বিমান বাংলাদেশে মাতাল যাত্রীর কাণ্ড, ভাইরাল সেই ভিডিও
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০১৯, ০৪:৫৫ এএম
বিমানে মাতাল যাত্রী। ছবি: ফেসবুক
বিমানে উঠে হইচই বাঁধিয়ে দিলেন এক যাত্রী। অন্যান্য যাত্রীর প্রতি অকথ্য ভাষায় উচ্চারণ এবং একপর্যায়ে মারধরও করেন তিনি।
শেষ পর্যন্ত উপায় না পেয়ে তাকে মোটা রশি দিয়ে বেঁধে রাখেন কয়েকজন ক্যাবিন ক্রু।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে এমন একটি ভিডিও।
ভিডিওতে দেখা গেছে, বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিমানে এক যাত্রীকে শান্ত করতে স্বচেষ্ট রয়েছেন ক্যাবিন ক্রুসহ কয়েকজন যাত্রীও।
কোনোমতেই বাগে আনা যাচ্ছে না তাকে। অবশেষে রশি দিয়ে প্রথমে তার হাত বেঁধে ফেলেন বিমানবালারা।
এ সময় যাত্রী ও বিমানের কর্মচারীদের অকথ্য ভাষায় বকতে থাকেন ওই ব্যক্তি।
হাত দিয়ে কিছু করতে না পেরে মাথা দিয়ে আক্রমণ করতে থাকেন।
হাত বেঁধেও লাভ হচ্ছে না দেখে একসময় বিমানের মেঝেতে শুইয়ে দিয়ে ওই যাত্রীর পুরো শরীর বেঁধে ফেলা হয়।
দেখুন সেই ভিডিওটি-
জানা গেছে, গত ৪ জানুযারি এ ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি-২০২ ফ্লাইটে।
বিমানটি লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে সিলেট হয়ে ঢাকায় আসছিল। উড্ডয়ন থাকাবস্থায় বিমানে এ ঘটনাটি ঘটেছিল।
ভিডিওতে ওই যাত্রীর কথোপকথনে ধারণা করা হচ্ছে তার বাড়ি সিলেটে।
তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাজ্যের নাগরিক বলে মনে করা হচ্ছে।
এ ঘটনার বর্ণনায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জনসংযোগ বিভাগে মহাব্যবস্থাপক (জিএম) শাকিল মেরাজ গণমাধ্যমকে জানান, ওই ব্যক্তি মদ্যপ ছিলেন। তার আসন নাম্বার ছিল ৪২ডি।
লন্ডন থেকে বিমান ছাড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ওই যাত্রী মাতলামি শুরু করেন। কেবিন ক্রু ও যাত্রীদের অনেকে তাকে শান্ত করার চেষ্টা করলে তিনি শান্ত না হয়ে উল্টো ক্যাবিন ক্রুদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন ও একজন ক্রুর আঙুলে কামড় দেন। হাতে থাকা প্লেট ছুড়ে মারেন।
পরে নিরাপত্তার স্বার্থে তাকে ক্যাপ্টেনের নির্দেশে কেবিন ক্রুরা যাত্রীদের সহায়তায় তার নিজের আসনের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে ফেলে।
ফ্লাইট সিলেটে অবতরণ করার পর তাকে আইনশৃঙ্খলা সংস্থার কাছে তাকে সোপর্দ করা হয় বলে জানান তিনি।
এভাবে দড়ি দিয়ে একজন যাত্রীকে বাঁধার কারণ হিসেবে শাকিল মেরাজ জানান, ওই যাত্রীর আচরণ নিরাপদ উড্ডয়নের জন্য বড় একটি হুমকি ছিল।
ক্যাপ্টেন তার আইনানুগ ক্ষমতা অনুযায়ী বিমানের অন্য সব যাত্রীর নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আগে থেকেই প্রচুর মদপান করেছিলেন অভিযোগ এনে ওই ফ্লাইটের কেবিন ইনচার্জের রিপোর্টে জানানো হয়েছে, তল্লাশি করে ওই যাত্রীর কাছে মদের বোতল পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে শাকিল মেরাজ বলেন, ২০০৬ সাল থেকে বিমানে অ্যালকোহল দেয়া বন্ধ রাখা হয়েছে।
তবে ঘটনাটি যেভাবে সামাল দেয়া হয়েছে, তাতে পেশাদারিত্বের যথেষ্ট অভাব ছিল মন্তব্য করে এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওয়াহিদুল আলম জানান, এ ধরনের ঘটনা কীভাবে সামাল দেয়া হবে তার গাইডলাইন আছে। দেখতে হবে অন্য যাত্রীদের ন্যূনতম যেন অসুবিধে না হয়। অথচ এখানে দেখলাম ক্রুর সঙ্গে অধিকাংশ যাত্রীরাও জড়িত হয়ে গেছেন।
রশি দিয়ে যাত্রীকে এভাবে বাঁধার বিষয়টিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুচিত ও অসম্মানজনক বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।
সে বিষয়ে শাকিল মিরাজ জানান, এতদিন বিমানে হ্যান্ডকাফ রাখা হতো না। কিন্তু এখন থেকে রাখা হবে যাতে করে এ ধরনের ঘটনায় ব্যবহার করা যায়।