাম, গ্রুপ পরিচালক- সোনিয়া সারিয়াত, মনিকা নাজনীন ইসলাম, সুমাইয়া রোজালিন ইসলাম, শেখ মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াদুদ, মেহনাজ ইসলাম, ইয়াসিন ইসলাম নাজেল এবং যুগান্তর সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম। 

সম্মাননাপ্রাপ্তির অনুভ‚তি প্রকাশে রুনা লায়লা বলেন, আজকের এ পুরস্কার আমার জন্য বড় প্রাপ্তি। আমি আনন্দিত। যুগান্তরের ২৫ বছর এখন। মনে হয়, আমার চেয়ে একটু বেশি। কেননা আমার বয়স কেবল ১৭ চলছে। যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান, যুগান্তর সম্পাদকসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমাকে সম্মাননা দেওয়ায় যুগান্তর পরিবারের কাছে কৃতজ্ঞ।

স্বাধীনতার পর দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় এর আগের বছর তিন গুণী ব্যক্তিকে বিশেষ সম্মাননা দিয়েছিল যুগান্তর। গুণীদের মধ্যে ছিলেন- অর্থনীতিতে অবদানের জন্য সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে কালজয়ী কণ্ঠশিল্পী ফেরদৌসি রহমান এবং ক্রীড়া অঙ্গনে প্রথম আইসিসি (ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল) ট্রফিজয়ী আকরাম খান।

শিল্পী রুনা লায়লার সংগীতে, কণ্ঠের জাদুতে মোহিত হন শ্রোতা। তার জনপ্রিয়তা বিশ্বজুড়ে। বিশেষ করে উপমহাদেশের বিখ্যাত শিল্পীদের নাম নিলে শীর্ষ তালিকায় রুনা লায়লার নাম থাকবেই। রুনা লায়লার বয়স তখন ৬ বছর। বাসায় গান শিখেন তিনি। পুরো পরিবারই তখন করাচিতে। বড় বোন দীনাও গান করেন। ঢাকা ওল্ড বয়েজ অ্যাসোসিয়েশন নামে প্রতিষ্ঠান একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে দীনার গাইবার কথা। কিন্তু হঠাৎ করেই দীনার গলা খারাপ হয়ে গেল। আয়োজকরা পড়লেন বিপদে। তারা বাসায় এলে দীনার মা বললেন, দীনা না গাইতে পারলে রুনা গাক। এ কথা শুনে আয়োজকরা দ্বিধায় পড়ে গেলেন। এইটুকু মেয়ে কী গান গাইবে।

শেষ পর্যন্ত্র অনুষ্ঠানে রুনা লায়লা একটি ক্লাসিক্যাল রাগ গাইলেন। সবাই দেখল মাত্র ছয় বছরের একটি মেয়ে, তানপুরা যার চেয়ে অনেক বড়, সে বসে বসে গাইছে। গান শুনে সবাই খুশি। অ্যাওয়ার্ড পেলেন, সঙ্গে কিছু ক্যাশপ্রাইজও। বয়স যখন নয় বছর, তখন ইন্টার স্কুল মিউজিক কম্পিটিশন হয়েছিল রেডিও পাকিস্তানের উদ্যোগে। কিন্তু রুনা লায়লা ইংরেজি মিডিয়ামের ছাত্রী বলে আয়োজকরা নিতে চাননি। তাদের কথা শুধু উর্দু মিডিয়ামের যারা, তারাই অংশ নিতে পারবে। শেষ পর্যন্ত ওই অনুষ্ঠানে রুনাকে গাওয়ার সুযোগ দেওয়া হলো এবং একটি গজল গেয়ে প্রথম হন তিনি। 

ওই সময় থেকেই গানের চর্চা আরও বেশি করে শুরু হলো রুনার। করাচিতে ‘জুগনু’ চলচ্চিত্রে রুনা লায়লা প্রথম গান করেন। গানটি ছিল ‘গুড়িয়াসি মুন্নী মেরি ভাইয়া কী পেয়ারি। ১৯৭৪-এ বাংলাদেশে এলেন রুনা লায়লা। সে বছরের শেষে প্রথমবারের মতো ভারত সফরে গেলেন তিনি। সেখানেই প্রথম পরিচয় হয় লতা মুঙ্গেশকরের সঙ্গে। দেশে ফিরে প্রয়াত সত্য সাহার সুরে ‘জীবন সাথী’ ছবিতে প্রথম গান করেন। গানের কথা ও জীবন সাথী তুমি আমার। এ গানে তার সঙ্গে কণ্ঠ দেন খন্দকার ফারুক আহমেদ। ইন্দিরা রোডের ইন্টারন্যাশনাল স্টুডিওতে গানটি ধারণ করা হয়। সে বছরই বিটিভিতে একটি অনুষ্ঠানে গাইবার সুযোগ পান রুনা লায়লা। দেবু ভট্টাচার্যের সুরে ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের লেখা পাঁচটি গান ধারণ করা হয় অনুষ্ঠানটির জন্য। সে অনুষ্ঠানে তিনি পোশাকে পরিবর্তন আনলেন। একটু নেচে গান পরিবেশন করলেন। ব্যস, সবার দৃষ্টি পড়ল রুনা লায়লার দিকে। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল তার গালার সুনাম। 

বাংলাসহ হিন্দি, উর্দু, গুজরাটি, পাঞ্জাবি, সিন্ধি, পশতু, বেলুচ, আরবি, পারসিয়ান, মালয়, নেপালি, জাপানি, ইতালীয়, স্প্যানিশ, ফরাসি, ইংরেজিসহ বিভিন্ন ভাষার গানে কণ্ঠ দিয়েছেন রুনা। ক্যারিয়ারজুড়ে পেয়েছেন নানা পুরস্কার।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম